এসএসসি ২০২৫ : তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে বেশি নম্বর পাওয়ার কৌশল
Published: 22nd, April 2025 GMT
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়টি বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা তিনটি শাখার ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা দিতে হবে। এর মানে হলো সব শাখার ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। পরীক্ষা ২৩ এপ্রিলে। পরীক্ষার মোট নম্বর ৫০। বহুনির্বাচনি অংশে ২৫ নম্বর এবং ২৫ নম্বর ব্যবহারিক অংশে। মোট ২৫টি বহুনির্বাচনি প্রশ্ন থাকবে, উত্তর করতে হবে সব কটি প্রশ্নের। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ নম্বর।
*১ম অধ্যায়
প্রথম অধ্যায়টি হলো তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি এবং আমাদের বাংলাদেশ নিয়ে। প্রযুক্তির বিভিন্ন তথ্য ও বাংলাদেশে এই প্রযুক্তি কোথায় কোথায় কীভাবে রয়েছে তার ওপর বিভিন্ন তথ্য পড়তে হবে। ই-মেইল, ই-লার্নিং, ই-গভর্ন্যান্স, ই-কমার্স, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ডিজিটাল বাংলাদেশের ওপর দরকারি প্রশ্ন থাকবে। তাই এ অধ্যায়টি বারবার মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
তোমাকে মনে রাখতে হবে, একই ধরনের দুটি প্রশ্ন, কিন্তু উত্তর ভিন্ন যেমন একুশ শতকের সম্পদ হলো ‘জ্ঞান’ এবং পৃথিবীর সম্পদ হলো ‘সাধারণ মানুষ’। আবার বিনা তারে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বার্তা প্রেরণের প্রথম সফল বাঙালি বিজ্ঞানী হলেন ‘স্যার জগদীশচন্দ্র বসু।’ তেমনি আরেকটি প্রশ্ন হতে পারে—এক স্থান থেকে অন্য স্থানে তথ্য প্রেরণে বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করেন—‘বিজ্ঞানী গুগলিয়েলমো মার্কনি।’ এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর বুঝে পড়তে হবে।
আরও পড়ুনস্কুলে দীর্ঘ ছুটির ফাঁদে পড়াশোনা শিকেয় ওঠে১৯ এপ্রিল ২০২৫*২য় অধ্যায়
কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিয়ে এই দ্বিতীয় অধ্যায়। তুমি কম্পিউটার ভাইরাস, অ্যান্টিভাইরাস, পাসওয়ার্ড, ইন্টারনেট ব্যবহারের অসাধ্য পাইরেসি, ট্রাবলশুটিং বিষয়ে অনেক প্রশ্ন থাকবে।
মনে রাখতে হবে, আইসিটি যন্ত্র বলতে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন ইত্যাদি বোঝায়। এ ক্ষেত্রে জ্ঞানমূলক ও উচ্চতর দক্ষতার প্রশ্নের উত্তরের সময় বিষয়টি অবশ্যই মনে রাখতে হবে। সফটওয়্যার ডিলিট ও আনইনস্টল করা এক কথা নয়।
কম্পিউটার ভাইরাস ও অ্যান্টিভাইরাসের নামগুলোর পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। সিডি, পেনড্রাইভ, মেমোরি কার্ড সহজে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণ ট্রাবলশুটিংয়ের প্রতিটি সমস্যা ও সমাধানের জন্য বাস্তব জ্ঞান থাকতে ভুল হবে। যেমন সিস্টেম চালু না হওয়ার কারণ, মনিটরে কিছু না দেখা, সিস্টেম গরম হয়ে যাওয়া, কম্পিউটার মাঝেমধ্যে শাটডাউন হওয়া, উইন্ডোজ চালুর সময় হ্যাং হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
*৩য় অধ্যায়
তোমার পাঠ্যবইয়ের তৃতীয় অধ্যায় হলো আমার শিক্ষার ইন্টারনেট। এ অধ্যায়ে ডিজিটাল কনটেন্ট, ভিডিও, অ্যানিমেশন, ই-বুক, ফ্রিল্যান্স ইত্যাদি বিষয়ে ভালো করে রিভিশন দেবে। তবেই তোমার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন কমন পড়বে।
ডিজিটাল কনটেন্ট ও এর প্রকারভেদের নাম ও উদাহরণগুলো ভালো করে পড়বে। এ অধ্যায়ে তোমরা প্রায়ই কিছু বিষয়কে একই বিষয় মনে করে ভুল থাকো। যেমন টেক্সট, ছবি, শব্দ, অডিও, ভিডিও, অ্যানিমেশন।
তা ছাড়া ই-বুক, ই-বুক রিডার, চৌকস ই-বুক, ভিডিও স্ট্রিমিং, কিন্ডল অ্যাপস সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখবে। কয়েকটি ক্যারিয়ারের নাম তোমরা জানো কম্পিউটার সায়েন্স, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, ডেটা কমিউনিকেশন।
আরও পড়ুনএসএসসি–২০২৫ পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের শেষ মুহূর্তের করণীয়০৬ এপ্রিল ২০২৫*৪র্থ অধ্যায়
আমার লেখালেখি ও হিসাব অধ্যায়টি চতুর্থ অধ্যায়। ওয়ার্ড প্রসেসর, স্পেস চেকার, ফ্রন্ট, টেবিল করা, স্প্রেডশিট প্রোগ্রামসহ তোমার লেখালেখি ও হিসাবের জন্য দরকারি।
অনেক সময় ব্যবহারিক কিছু অংশের বহুনির্বাচনি প্রশ্নের ক্ষেত্রে সফটওয়্যারের ভার্সন পরিবর্তনের কারণে তোমরা কিছু কিছু ভুল করে থাক। ওয়ার্ড ২০০৭-এর সঙ্গে ওয়ার্ড ২০১০-এর কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এ ক্ষেত্রে ব্যবহারিক জ্ঞান থাকলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। অফিস বাটনসহ এর বিভিন্ন অপশনগুলো যেমন নিউ, ওপেন, সেভ, সেভ এজ, ক্লোজ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। হোম ট্যাব, ফন্ট স্টাইল, ফন্ট সাইজ, ইনসার্ট ট্যাব থেকে টেবিল তৈরি করার কৌশল জানতে হবে।
*৫ম অধ্যায়
তোমার পাঠ্যবইয়ের পঞ্চম অধ্যায় হলো মাল্টিমিডিয়া ও গ্রাফিকস। এখানে মাল্টিমিডিয়া, ভিডিও, প্রেজেন্টেশন, পিক্সেল, স্ট্রোক, ইলাস্ট্রেটর ইত্যাদি বিষয়ে ঠিক করলে তোমার এ অধ্যায়ের ভালো নম্বর পাবে।
এ অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত বর্ণ বা টেক্সট, চিত্র বা গ্রাফিকস, ভিডিও, শব্দ বা অডিওর সঙ্গে তৃতীয় অধ্যায়ের বিষয় টেক্সট, ছবি, শব্দ, অডিও, ভিডিও, অ্যানিমেশনের মধ্যে ভুল করে থাক। মাল্টিমিডিয়ার অংশসমূহ টেক্সট বা বর্ণ, চিত্র ও গ্রাফিকস, শব্দ বা অডিও, ভিডিও, অ্যানিমেশন ও ইন্টারঅ্যাকটিভ কম্পিউটিং সম্পর্কে ভালো করে পড়বে।
মনে রেখো কয়েকটি কথা১.
প্রতিটি অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ৵ ও তত্ত্বগুলো মনোযোগসহকারে আরেকবার দেখে নেবে।
২.
খেয়াল রাখবে তোমার পড়া ও জানা কোনো তথ্য ভুল না হয়।
৩.
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকবে। যাতে ভুল করে অন্য কোনো প্রশ্নে বৃত্ত ভরাট না করো। কারণ, ওএমআর শিটে ভুল ঠিক করা যাবে না।
৪.
পরীক্ষার আগের দুদিন সময় পাবে। তাই পাঠ৵বইয়ের প্রতিটি অধ্যায় ভালো করে রিভিশন দাও। তাতে ভালো প্রস্তুতি নিতে পারবে।
*লেখক: প্রশান্ত কুমার দাস, সহকারী অধ্যাপক, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্যানেল করতে চান উমামা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে একটি স্বতন্ত্র প্যানেল করতে চান উমামা ফাতেমা।
গতকাল বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে উমামা এ কথা জানান। তিনি তাঁর পোস্টের কমেন্টে একটি ফরম যুক্ত করেছেন। যেসব শিক্ষার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করতে চান, তাঁদের উমামা তাঁর প্যানেলের পক্ষ থেকে ফরমটি পূরণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
গত বছর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে উমামা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ছিলেন। সে সময় তিনি ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিবও ছিলেন। অভ্যুত্থানের পর তিনি ছাত্র ফেডারেশন থেকে পদত্যাগ করেন। গত বছরের অক্টোবরে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হন। গত মাসে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাড়েন।
উমামার তাঁর ফেসবুক পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন—
‘আপনারা ইতোমধ্যে জানেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-২০২৫ এর তফসিল ঘোষণা হয়েছে এবং নির্বাচন আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
আমি উমামা ফাতেমা, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুনউমামা ফাতেমার ফেসবুক পোস্ট: ঠিকমতো খোঁজ নিলে বুঝবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে২৭ জুলাই ২০২৫আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকেই ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম এবং রাজনৈতিক সংগঠনের ভিতরে বাইরে থেকে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করে আসছি। ১ম বর্ষে থাকাকালীন বৈধ সিটের দাবিতে ‘বৈধ সিট আমার অধিকার’ নামক প্ল্যাটফর্মটি গড়ে তুলি, পাশাপাশি আমার এই স্বল্প পথচলার অভিজ্ঞতায় আমি অনুধাবন করেছি যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় ধরনের বিপ্লব ব্যতীত এখানকার সমস্যাগুলো সমাধান করা খুবই কঠিন, আর সে পরিবর্তন আনতে পারে কেবল শিক্ষার্থীরাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে সংঘঠিত ও লেজটিমেট একটি বডি, যেটি কেবল ছাত্র সংসদ।
আমি বিশ্বাস করি, এই ছাত্র সংসদে শিক্ষার্থীরা এমন নেতৃত্ব চায়, যারা কোনো পক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না, শিক্ষার্থীদের অধিকারের ব্যাপারে অটল থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধুমাত্র নেতা বানানোর কারখানা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে না। শিক্ষার গুণগত মান ও গবেষণাবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
আরও পড়ুনফেসবুক লাইভে উমামা ফাতেমা: জুলাইকে ‘মানি মেকিং মেশিনে’ পরিণত করা হয়েছে২৮ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনযে পরিকল্পনায় এগোচ্ছে ছাত্রসংগঠনগুলো, প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় যাঁরা৩০ জুলাই ২০২৫সেই জায়গা থেকে, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করতে থাকা বা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবনাচিন্তা রয়েছে ঐ সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি স্বতন্ত্র প্যানেল করতে চাই যা আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে গবেষণাভিত্তিক ও দূরদর্শী কাজ করার চেষ্টা করবে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর কাছে আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা যারা মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করা উচিত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে ও রাজনৈতিক আধিপত্যবাদের ফলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বরূপে ফিরিয়ে আনতে চান।
আরও পড়ুনডাকসু নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর২৯ জুলাই ২০২৫১ম বর্ষ থেকে বৈধ সিট, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার, সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করতে চান, আপনাদের আমরা আহ্বান জানাচ্ছি আমাদের প্যানেলে।
যেসকল শিক্ষার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিংবা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করতে চান, তাদেরকে আমি আমাদের প্যানেলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি কমেন্টে প্রদত্ত ফর্মটি পূরণ করার জন্য—’
আরও পড়ুনএনসিপির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, হঠাৎ কেন এ কথা বললেন উমামা ফাতেমা২৯ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাড়লেন উমামা ফাতেমা, ফেসবুকে জানালেন কারণ২৮ জুন ২০২৫