উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ৩০ বিঘার একটি সরকারি খাল দখল করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম আবুর নেতৃত্বে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা জেলেখালী জলমহাল নামে খালটি দখল করেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। এতে বাধা দেওয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছেন।

গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের জেলেখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিন রাতে উভয়পক্ষ শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জেলেখালী জলমহালটি স্থানীয় তাহমীনা এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ভোগদখল করছে। এতিমসহ ছাত্রদের খরচ চালাতে জলমহালের আয়ের অর্থ ব্যয় করা হয়। সোমবার বিকেলে সরদার গ্যারেজ, কদমতলা ও শ্রীফলকাঠি এলাকার দুই শতাধিক তরুণ ও যুবক লাঠিসোটা নিয়ে জলমহাল দখলে নেয়। এ সময় তারা জাল ব্যবহার করে অন্তত ১২ থেকে ১৪ মণ মাছ শিকার করে। 

মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি মো.

ইছহাক আলীর ভাষ্য, জেলেখালী জলমহাল ইজারা নিয়ে সরকারের সঙ্গে তার পরিবারের মামলা চলছে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে উচ্চ আদালত খালের ওপর স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। সম্প্রতি ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম আবু খালটি জবরদখলের ঘোষণা দেন।

সোমবার খালটি দখলের সময় ইজারা গ্রহীতা সুশান্ত সরদার, আবুল হোসেন ও আব্দুল আজিজ নামের তিনজনকে মারধর করা হয়। খাল পাহারার বাসা ভাঙচুরসহ তারা লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে ইছহাক আলী বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দল ও বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার কর্মী-সমর্থকরা দখলে জড়িত।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের দোসররা দীর্ঘদিন ধরে খাল ভোগ করেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাদের খাল ভোগ করতে দেওয়া হবে না। এ জন্য এলাকার লোকজন এটি দখলে নিয়েছে।’ দখলের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবাই যদি নেতা মেনে আমার নেতৃত্বে দখলের কথা বলে, তবে আমি গর্বিত।’ 

শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

ইউএনও রনী খাতুন বলেন, দ্বিতীয় কোনো আদেশ না হওয়া পর্যন্ত আদালত যেভাবে বলবে, সেভাবেই সবাইকে চলতে হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল জলমহ ল দখল র

এছাড়াও পড়ুন:

খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দিয়েছিলেন ট্রাম্প

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলের পরিকল্পনা কয়েক দিন আগে আটকে দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইসরায়েল গত শুক্রবার ভোর রাতে হামলা করে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ পদের প্রায় সব কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় খামেনির একজন উপদেষ্টাও নিহত হন।

মার্কিন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানিরা কি এখন পর্যন্ত কোনো আমেরিকানকে হত্যা করেছে? না, যতক্ষণ না তারা এটা করছে, ততক্ষণ আমরা কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আক্রমণের কথা ভাবছিও না।’

এদিকে গতকাল রোববার ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেখান তাকে খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে প্রশ্ন করেলে নেতানিয়াহু বলেন, ‘কখনো আলাপই হয়নি, এমন অনেক বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করা হয়েছে। আমি সে বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।’

ফক্সের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা করার দরকার, তা করি।’ নেতানিয়াহু বলেন, ইরানে ইসরায়েলের সামরিক হামলার একটি ফল হতে পারে সরকার পরিবর্তন। তেহরানের সৃষ্ট ‘অস্তিত্বের হুমকি’ দূর করতে ইসরায়েল যা যা প্রয়োজন, তা-ই করবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে চলমান এই সংঘাত ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, এটি সহজেই শেষ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে ইরানকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, যদি ইরান কোনো আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রও এ সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ