আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সরকারি খাল দখলের অভিযোগ
Published: 22nd, April 2025 GMT
উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ৩০ বিঘার একটি সরকারি খাল দখল করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম আবুর নেতৃত্বে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা জেলেখালী জলমহাল নামে খালটি দখল করেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। এতে বাধা দেওয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের জেলেখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিন রাতে উভয়পক্ষ শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জেলেখালী জলমহালটি স্থানীয় তাহমীনা এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ভোগদখল করছে। এতিমসহ ছাত্রদের খরচ চালাতে জলমহালের আয়ের অর্থ ব্যয় করা হয়। সোমবার বিকেলে সরদার গ্যারেজ, কদমতলা ও শ্রীফলকাঠি এলাকার দুই শতাধিক তরুণ ও যুবক লাঠিসোটা নিয়ে জলমহাল দখলে নেয়। এ সময় তারা জাল ব্যবহার করে অন্তত ১২ থেকে ১৪ মণ মাছ শিকার করে।
মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি মো.
সোমবার খালটি দখলের সময় ইজারা গ্রহীতা সুশান্ত সরদার, আবুল হোসেন ও আব্দুল আজিজ নামের তিনজনকে মারধর করা হয়। খাল পাহারার বাসা ভাঙচুরসহ তারা লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে ইছহাক আলী বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দল ও বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার কর্মী-সমর্থকরা দখলে জড়িত।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের দোসররা দীর্ঘদিন ধরে খাল ভোগ করেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাদের খাল ভোগ করতে দেওয়া হবে না। এ জন্য এলাকার লোকজন এটি দখলে নিয়েছে।’ দখলের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবাই যদি নেতা মেনে আমার নেতৃত্বে দখলের কথা বলে, তবে আমি গর্বিত।’
শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ইউএনও রনী খাতুন বলেন, দ্বিতীয় কোনো আদেশ না হওয়া পর্যন্ত আদালত যেভাবে বলবে, সেভাবেই সবাইকে চলতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল জলমহ ল দখল র
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর পৌরসভায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতক্ষীরার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘শ্যামনগর আসন ছিল, শ্যামনগর থাকবে’, ‘পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে জেসি কমপ্লেক্স চত্বরে পথসভা করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়ামন কবীর, জেলা বিএনপির সদস্য জি এম লিয়াকত আলী, সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটির আসন পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সরাসরি যোগযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হলে কালীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে অথবা নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয়।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ ৪টি ইউনিয়ন। পুনর্বিন্যাস করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।