পিএসএলে নিজের প্রথম দুই ম্যাচে তিনটি–তিনটি করে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন। তাঁর দারুণ বোলিং লাহোর কালান্দার্সকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। আজও ২ উইকেট পেয়েছেন বাংলাদেশের লেগ স্পিন অলরাউন্ডার। তবে ছিলেন বেশ খরুচে; ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৫ রান।

অবশ্য শুধু রিশাদ কেন, রান উৎসবের ম্যাচে বেশিরভাগ বোলারই আজ কঠিন সময় পার করেছেন। তবে ম্যাচ শেষে হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে মুলতান সুলতানস। রিশাদের লাহোরকে তারা হারিয়েছে ৩৩ রানে।

এবারের পিএসএলে নিজেদের মাঠ মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এটিই মুলতানের প্রথম ম্যাচ। নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচ হারা দলটি এ রাতেই পেল প্রথম জয়।

ওপেনার ইয়াসির খানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে (৬টি করে চার ও ছক্কায় ৪৪ বলে ৮৭) ২২৮ রানের পাহাড় গড়েছিল মুলতান। জবাবে লাহোর ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৫  রানে থামে। ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লাহোরকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন উবাইদ শাহ। মুলতানের পেসার উবাইদের আরেক পরিচয় পাকিস্তান জাতীয় দলের ফাস্ট বোলার নাসিম শাহর ছোট ভাই।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৯ রান তুলে ফেলেছিল মুলতান, যা এবারের পিএসএলে পাওয়ারপ্লেতে দলীয় সর্বোচ্চ। সপ্তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসেন রিশাদ, দেন ১০ ওভার। ১২তম ওভারে আবার বোলিংয়ে ফিরে দেন ১২ রান।

তবে নিজের শেষ দুই ওভারে ২ উইকেট নেন রিশাদ। এই দুই ওভারে আরও ২৩ রান দিলেও আউট করেন উসমান খান আর অ্যাস্টন টার্নারকে। এরপরও মুলতানের রানের লাগাম টানা সম্ভব হয়নি। হারিস রউফ ও শাহিন আফ্রিদি আজ দেদারসে রান বিলিয়েছেন। শেষ দিকে ইফতিখার আহমেদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২২৮ রান করে ফেলে স্বাগতিকেরা।

কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতে দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও ফখর জামানের উইকেট হারায় লাহোর কালান্দার্স। দলীয় ৮৭ রানের মধ্যে হারায় প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে।

এরপরেই ব্যাটিংয়ে নামেন রিশাদ। আগের দুই ম্যাচে আটে ও সাতে নামা এই অলরাউন্ডার আজ আরও এক ধাপ ওপরে উঠে এসে ব্যাট করলেও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। ২ বলে ২ রান করে লেগ স্পিনার উসামা মিরের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন।

তবু লাহোরের জয়ের কিঞ্চিৎ আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন স্যাম বিলিংস ও সিকান্দার রাজা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। দুজনের ঝোড়ো ব্যাটিং শুধু লাহোরের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। রিশাদদের পরের ম্যাচ বৃহস্পতিবার বাবর আজমের পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর

মুলতান সুলতানস: ২০ ওভারে ২২৮/৫ (ইয়াসির ৮৭, ইফতিখার ৪০*, উসমান ৩৯, রিজওয়ান ৩২; রিশাদ ২/৪৫, রাজা ১/১৫, আসিফ ১/২৬, আফ্রিদি ১/৪৩)।

লাহোর কালান্দার্স: ২০ ওভারে ১৯৫/৯ (রাজা ৫০*, বিলিংস ৪৩, ফখর ৩২; উবাইদ ৩/৩৭, ব্রেসওয়েল ২/২০, উসামা ২/২৬)।

ফল: মুলতান সুলতানস ৩৩ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইয়াসির খান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র

চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল মানেই তো উত্তেজনার চূড়ান্ত রূপ। আর মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাতালোনিয়ার মন্টজুইকে যা দেখা গেল— তা যেন শুধুই একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং ছয় গোলের অনির্দেশ্য গল্প। যেখানে বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে একসঙ্গে রচনা করল রোমাঞ্চ আর বীরত্বের এক অপূর্ব মহাকাব্য। দুইবার পিছিয়ে পড়েও অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে ৩-৩ গোলে সমতা টানল কাতালান জায়ান্টরা।

ম্যাচ শুরুই হলো যেন বজ্রপাত দিয়ে। সময়ের কাঁটায় মিনিটও পেরোয়নি। এর মধ্যেই ইন্টারের মার্কুস তুরাম এক চতুর ব্যাকহিল ফিনিশে বল ঠেলে দেন জালে। সেই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো কাতালান রক্ষণভাগ। এরপর ২১ মিনিটে কর্নার থেকে ডেনজেল ডামফ্রিসের অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে যেন বার্সার হৃদয়েই ঘা লাগে, ইন্টারের লিড তখন ২-০ গোলে।

তবে ইতিহাস বলে—  বার্সেলোনার যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখনই তারা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই ধারাতেই, ডানদিক থেকে দুরন্ত ছন্দে এগিয়ে এসে বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠালেন কিশোর বিস্ময় লামিনে ইয়ামাল। ইন্টারের দ্বিতীয় গোলের মাত্র তিন মিনিট পর আসে এই গোল, যা এই ম্যাচে বার্সার ফেরার না বলা প্রতিশ্রুতি হয়ে উঠেছিল।

সেই ইয়ামাল পরে আরও একবার প্রায় গোল করে ফেলছিলেন। কিন্তু ভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়। বল লাগে পোস্টে। তবে কাতালান আশা তখনও নষ্ট হয়নি। ৩৮ মিনিটে ফেরান তোরেস ডানদিক থেকে আসা পাসে ওয়ান-টাইম ফিনিশে বল জড়ান জালে, ফিরিয়ে আনেন সমতা। ম্যাচ তখন যেন টানটান থ্রিলারে রূপ নেয় এবং শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখলে ও খেলার ছন্দে এগিয়ে থাকলেও ৬৪ মিনিটে আবারও হোঁচট খায় বার্সা। কর্নার থেকে হেডে ডামফ্রিস করেন তার দ্বিতীয় গোল। ইন্টার আবারও এগিয়ে যায়। কিন্তু বার্সা মানেই তো ক্ষণিকের বিশ্রামে আবার অগ্নি হয়ে ওঠা। দ্রুতই আসে জবাব। রাফিনহার দূরপাল্লার গর্জে ওঠা শট প্রথমে লাগে পোস্টে, এরপর ফিরে এসে লেগে যায় গোলরক্ষক ইয়ান সমারের পিঠে, এরপর বল ঢুকে পড়ে জালে। ম্যাচ আবারও ৩-৩। যদিও এটি আত্মঘাতী গোল হিসেবে গণ্য হয়, কাতালানদের জন্য তা যেন নবজন্মের এক চুম্বন।

শেষ বাঁশি পর্যন্ত দুই দলই তীব্রভাবে চেষ্টা করেছে জয় ছিনিয়ে নিতে। কিন্তু ভাগ্য সেদিন ছিল ভারসাম্যপন্থী।

এখন সব অপেক্ষা দ্বিতীয় লেগের। আগামী ৬ মে মিলানের ঐতিহাসিক সান সিরো স্টেডিয়ামে লেখা হবে এই নাটকের অন্তিম অঙ্ক। এক ম্যাচ, এক ফলাফল, এক জয়ী— আর সেই জয়ীর জন্য অপেক্ষা করছে মিউনিখের আলো-আড়ম্বরের রাত। ইউরোপীয় ফুটবলের মঞ্চে চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন।

সান সিরোর আকাশে হয়তো আবার জ্বলে উঠবে এক নতুন রূপকথার তারা।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র
  • জবি ছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আটক তরুণ
  • সুইডেনে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৩
  • চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও লিভারপুলের কোন খেলোয়াড়েরা পদক পাবেন না
  • বিশ্বের বড় বড় উৎসব কোথায় হয়
  • প্রাগে পুরস্কৃত ‘নট আ ফিকশন’,অনলাইনে মুক্তি ১ মে
  • ফসলের ক্ষেতে আশার আলো
  • কানে ‘আলী’, দায়িত্ব নিলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
  • এবার লন্ডনে পুরস্কার জিতল ‘প্রিয় মালতি’
  • আকাশ থেকে ঝরে পড়ছে চকলেট