এবার রিশাদের ২ উইকেট ও ২ রান, রান উৎসবের ম্যাচে হেরে গেল লাহোর
Published: 23rd, April 2025 GMT
পিএসএলে নিজের প্রথম দুই ম্যাচে তিনটি–তিনটি করে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন। তাঁর দারুণ বোলিং লাহোর কালান্দার্সকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। আজও ২ উইকেট পেয়েছেন বাংলাদেশের লেগ স্পিন অলরাউন্ডার। তবে ছিলেন বেশ খরুচে; ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৫ রান।
অবশ্য শুধু রিশাদ কেন, রান উৎসবের ম্যাচে বেশিরভাগ বোলারই আজ কঠিন সময় পার করেছেন। তবে ম্যাচ শেষে হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে মুলতান সুলতানস। রিশাদের লাহোরকে তারা হারিয়েছে ৩৩ রানে।
এবারের পিএসএলে নিজেদের মাঠ মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এটিই মুলতানের প্রথম ম্যাচ। নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচ হারা দলটি এ রাতেই পেল প্রথম জয়।
ওপেনার ইয়াসির খানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে (৬টি করে চার ও ছক্কায় ৪৪ বলে ৮৭) ২২৮ রানের পাহাড় গড়েছিল মুলতান। জবাবে লাহোর ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৫ রানে থামে। ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লাহোরকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন উবাইদ শাহ। মুলতানের পেসার উবাইদের আরেক পরিচয় পাকিস্তান জাতীয় দলের ফাস্ট বোলার নাসিম শাহর ছোট ভাই।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৯ রান তুলে ফেলেছিল মুলতান, যা এবারের পিএসএলে পাওয়ারপ্লেতে দলীয় সর্বোচ্চ। সপ্তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসেন রিশাদ, দেন ১০ ওভার। ১২তম ওভারে আবার বোলিংয়ে ফিরে দেন ১২ রান।
তবে নিজের শেষ দুই ওভারে ২ উইকেট নেন রিশাদ। এই দুই ওভারে আরও ২৩ রান দিলেও আউট করেন উসমান খান আর অ্যাস্টন টার্নারকে। এরপরও মুলতানের রানের লাগাম টানা সম্ভব হয়নি। হারিস রউফ ও শাহিন আফ্রিদি আজ দেদারসে রান বিলিয়েছেন। শেষ দিকে ইফতিখার আহমেদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২২৮ রান করে ফেলে স্বাগতিকেরা।
কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতে দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও ফখর জামানের উইকেট হারায় লাহোর কালান্দার্স। দলীয় ৮৭ রানের মধ্যে হারায় প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে।
এরপরেই ব্যাটিংয়ে নামেন রিশাদ। আগের দুই ম্যাচে আটে ও সাতে নামা এই অলরাউন্ডার আজ আরও এক ধাপ ওপরে উঠে এসে ব্যাট করলেও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। ২ বলে ২ রান করে লেগ স্পিনার উসামা মিরের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন।
তবু লাহোরের জয়ের কিঞ্চিৎ আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন স্যাম বিলিংস ও সিকান্দার রাজা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। দুজনের ঝোড়ো ব্যাটিং শুধু লাহোরের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। রিশাদদের পরের ম্যাচ বৃহস্পতিবার বাবর আজমের পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরমুলতান সুলতানস: ২০ ওভারে ২২৮/৫ (ইয়াসির ৮৭, ইফতিখার ৪০*, উসমান ৩৯, রিজওয়ান ৩২; রিশাদ ২/৪৫, রাজা ১/১৫, আসিফ ১/২৬, আফ্রিদি ১/৪৩)।
লাহোর কালান্দার্স: ২০ ওভারে ১৯৫/৯ (রাজা ৫০*, বিলিংস ৪৩, ফখর ৩২; উবাইদ ৩/৩৭, ব্রেসওয়েল ২/২০, উসামা ২/২৬)।
ফল: মুলতান সুলতানস ৩৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইয়াসির খান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’