ইন্দোনেশিয়ার আইপিএস বৃত্তি, সুযোগ স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডিতে
Published: 24th, April 2025 GMT
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৃত্তি নিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীন ও ইউরোপের প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি। তবে পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় প্রতি আগ্রহও লক্ষ্যণীয়। সেই ইন্দোনেশিয়ার একটি বৃত্তি হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল প্রায়োরিটি স্কলারশিপ–আইপিএস। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সম্পূর্ণ অর্থায়িত আইপিএস বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীরা স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ বৃত্তির আওতায় দেশটির মুহাম্মাদিয়াহ ইউনিভার্সিটি অব সুরাকার্তায় (ইউএমএস) পড়াশোনার সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা। বৃত্তি প্রোগ্রামটি আগামী সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হবে।
সুযোগ-সুবিধা
আইপিএস বৃত্তির আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ টিউশন মওকুফ পাবেন
জীবনযাত্রার ভাতা হিসেবে শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে ১৭ লাখ ৫০ হাজার আইডিআর পাবেন
বই ভাতা হিসেবে প্রতি মাসে মিলবে ৫০ হাজার আইডিআর
স্বাস্থ্যবিমা
বিমানে যাতায়াতের টিকিট
পড়াশোনার বিষয় কী কী—
শিক্ষা অনুষদ, অর্থনীতি ও ব্যবসা অনুষদ, আইন অনুষদ, প্রকৌশল অনুষদ, ফার্মেসি অনুষদ, মনোবিজ্ঞান অনুষদ, ভূগোল অনুষদ, ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ, স্বাস্থ্য অনুষদ, যোগাযোগ ও তথ্যবিজ্ঞান অনুষদ।
আরও পড়ুনইউনিভার্সিটি অব আলবার্টায় সম্পূর্ণ অর্থায়নের বৃত্তি, স্নাতক–স্নাতকোত্তর–পিএইচডিতে সুযোগ০৫ এপ্রিল ২০২৫আবেদনের প্রয়োজনীয় তথ্যছবি
একাডেমিক সার্টিফিকেট
একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
ভাষা সার্টিফিকেট
বৈধ পাসপোর্ট
একাডেমিক সুপারিশপত্র
মোটিভেশন লেটার
তত্ত্বাবধায়কের সুপারিশপত্র
মেডিকেল রিপোর্ট।
আরও পড়ুনজার্মানিতে ফ্রি ফ্রেডরিখ স্টিফটাং বৃত্তি, ১২০০ ইউরোর সঙ্গে মিলবে স্বাস্থ্যবিমাও ০৩ জুলাই ২০২৩আবেদনের যোগ্যতাইন্দোনেশিয়ার নাগরিকত্ব নেই, এমন যেকোনো দেশের শিক্ষার্থী এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন
স্নাতকের জন্য আবেদন করতে উচ্চমাধ্যমিকের সনদ
স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতকের সনদ
পিএচডির জন্য স্নাতকোত্তরের সনদ থাকতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি: আবেদনের পদ্ধতিসহ আবেদনের বিস্তারিত তথ্য মিলবে এই লিংকে। এ লিংকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন আগ্রহীরা।
আবেদনের শেষ তারিখ ১৫ মে, ২০২৫।
আরও পড়ুন৬০০ বৃত্তির সুযোগ গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে, জেনে নিন বিস্তারিত২১ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইন দ ন শ য
এছাড়াও পড়ুন:
‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়
‘তাণ্ডব’ সিনেমার গান ‘লিচুর বাগানে’ প্রকাশের পর রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। কফি শফ থেকে বাস, মেট্রোরেল আশপাশে কান পাতলে গানটা শোনা যাচ্ছে। কেউ না কেউ শুনছেন। সামাজিক মাধ্যমের স্টোরি ও রিলসেও গানটি ভেসে বেড়াচ্ছে। চরকি ও এসভিএফের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত গানটির আজ পর্যন্ত (১২ এপ্রিল ২০২৫) ভিউ হয়েছে যথাক্রমে ১২ মিলিয়ন ও ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন।
উচ্ছ্বসিত অনেক দর্শক গানটি নিয়ে মন্তব্যও করেছেন। তাহসিন নামের এক শ্রোতা লিখেছেন, ‘গানটির প্রতিটি সুর, দৃশ্য ও পরিবেশনায় বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অপূর্ব রূপ ফুটে উঠেছে। যাত্রাপালার ফিল্মের আবহে তৈরি এই গানটি যেন গ্রামীণ বাংলার প্রাণস্পন্দন তুলে ধরেছে। লোকেশন থেকে শুরু করে কস্টিউম, প্রতিটি ডিটেইলে আছে নিখুঁত যত্ন।’
গানটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুদের মধ্যে খুনসুটিও চলছে। বন্ধুকে মেনশন দিয়ে কেউ যেমন প্রশ্ন করছেন, ‘কী রে, বেড়া ডিঙাতে পারলি?’ আবার কেউ জিজ্ঞেস করছেন বল তো, ‘“লিচুর বাগানে” কেন “পিরিতের বেড়া” দিতে হয়?’
প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক। শুরুতেই ‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, ‘কে এই ছত্তার পাগলা’ শীর্ষক প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। গবেষক সরোজ মোস্তফার মতে ‘কে দিল পিরিতের বেড়া লিচুরও বাগানে’ পঙ্ক্তির রচয়িতা ও সুরকার ছত্তার পাগলা। তবে সংগীতগবেষক গৌতম কে শুভর মত ভিন্ন। তাঁর মতে, ‘এটি মূলত প্রচলিত ঘেটু গান। “কে দিল পিরিতির বেড়া লিচুর বাগানে?” অংশটি মূল গানের অংশ। ছত্তার পাগলা নিজের মতো করে এর সঙ্গে কথা সংযোজন করেছেন। নেত্রকোনায় ছত্তার পাগলার লেখা রূপটিই বিখ্যাত হয়েছে।’ ২০১৪ সালের এপ্রিলে মারা গেছেন ছত্তার পাগলা। জীবদ্দশায় রচনা ও সুরারোপ করেছেন কয়েক শ গান। মৃত্যুর বছর তিনেক আগে তাঁর কাছ থেকে গানটি শুনে হাতে লিখে রেখেছিলেন আল মামুন চৌধুরী।
আল মামুন চৌধুরীর লেখা অনুযায়ী গানটির কথা:
কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে
লিচুরও বাগানে গো সই…লিচুরও বাগানে …(ঐ)
পাখি খাইছ না লিচু, বন্দে খাইবো
বন্দে লিচু খাইয়া, খুশি হইবো
আমার কাছে আইসা কইবো
কত শান্তি দিবো আমার মনেপ্রাণে (ঐ)
ছোট ছোট লিচুগুলি, বন্দে তুলে আম্বো তুলি
বন্দে দেয় গো আমার মুখে,
আমি দিতে চাই বন্ধুর মুখের পানে…(ঐ)
মিষ্টি লিচু খাইয়া বন্দে, বাঁশি বাজায় মন আনন্দে
আমার মনে লাগে সন্দে বন্ধু সম্ভব জাদু জানে (ঐ)
বাঁশি হাতে পলায় মালা, তারে চায় ছত্তার পাগলা,
করব লইয়া উলামেলা, (২) প্রাণবন্ধুর সনে…(ঐ)
সরল অর্থে ‘বেড়া’ হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা তথা বাধা তৈরির উপকরণ। আর ‘পিরিতের বেড়া’ মানে ভালোবাসায় বাধা। কিন্তু ভালোবাসার এই বাধা তথা প্রতিবন্ধকতা ‘লিচুর বাগানে’ কেন? কবিতা তথা গানে অর্থের তারতম্য অর্থের অনুগত না হয়ে বোধ কিংবা ভাবনার পরবশে প্রস্ফুটিত হয়। ব্যক্তিবিশেষে তা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ লাভ করে, ভিন্ন ভিন্ন মূল্য পায়।
আরও পড়ুন‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, কে এই ছত্তার পাগলা ০৬ জুন ২০২৫‘কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে’ একটি ‘ঘাটু গান’ বা ‘ঘেটু গান’। এই গান প্রসঙ্গে জানা যায়, এই গানের অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল নৃত্য। অল্প বয়সী একটি ছেলেকে মেয়ে সাজিয়ে তার নৃত্যের মধ্য দিয়ে ঘেটু গান পরিবেশিত হতো। সঙ্গে থাকত ঢোল, হারমোনিয়াম, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। কয়েকটি ‘ঘেটু গানে’র দৃষ্টান্ত দেখা যাক।
(১)
‘তুই আমারে চিনলে নারে
আমি তো রসের কমলা।
বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ি
মধ্যে নলের বেড়া।’
(২)
ঘুমাইলা ঘুমাইলারে বন্ধু
পান খাইলায়না
এক বালিশে দুইটি মাথা
সুন্দর কইরা কওরে কথা।
গানগুলো থেকে উপলব্ধি করতে কষ্ট হয় না যে ‘ঘেটু গানে’ যেমন ভাষার সারল্য আছে, তেমনিভাবে রূপকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে যাপিত জীবনের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকা নানা উপকরণ। আর এ ক্ষেত্রে গান রচনার সময় রচয়িতা তাঁর আশপাশ থেকেই গান নির্মাণের উপকরণগুলো যে নিয়ে থাকবেন, সেই ধারণাও পাওয়া যায়। ‘লিচুর বাগানে’ গানের ক্ষেত্রেও বোধ করি এটা ঘটেছে। তাই এই গানে যেমন ‘লিচু বাগানে’র কথা আছে, একইভাবে আছে ‘পাখি’, ‘বাঁশি’ ও ‘লিচু’র কথাও। পাখিকে লিচু না খাওয়ার অনুরোধ করলেও পাখি যেন খেতে না পারে সে কারণেই যে বেড়া দেওয়া হয়েছে; সেই ব্যথাও গানটিতে ফুটে উঠেছে। সব মিলিয়ে ‘লিচুর বাগান’ শেষ পর্যন্ত ‘লিচুর বাগানে’ সীমাবদ্ধ থাকেনি। হয়ে উঠেছে ভালোবাসার প্রতীক।
কথায় আছে, ভালোবাসা জয় করে নিতে হয়। জিতে নেওয়ার মধ্যেই আছে অপার আনন্দ। ভালোবাসায় প্রতিবন্ধকতা থাকাটা মোটেও দোষের নয়। বরং বাধা না থাকাটাই যেন আশ্চর্যের। একইভাবে ভালোবাসা জিতে নেওয়ার পরও পেয়ে গেছি বলে হাল ছেড়ে দিলে চলে না। ‘লিচুর বাগান’কে এ ক্ষেত্রে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করলে, ‘লিচুর বাগানে’ ‘পিরিতের বেড়া’ তথা ভালোবাসার বেষ্টনী দেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত। কেননা ‘ভালোবাসা’কে ভালোবাসা দিয়েই আগলে রাখতে হয়। প্রবল যত্নে আঁকড়ে রাখতে হয়। যেন কোনো কৌতূহলেই তা দুলে না ওঠে, হারিয়ে না যায়।
আরও পড়ুনসাবিলা তো ‘লিচুর বাগানে’ দিয়ে কী যে আগুন লাগিয়ে দিল...০৫ জুন ২০২৫