দেশে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে আবার। গতকাল বুধবার ২৪টি জেলায় বয়ে গেছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এ তাপপ্রবাহ আজ বৃহস্পতিবারও থাকতে পারে। তবে এরই মধ্যে সিলেট বিভাগের কিছু কিছু স্থানে এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক স্থানে বৃষ্টি হতে পারে আজ। এই বৃষ্টির মধ্যেও তাপ কমার সম্ভাবনা অবশ্য কম। আগামী শনিবার পর্যন্ত তাপমাত্রা খুব কমবে না বলেই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা।
গতকাল রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সব স্থানে এবং মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের মোট জেলার সংখ্যা ১৮। তাই সব মিলিয়ে গতকাল ২৪ জেলায় তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এর মধ্যে খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা ছিল অপেক্ষাকৃত বেশি। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ছিল খুলনা বিভাগের আরেক জেলা চুয়াডাঙ্গায়, ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজও দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.
গতকাল রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান