শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্পাত খাতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বিএসআরএম গ্রুপের দুই কোম্পানির মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। কোম্পানি দুটি হলো বিএসআরএম লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিল। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই দুটি কোম্পানি সম্মিলিতভাবে ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এর মধ্যে বিএসআরএম লিমিটেডের মুনাফা ৬১৪ কোটি টাকা এবং বিএসআরএম স্টিলের মুনাফা ৫১৮ কোটি টাকা।

গত শনিবার কোম্পানি দুটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মুনাফার এই হিসাব চূড়ান্ত করা হয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে গতকাল রোববার মুনাফার এই তথ্য শেয়ারধারীদের জানানো হয়। একই সভায় গত অর্থবছর শেষে শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশও ঘোষণা করা হয়েছে। দুটি কোম্পানি প্রতি শেয়ারের বিপরীতে শেয়ারধারীদের রেকর্ড ৫০ শতাংশ বা ৫ টাকা করে নগদ লভ্যাংশ দেবে।

আগের অর্থবছরের চেয়ে গত অর্থবছরে কোম্পানি দুটির সম্মিলিত মুনাফা বেড়েছে ৩২০ কোটি টাকা বা ৪০ শতাংশ।

বিএসআরএম কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, এই প্রথমবার কোম্পানি দুটির সম্মিলিত মুনাফা ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত অর্থবছরে সম্মিলিতভাবে রেকর্ড ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকার মুনাফা করেছে কোম্পানি দুটি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কোম্পানি দুটির সম্মিলিত মুনাফা ছিল ৮১২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিএসআরএম লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিলের সম্মিলিত মুনাফা ৩২০ কোটি টাকা বা প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানি দুটির মধ্যে মুনাফা বেশি বেড়েছে বিএসআরএম লিমিটেডের। এক বছরের ব্যবধানে এই কোম্পানিটির মুনাফা ১৮২ কোটি টাকা বা ৪২ শতাংশ বেড়েছে। আর বিএসআরএম স্টিলের মুনাফা বেড়েছে ১৩৮ কোটি টাকা বা ৩৬ শতাংশ।

এদিকে কোম্পানি দুটি গত অর্থবছরের জন্য যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তাতে লভ্যাংশবাবদ বিএসআরএম লিমিটেড শেয়ারধারীদের দেবে ১৪৯ কোটি টাকা। আর বিএসআরএম স্টিল লভ্যাংশবাবদ গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের দেবে ১৮৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে দুই কোম্পানি মিলে শেয়ারধারীদের মধ্যে লভ্যাংশবাবদ বিতরণ করবে ৩৩৭ কোটি টাকা।

ডিএসইর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, হাজার কোটি টাকার বেশি রেকর্ড মুনাফার পর কোম্পানি দুটির মধ্যে একটি কোম্পানি শেয়ারধারীদের জন্য রেকর্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। বিএসআরএম স্টিল সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল ২০২১ সালে। ডিএসইর ওয়েবসাইটে ২০০৯ সাল থেকে কোম্পানিটির লভ্যাংশের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে কখনোই বিএসআরএম স্টিল শেয়ারধারীদের ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়নি। তবে বিএসআরএম লিমিটেড ২০২১ সালে শেয়ারধারীদের ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০২১ সালের পর এ বছর আবারও শেয়ারধারীদের ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি।

জানতে চাইলে বিএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরজুড়ে আমরা উৎপাদন খরচ কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। পাশাপাশি বিক্রিও বেড়েছে। এই দুই উদ্যোগের ফলে বছর শেষে কোম্পানি দুটি রেকর্ড মুনাফা করেছে। এর আগে কখনো এই দুই কোম্পানির সম্মিলিত মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি।’

এদিকে গত অর্থবছরে রেকর্ড মুনাফার পর বিএসআরএম গ্রুপ ২০০ কোটি টাকা নতুন বিনিয়োগেরও ঘোষণা দিয়েছে। গত শনিবার কোম্পানিটির পর্ষদ সভায় বিনিয়োগের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানিটি গতকাল ডিএসইর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে, বিএসআরএম ওয়্যারস লিমিটেড নামে নতুন কোম্পানির মাধ্যমে এই বিনিয়োগ করা হবে। এই বিনিয়োগের বিপরীতে নতুন কোম্পানির শেয়ারের মালিকানা পাবে বিএসআরএম লিমিটেড। দীর্ঘমেয়াদি মূল্য সংযোজনের লক্ষ্যে কৌশলগত এই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটি। এই বিনিয়োগে গঠিত কোম্পানিটি উচ্চমানের তারজাতীয় পণ্য উৎপাদন করবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এসআরএম ল ম ট ড ব এসআরএম স ট ল র কর ড ম ন ফ এই ব ন য় গ র জন য বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

চার কারণে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের পূর্বাভাস কমিয়েছে আইএমএফ

চার কারণে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আইএমএফ গত জুন মাসে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৪ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। গত মঙ্গলবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি বলেছে, অর্থবছর শেষে এ হার হবে ৪ দশমিক ৯।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসনের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, গত জুনের পূর্বাভাসের তুলনায় অক্টোবরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের পূর্বাভাস কমাল কেন আইএমএফ?

জবাবে শ্রীনিবাসন চারটি কারণের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রথমত, এই সময়ে সরকারের নীতিগত মিশ্রণ বা পলিসি মিক্স তুলনামূলকভাবে কড়াকড়ি হয়েছে; দ্বিতীয়ত, শুল্কনীতি ও বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা বড় ভূমিকা রেখেছে।

আরও দুটি অনিশ্চয়তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ওপর প্রভাব ফেলেছে বলে জানান আইএমএফের এই পরিচালক। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে অনিশ্চয়তা, যা বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশায় প্রভাব ফেলবে। অন্যটি হলো আর্থিক খাতের দুর্বলতা। এ দুর্বলতার কারণে প্রভাব পড়বে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধিতে।

আইএমএফ বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হারের পূর্বাভাস জুনে দিয়েছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। অথচ অক্টোবরে তা বাড়িয়ে করেছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। শ্রীনিবাসন এর কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এটা হবে মূলত বছরের শুরুর দিকে ঘটে যাওয়া সরবরাহ খাতে ধাক্কা লাগার ফলে। তবে আমি আশা করছি, মূল্যস্ফীতির হারটি ৮ দশমিক ৫ হতে পারে।’

চলমান ঋণ কর্মসূচির আকার এখন ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের এবং এ ঋণ কর্মসূচির আওতায় যে সংস্কার কার্যক্রমগুলো বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করছে, সেগুলোর অগ্রগতি এখন কী পর্যায়ে—এমন প্রশ্নের জবাবে আইএমএফের পরিচালক শ্রীনিবাসন বলেন, পর্যালোচনার জন্য আইএমএফের একটি দল শিগগির বাংলাদেশ সফর করবে। এবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কারের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। একটি হচ্ছে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব খাতে সংস্কার। অন্যটি আর্থিক খাতে কাঠামোগত সংস্কার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চার কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা
  • ট্রাম্পের বরাদ্দ কমানোর পদক্ষেপের মধ্যেও রেকর্ড আয় যেভাবে করল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়
  • মাহির বিচ্ছেদের গুঞ্জনের মাঝেই বিয়ের তারিখ ভুলে গেলেন রকিব!
  • নিহত শহীদ পরিবারে ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা সহায়তা
  • কেঁচোর জাদুতে বদলে গেলো কামরুজ্জামানের ভাগ্য
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ৫ বাংলাদেশি বোলার
  • এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের
  • টি-টোয়েন্টিতে ৩৪ বলে সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়লেন ভারতের ব্যাটার
  • চার কারণে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের পূর্বাভাস কমিয়েছে আইএমএফ