বিএসআরএমের দুই কোম্পানির ১,১৩২ কোটি টাকার রেকর্ড মুনাফা
Published: 20th, October 2025 GMT
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্পাত খাতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বিএসআরএম গ্রুপের দুই কোম্পানির মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। কোম্পানি দুটি হলো বিএসআরএম লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিল। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই দুটি কোম্পানি সম্মিলিতভাবে ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এর মধ্যে বিএসআরএম লিমিটেডের মুনাফা ৬১৪ কোটি টাকা এবং বিএসআরএম স্টিলের মুনাফা ৫১৮ কোটি টাকা।
গত শনিবার কোম্পানি দুটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মুনাফার এই হিসাব চূড়ান্ত করা হয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে গতকাল রোববার মুনাফার এই তথ্য শেয়ারধারীদের জানানো হয়। একই সভায় গত অর্থবছর শেষে শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশও ঘোষণা করা হয়েছে। দুটি কোম্পানি প্রতি শেয়ারের বিপরীতে শেয়ারধারীদের রেকর্ড ৫০ শতাংশ বা ৫ টাকা করে নগদ লভ্যাংশ দেবে।
আগের অর্থবছরের চেয়ে গত অর্থবছরে কোম্পানি দুটির সম্মিলিত মুনাফা বেড়েছে ৩২০ কোটি টাকা বা ৪০ শতাংশ।বিএসআরএম কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, এই প্রথমবার কোম্পানি দুটির সম্মিলিত মুনাফা ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত অর্থবছরে সম্মিলিতভাবে রেকর্ড ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকার মুনাফা করেছে কোম্পানি দুটি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কোম্পানি দুটির সম্মিলিত মুনাফা ছিল ৮১২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিএসআরএম লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিলের সম্মিলিত মুনাফা ৩২০ কোটি টাকা বা প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানি দুটির মধ্যে মুনাফা বেশি বেড়েছে বিএসআরএম লিমিটেডের। এক বছরের ব্যবধানে এই কোম্পানিটির মুনাফা ১৮২ কোটি টাকা বা ৪২ শতাংশ বেড়েছে। আর বিএসআরএম স্টিলের মুনাফা বেড়েছে ১৩৮ কোটি টাকা বা ৩৬ শতাংশ।
এদিকে কোম্পানি দুটি গত অর্থবছরের জন্য যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তাতে লভ্যাংশবাবদ বিএসআরএম লিমিটেড শেয়ারধারীদের দেবে ১৪৯ কোটি টাকা। আর বিএসআরএম স্টিল লভ্যাংশবাবদ গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের দেবে ১৮৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে দুই কোম্পানি মিলে শেয়ারধারীদের মধ্যে লভ্যাংশবাবদ বিতরণ করবে ৩৩৭ কোটি টাকা।
ডিএসইর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, হাজার কোটি টাকার বেশি রেকর্ড মুনাফার পর কোম্পানি দুটির মধ্যে একটি কোম্পানি শেয়ারধারীদের জন্য রেকর্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। বিএসআরএম স্টিল সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল ২০২১ সালে। ডিএসইর ওয়েবসাইটে ২০০৯ সাল থেকে কোম্পানিটির লভ্যাংশের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে কখনোই বিএসআরএম স্টিল শেয়ারধারীদের ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়নি। তবে বিএসআরএম লিমিটেড ২০২১ সালে শেয়ারধারীদের ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০২১ সালের পর এ বছর আবারও শেয়ারধারীদের ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি।
জানতে চাইলে বিএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরজুড়ে আমরা উৎপাদন খরচ কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। পাশাপাশি বিক্রিও বেড়েছে। এই দুই উদ্যোগের ফলে বছর শেষে কোম্পানি দুটি রেকর্ড মুনাফা করেছে। এর আগে কখনো এই দুই কোম্পানির সম্মিলিত মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি।’
এদিকে গত অর্থবছরে রেকর্ড মুনাফার পর বিএসআরএম গ্রুপ ২০০ কোটি টাকা নতুন বিনিয়োগেরও ঘোষণা দিয়েছে। গত শনিবার কোম্পানিটির পর্ষদ সভায় বিনিয়োগের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানিটি গতকাল ডিএসইর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে, বিএসআরএম ওয়্যারস লিমিটেড নামে নতুন কোম্পানির মাধ্যমে এই বিনিয়োগ করা হবে। এই বিনিয়োগের বিপরীতে নতুন কোম্পানির শেয়ারের মালিকানা পাবে বিএসআরএম লিমিটেড। দীর্ঘমেয়াদি মূল্য সংযোজনের লক্ষ্যে কৌশলগত এই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটি। এই বিনিয়োগে গঠিত কোম্পানিটি উচ্চমানের তারজাতীয় পণ্য উৎপাদন করবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসআরএম ল ম ট ড ব এসআরএম স ট ল র কর ড ম ন ফ এই ব ন য় গ র জন য বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
দুই কার্যদিবস পর সূচকের উত্থান
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গত ২ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হলেও তা আজ বেড়েছে।
এদিন আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কমলেও সিএসইতে বেড়েছে। তবে পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৬.১৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৯৫০ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০.৩২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৯ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১০.৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে মোট ৩৮৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ২৮৫টি কোম্পানির, কমেছে ৫৬টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৭টির।
এদিন ডিএসইতে মোট ৩৭৯ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ০.৮৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৫৩৬ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১.৯২ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৮৫০ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৩.৬০ পয়েন্ট বেড়ে ৮৭৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১৩.৮২ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ২৯০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ১৬৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৮৭টি কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮টির।
সিএসইতে ১২ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
ঢাকা/এনটি/এসবি