১৪৫ কোটি টাকা আয় বৃদ্ধির পরও যে কারণে কমল অ্যাপেক্সের মুনাফা
Published: 24th, April 2025 GMT
দেশীয় জুতা প্রস্তুত ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের আয় বাড়লেও মুনাফা কমে গেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটি ৫৪০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩৯৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় ১৪৫ কোটি টাকা বা প্রায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
আয় বাড়লেও কোম্পানিটির মুনাফা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ৫৪০ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার মুনাফা করেছে ৯৭ লাখ টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ৩৯৫ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে মুনাফা করেছিল ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে অ্যাপেক্সের মুনাফা ৬৬ লাখ টাকা বা ৪০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। কোম্পানিটির তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে।
কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি যে ব্যবসা করেছে, তার বিপরীতে উৎপাদন খরচ, প্রশাসনিক ও বিপণন ব্যয় বাদ দেওয়ার পর পরিচালনা মুনাফা দাঁড়ায় ২৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা ৭ কোটি টাকা বা ৩৯ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু কর বাবদ খরচ বেড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত প্রকৃত মুনাফা কমে যায়। গত বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির কর বাবদ খরচ ছিল প্রায় ৩ কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ কোটি টাকায়। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির কর বাবদ খরচ বেড়েছে ৬ কোটি টাকা বা ২০০ শতাংশ। এ কারণে মুনাফা ৪০ শতাংশ কমে গেছে।
কোম্পানিটিও মুনাফা কমে যাওয়ার জন্য কর বাবদ খরচ বেড়ে যাওয়াকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি গত বছরের শেষার্ধে ক্রেতাদের কাছ থেকে রপ্তানি করা জুতার অর্থ হাতে পেয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানির বিপরীতে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া নগদ সহায়তার এক বছরের পুরোনো পাওনার একটি অংশও এ সময় কোম্পানির হিসাবে জমা হয়। দুই খাত থেকে এই প্রান্তিকে নগদ অর্থ পেয়েছে কোম্পানিটি। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরও তার বিপরীতে কর কেটে নিয়েছে। এ কারণে হঠাৎ করে গত জানুয়ারি-মার্চে এসে কোম্পানির কর বাবদ খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়ে যায়। এ কারণে ভালো আয় করার পরও কোম্পানিটির মুনাফা কমে গেছে।
এদিকে মুনাফা কমে যাওয়ার খবরে আজ বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারেরও দরপতন হয়েছে। ঢাকার বাজারে এদিন লেনদেন শুরুর প্রথম পৌনে দুই ঘণ্টায় প্রতিটি শেয়ারের দাম ১১ টাকা ৬০ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ২০৭ টাকায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বছর র প রথম ত ন ম স বছর র প র গত বছর র এক বছর র র ব পর ত পর ম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।