দেশীয় জুতা প্রস্তুত ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের আয় বাড়লেও মুনাফা কমে গেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটি ৫৪০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩৯৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় ১৪৫ কোটি টাকা বা প্রায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।

আয় বাড়লেও কোম্পানিটির মুনাফা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ৫৪০ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার মুনাফা করেছে ৯৭ লাখ টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ৩৯৫ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে মুনাফা করেছিল ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে অ্যাপেক্সের মুনাফা ৬৬ লাখ টাকা বা ৪০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। কোম্পানিটির তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি যে ব্যবসা করেছে, তার বিপরীতে উৎপাদন খরচ, প্রশাসনিক ও বিপণন ব্যয় বাদ দেওয়ার পর পরিচালনা মুনাফা দাঁড়ায় ২৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা ৭ কোটি টাকা বা ৩৯ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু কর বাবদ খরচ বেড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত প্রকৃত মুনাফা কমে যায়। গত বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির কর বাবদ খরচ ছিল প্রায় ৩ কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ কোটি টাকায়। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির কর বাবদ খরচ বেড়েছে ৬ কোটি টাকা বা ২০০ শতাংশ। এ কারণে মুনাফা ৪০ শতাংশ কমে গেছে।

কোম্পানিটিও মুনাফা কমে যাওয়ার জন্য কর বাবদ খরচ বেড়ে যাওয়াকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি গত বছরের শেষার্ধে ক্রেতাদের কাছ থেকে রপ্তানি করা জুতার অর্থ হাতে পেয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানির বিপরীতে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া নগদ সহায়তার এক বছরের পুরোনো পাওনার একটি অংশও এ সময় কোম্পানির হিসাবে জমা হয়। দুই খাত থেকে এই প্রান্তিকে নগদ অর্থ পেয়েছে কোম্পানিটি। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরও তার বিপরীতে কর কেটে নিয়েছে। এ কারণে হঠাৎ করে গত জানুয়ারি-মার্চে এসে কোম্পানির কর বাবদ খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়ে যায়। এ কারণে ভালো আয় করার পরও কোম্পানিটির মুনাফা কমে গেছে।

এদিকে মুনাফা কমে যাওয়ার খবরে আজ বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারেরও দরপতন হয়েছে। ঢাকার বাজারে এদিন লেনদেন শুরুর প্রথম পৌনে দুই ঘণ্টায় প্রতিটি শেয়ারের দাম ১১ টাকা ৬০ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ২০৭ টাকায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর র প রথম ত ন ম স বছর র প র গত বছর র এক বছর র র ব পর ত পর ম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার পরিবারের ৭ সদস্যের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও সুলতান মাহমুদ।

আগামী ১১ ও ১৩ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ঠিক করা হয়েছে।

মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।

এর আগে গত ২০ জুলাই পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি এই আদালতে বদলি হয়।

দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় গত এপ্রিলে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। তিনটি মামলায় তাঁদের ছাড়াও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।

পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ