রেফারিদের বিরুদ্ধে রিয়ালের ‘যুদ্ধ ঘোষণা’, কোপার ফাইনালের আগে ধুন্ধুমার
Published: 26th, April 2025 GMT
স্পেনে রেফারিদের সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের বিরোধের ঘটনা অনেক দিনের। তবে আজকের কোপা দেল রে ফাইনালকে কেন্দ্র করে অতীতের সব নজির ছাপিয়ে রিয়াল-রেফারি উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে।
রিয়াল মাদ্রিদ তাদের নিজস্ব টিভি আরএমটিভির মাধ্যমে রেফারিদের বিরুদ্ধে প্রচারণা ও প্ররোচনার অভিযোগ, রিয়ালের পক্ষ থেকে রেফারিদের প্রত্যাহারের আবেদন ও ফাইনাল-পূর্ব সংবাদ সম্মেলন না করা এবং শেষ পর্যন্ত রিয়ালের ম্যাচ বয়কটের গুঞ্জন পর্যন্ত গড়িয়েছে ঘটনা। তবে শেষ খবর হচ্ছে, বার্সেলোনার বিপক্ষে সেভিয়ায় হতে যাওয়া কোপা দেল রে ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ থাকছে। ক্লাবটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ফাইনাল বয়কটের গুঞ্জন সঠিক নয়। রিয়াল মাদ্রিদ খেলবে।
কোপা দেল রে ফাইনালের ম্যাচ অফিশিয়ালস তালিকায় রেফারি হিসেবে রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়া ও ভিএআর হিসেবে পাবলো গঞ্জালেসের নাম দেখেই বিরক্ত হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এই দুই রেফারির অতীতের কিছু সিদ্ধান্ত রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে গিয়েছিল মনে করে ক্লাবটি। এরপর গতকাল দুই রেফারি সংবাদ সম্মেলন করে জানান, আরএমটিভি তাঁদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। যা তাদের পরিবারকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বেনগোচেয়া এ বিষয়ে বলেন, ‘যখন আপনার ছেলে স্কুলে যায় এবং লোকেরা তাকে বলে যে তার বাবা একজন ‘‘চোর’’, এটি সত্যিই ভয়ানক।’
আরএমটিভি কোপা দেল রে ফাইনালের রেফারিদের নিয়ে যে অনুষ্ঠান করেছে, সে দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘(ভিডিওতে যা বলা হয়েছে) তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সেই কথা পরিণাম কী দাঁড়াচ্ছে।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আর ভিএআর রেফারি গঞ্জালেস জানান, স্প্যানিশ রেফারিরা এ ধরনের ঘটনায় ভবিষ্যতে ব্যবস্থা নিতে পারে, ‘আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা এটা আর হতে দেব না। শিগগিরই আপনারা খবর পেতে পারেন। আমরা ইতিহাস তৈরি করতে যাচ্ছি। সন্দেহ নেই, আমরা যা সহ্য করে আসছি তা আর সহ্য করব না।।’
বিস্তারিত আসছে .
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিগ-বির মাধ্যমে জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ
এক দশক আগে বঙ্গোপসাগর ঘিরে বাংলাদেশের জন্য বিগ-বি নামে পরিচিত বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট গ্রহণ করেছিল জাপান। বঙ্গোপসাগরীয় শিল্প প্রবৃদ্ধির ওই উদ্যোগে রয়েছে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ প্রকল্প আর আধুনিক পরিবহনব্যবস্থার বিকাশ। মে মাসের শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরে বিগ–বির মাধ্যমে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। তাঁর জাপান সফরের আগে টোকিওতে ১৫ মে অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাপানের আলোচনায় কোন কোন বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
১৫ মে টোকিওতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং জাপানের জ্যেষ্ঠ উপমন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে কোন কোন বিষয়গুলো ১৫ মের আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পাবে, তা নিয়ে মতামত নেওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরসহ সচিব পর্যায়ের সফর নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিগ–বিতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি ব্যবসা, বিনিয়োগ, নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ খাতভিত্তিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফর নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, টোকিওতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকটি দুই ভাগে বিভক্ত থাকবে। প্রথম ভাগে থাকবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয়। আর দ্বিতীয় ভাগে থাকবে আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি।
আঞ্চলিক বিষয়াদিতে জাপানের বিগ–বি নিয়ে আলোচনা হবে। এ সময় ঢাকার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের বাস্তবতা তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে এ প্রকল্প সামনে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও বলা হবে। পরে ভারত যদি এর সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, তবে তার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হবে।
বিগ–বির সঙ্গে ২০২৩ সালে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করে জাপান। কিন্তু ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে চরম টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিগ–বিকে বিশেষ করে সংযুক্তিকে বাংলাদেশের পরিমণ্ডলে নেওয়ার পরিকল্পনায় আপাতত একটা ধাক্কা এসেছে। এ নিয়ে জাপান নানাভাবে নিজেদের অস্বস্তির বিষয়টি বাংলাদেশকে জানিয়েছে। বিগ–বি জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অগ্রাধিকার প্রস্তাব হওয়ায় এটিতে বিশেষ গুরুত্ব আছে টোকিওর। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আগ্রহী জাপান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টার টোকিও সফরে জাপান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কাছ থেকে সমরাস্ত্র বিক্রির ওপর কয়েক বছর ধরে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে জাপান।
বাংলাদেশকে ২০২৩ সালে জাপানের সরকারি নিরাপত্তা সহায়তায় (ওএসএ) যুক্ত করা হয়েছে। মূলত জাপান নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে এই কাঠামো তৈরি করেছে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করার এবং ওই দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা দিয়ে থাকে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান একটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ঋণের পরিবর্তে অনুদান দিয়ে থাকে।