পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শিক্ষা মানে শুধু ডিগ্রি অর্জন নয়। এটি সত্য, ন্যায় ও পরিবেশ রক্ষার প্রতি একটি গভীর দায়বদ্ধতা। শিক্ষা যেন কেবল উপার্জনের উপায় না হয়ে ওঠে; বরং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে সমাজ বদল, দেশ গড়া এবং অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর হাতিয়ার হতে হবে। শনিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীদের উচিত নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে যুক্ত হওয়া। যেকোনো অবস্থায় সবার উপরে ন্যায়বিচার ও দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। জলাশয় ও বনভূমি দখল ঠেকাতে হবে, সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে প্লাস্টিক দূষণ, শব্দদূষণ, বন উজাড় এবং জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নারী ও পরিবেশ রক্ষার সংগ্রাম একে-অপরের পরিপূরক। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপর্যয়ে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন, অথচ তারাই সবচেয়ে কম দায়ী। এই ন্যায়ের প্রশ্নেই জলবায়ু সংগ্রাম এক নারীবাদী আন্দোলন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরাই আগামীর নেতৃত্ব, তোমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তই এই পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই উন্নয়ন চাই, তবে সেটা যেন প্রকৃতির ওপর সর্বনাশ ডেকে না আনে। এসো, আমরা প্রকৃতিকে যতটা সম্ভব কম বিরক্ত করি। তবেই প্রকৃতি আমাদের ভালোবাসবে। শুধু চাকরি নয়, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য তোমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণায় পরিবেশবান্ধব সমাধান উদ্ভাবনে উৎসাহিত করেন। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহিলা্ ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ; সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স য দ র জওয ন হ স ন পর ব শ উপদ ষ ট পর ব শ জলব য়

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ