ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধাবস্থা বাংলাদেশের বাণিজ্যের জন্য উদ্বেগের
Published: 26th, April 2025 GMT
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমানের যুদ্ধ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য ভালো নয়। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য বড় শঙ্কার কারণ না হলেও উদ্বেগের। কেননা পরমাণু শক্তির অধিকারী দুটি দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থার সম্ভাব্য তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে।
শনিবার রাজধানীর চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) একটি মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রশ্নের উত্তরে তিনি এমন মত দেন। তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সার্ক দীর্ঘদিন ধরে তেমন সক্রিয় নয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সার্কের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তিনি আশা করেন, অতীতের মতো এবারও আলোচনার মাধ্যেম সংকট এড়ানো যাবে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশ বড় অংকের পণ্য আমদানি করে। সে দেশে আমদানির তুলনায় রপ্তানি কম। ভারতের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ। সে দেশে রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে বাংলাদেশের ৪০ বছর লেগেছিল। পরের ৭ বছরে দুই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত যদি সামরিক খাতে বেশি মনোযোগী হয়, তাহলে তাদের বাণিজ্য প্রভাবিত হতে পারে, যার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরেও পড়তে পারে।
তিনি বলেন, বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি শেষ কথা নয়। বিনিয়োগ আনতে হলে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি মনে করেন, কোনো কারণে নির্বাচন বিলম্বিত হলে তা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে।
‘সাম্প্রতিক বিনিয়োগ সম্মেলন বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে’ বিষয়ে ছায়া সংসদ নামের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকা ইডেন কলেজের দল জয়ী হন। সরকারি দলে ছিলেন ঢাকা কলেজের বিতার্কিকরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উদ ব গ
এছাড়াও পড়ুন:
জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।
হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।