পলিতে ফেনী নদীর গতিপথ পরিবর্তন, চরের বাঁধে ভাঙন
Published: 26th, April 2025 GMT
মিরসরাইয়ে ফেনী নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রকল্পের (সিডিএসপি) বাঁধ। ভাটি এলাকায় পলি মাটি জমে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ এবং ওচমানপুর ও ইছাখালী ইউনিয়নের শত শত মাছের খামার। পুরোদমে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে বাঁধের ভাঙন রোধ করা না গেলে ফসলি কৃষিজমি ও মৎস্য খামারে লবণ পানি ঢুকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন স্থানীয়রা।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অলক দাশ বলেন, ‘সিডিএসপি বাঁধের ভাঙনের কথা শুনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা স্থান পরিদর্শন করেছেন। ভাঙন রোধে অল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সরেজমিন দেখা যায়, ফেনী নদীয় ওপর তৈরি মুহুরী সেচ প্রকল্পের দুই কিলোমিটার দক্ষিণে প্রায় ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে সিডিএসপি বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও বাঁধের অর্ধেকের বেশি অংশ নদীতে তলিয়ে গেছে। কোথাও হয়েছে বড় ফাটল। বাঁধের পূর্ব পাশঘেঁষে রয়েছে শত শত মৎস্য খামার প্রকল্প। বাঁধে ভাঙনের কারণে প্রকল্প মালিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা।
স্থানীয় লোকজনের মতে, মুহুরী সেচ প্রকল্পের ভাটিতে প্রায় ১,১০০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে পলি মাটির স্তর জমেছে। এতে নদীর প্রবাহ পথ বদলে সোনাগাজীর থাক খোয়াজের লামছিতে ছোট ছোট চর জেগে উঠছে। অপরদিকে মিরসরাই অংশের উত্তর ইছাখালী অংশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সময় ভাঙন রোধে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে সিসি ব্লক দেওয়া হলেও সেগুলো নদীতে চলে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সিডিএসপি বাঁধের পশ্চিম পাশে সুরক্ষা ব্লক না বসালে চলতি বর্ষায় এখানকার বাঁধ ভেঙে ওসমানপুর ও ইছাখালী ইউনিয়নের কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
জানা গেছে, চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রকল্পের (সিডিএসপি) আওতায় মিরসরাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা বঙ্গোপসাগরের ভাঙন থেকে রক্ষা করতে ১৯৯৪ সালে ১১.
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরে ফেনী, সোনাগাজী ও মিরসরাই এলাকাকে বন্যা ও ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় ফেনী নদীর ওপর স্লুইসগেট দিয়ে মুহুরী সেচ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সেচ প্রকল্পের কারণে ফেনী নদীর ভাটি এলাকার বিশাল অংশজুড়ে পলি জমায় মুহুরী সেচ প্রকল্প কার্যকারিতাও প্রায় হারাতে বসেছে। এতে চট্টগ্রাম ও ফেনী সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর স্বাভাবিক গতিও বদলে গেছে। ফলে ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে সিডিএসপি বাঁধ। অথচ এই বাঁধ দেওয়ার পর এখানকার মানুষ আশায় বুক বাঁধে। গড়ে তুলেন শত শত মৎস্য প্রকল্প। কিন্তু সিডিএসপির বাঁধে ভাঙনের ফলে তারা এখন দিশেহারা। ভাঙনের তীব্রতার কারণে অনেকেই মৎস্য চাষ বন্ধ রেখেছেন।
ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ভাঙনের কবলে পড়ে বাড়ি ভিটে, কৃষিজমি ও শত শত মৎস্য প্রকল্প নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। ভাঙনের স্বল্প দূরত্বে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজও কিছুটা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালের আগস্টে সিডিএসপি বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে নদীতে বিলীন হয়। তখন ভাঙা অংশে নদীর প্রবাহ অন্যদিক দিয়ে ঘুরিয়ে বাঁধ নতুন করে নির্মাণ করা হয়।
মিরসরাইয়ের ইছাখালী টেকেরহাট এলাকার মৎস্য চাষি নুরুল মোস্তফা, নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সিডিএসপি বাঁধ ঘেঁষে পূর্ব পাশে আমাদের ৮৯ একর আয়তনের মৎস্য প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা আপাতত প্রকল্পগুলোয় মাছ চাষ বন্ধ রেখেছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, ‘ভাঙনের বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। দ্রুত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধের ভাঙন রোধে কাজ শুরু করবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মৎস য প রকল প স চ প রকল প প রকল প র ব ল ন হয় স ড এসপ ম রসর ই শত শত ম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বিএমএল প্রতিনিধি দলের সৌজন্য সাক্ষাৎ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএলের প্রতিনিধি দল। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএমএলের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতি নাসিম খান। প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব রেজওয়ান মর্তুজা ও যুগ্ম মহাসচিব সাকিব খান।
সাক্ষাতের সময় প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে। এ সময় দলটির পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।