দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত: ‘আমাগে বাড়ি উঠতি দেচ্ছে না, জমির ধান কাইটে নিয়ে গেছে’
Published: 27th, April 2025 GMT
‘১৫ দিন আগে গ্রামে দুই পক্ষ মারামারি করিছে। এতে আমাদের প্রতিপক্ষের একজন মারা যায়। সেদিন রাতেই এক দফা আমাদের বাড়িতে হামলা করে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে প্রতিপক্ষ। এরপর গত শুক্রবার রাতে আবার হামলা চালিয়ে আমাদের দুটি পাকা ঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। আমাগে বাড়ি উঠতে দেচ্ছে না, জমির ধান কাইটে নিয়ে গেছে। সন্তানদের নিয়ে সারা বছর খাব কী?’
গতকাল শনিবার দুপুরে কথাগুলো বলছিলেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা–হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের কামরুল কাজীর স্ত্রী জোসনা বেগম।
১১ এপ্রিল কাঞ্চনপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মিলন মোল্যা পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান পিকুল শেখ ও আফতাব মোল্যা পক্ষের লোকজন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে পিকুল পক্ষের ফরিদ মোল্যা (৫০) নিহত হন। এরপর ওই দিন রাতেই প্রতিপক্ষ মিলন মোল্যা পক্ষের বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি বাড়ি জোসনা বেগমের।
জোসনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী একসময় গ্রামের দলাদলি করতেন। কিন্তু দুর্ঘটনায় পঙ্গু হওয়ার পর লাঠি ভর দেওয়া ছাড়া চলাচল করতে পারেন না; উনি কী করে মারামারি করবেন। অথচ আমাদের ওপরই বেশি অত্যাচার করা হচ্ছে।’
জোসনা বেগমের অভিযোগ, ‘পিকুল পক্ষের একজন নিহতের পর আমাদের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে তারা। আমাদের পক্ষের লোকজনকে আসামি করে মামলা করা হয়। এর পর থেকে গত ১৫ দিন আমরা ঘরবাড়ি ছাড়া। আশপাশের এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি, কেউ বাড়ি উঠতে পারছি না। সেই সুযোগে পিকুলদের লোকজন এখনো আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করছে। মাঠভর্তি আমাদের পাকা ধান কাটতে দেচ্ছে না। তারা মাইকিং করে ঘোষণা দিয়েছে যে ধান কাটতে গেলে আমাদের দেখে নেওয়া হবে।’
বাবরা–হাচলা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হুমায়ুন মোল্যা বলেন, ‘মারামারিতে পিকুলদের একজন মারা গেছে। সে ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত হবে, আইন–আদালতে বিচার হবে। কিন্তু আমাদের ওরা বাড়ি উঠতে দিচ্ছে না। আমাদের ধান আমাদের কাটতে দিচ্ছে না। ইতিমধ্যে রাতের আঁধারে ওরা আমার ৪০ শতাংশ জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে। আমাদের আরও অনেকের ধান কেটে নিয়ে গেছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
রাতের আঁধারে এই জমি থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন ধান কেটে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেন জোসনা বেগম। গতকাল দুপুরে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুরে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ নেওয়ার সময় কিংবা ছক্কা ঠেকাতে গিয়ে অনেক সময় শরীরের ভারসাম্য থাকে না। ফিল্ডাররা তাই বাধ্য হয়েই একটি কৌশল অবলম্বন করেন।
বলটি ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানা পেরিয়ে যান। বাউন্ডারি সীমানার বাইরে থাকতেই লাফ দিয়ে বলটি হাতের ধাক্কায় আবারও ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান এবং তারপর ক্যাচটি নেন কিংবা ছক্কা বাঁচান। এই কাজ করতে গিয়ে কেউ কেউ বাউন্ডারি সীমানার বাইরে একাধিকবার শূন্যে লাফিয়েও বল হাত দিয়ে স্পর্শ করেন।
ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) নতুন নিয়ম অনুযায়ী এভাবে ক্যাচ নেওয়া কিংবা ছক্কা বাঁচানো আর বৈধ থাকছে না।
আরও পড়ুনস্বপ্ন পূরণ হতে ৬৯ রান দরকার, এবার কি পারবে ‘চিরকালের চোকার’ দক্ষিণ আফ্রিকা১০ ঘণ্টা আগেইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ দিকে নতুন এ নিয়ম কার্যকরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে। আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনে নিয়মটি সংযুক্ত হবে চলতি মাসেই। এরপর এমসিসির বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত হবে আগামী বছরের অক্টোবরে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একজন ফিল্ডার বাউন্ডারি সীমানার বাইরে লাফিয়ে শুধু একবারই বল স্পর্শ করতে পারবেন। এরপর সীমানার ভেতরে ঢুকে তাঁকে ক্যাচ নিতে হবে। ২০২৩ সালে বিগ ব্যাশে সিডনি সিক্সার্সের জর্ডান সিল্কের ক্যাচ বাউন্ডারি সীমানার বাইরে (লাফিয়ে) দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান ব্রিসবেন হিটের মাইকেল নেসের। শূন্যে লাফিয়ে বলটি দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে তিনি সীমানার বাইরেই পা রাখেন এবং দৌড়ে ভেতরে ঢুকে ক্যাচটি নেন। এমসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী এমন ক্যাচ আর আইনসিদ্ধ হবে না।
নেসের সেই ক্যাচ নেওয়ার পর ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, ২০২০ বিগ ব্যাশে ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচ অনেকটা এভাবেই নিয়েছিলেন ম্যাট রেনশ—যেখান থেকে তিনি ওভাবে ক্যাচটি নেওয়ার প্রেরণা পান। সে সময় দুটি ক্যাচের বৈধতা নিয়েই বিতর্ক হয়েছিল। তখন অনেকেই বলেছিলেন, বাউন্ডারি সীমানার ক্যাচের নিয়ম পাল্টানো হোক, যেটা সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১০ সালে।
আরও পড়ুনম্যাক্সওয়েল, ক্লাসেন, পুরান—জাতীয় দল ছাড়তেই ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের অধিনায়ক১২ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের শুরুতে ক্যাচ নেওয়ার প্রশ্নবিদ্ধ এই নিয়ম পুনরায় যাচাইয়ের জন্য এমসিসি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিল আইসিসির ক্রিকেট কমিটি। এরপর দুই পক্ষই এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে এবার সেটি হালনাগাদ করল। এ বিষয়ে এমসিসির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা প্রতিটি সদস্যদেশের বোর্ডের কাছে পাঠিয়েছে আইসিসি। সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমান নিয়মের অধীন ‘অসাধারণ’ ফিল্ডিং দেখা গেলেও সেটা ‘অস্বাভাবিক কিছু ক্যাচেরও জন্ম দিয়েছে, যা সিংহভাগ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের চোখে অবৈধ’।
নেসেরের ক্যাচের উদাহরণ টেনে এমসিসি বলেছে, ব্রিসবেন হিটের এই ফিল্ডার সীমানার ‘ভেতরে’ ক্যাচটি নেওয়া সম্পন্ন করার আগে ‘বানি হপড’ (ছোট্ট লাফ) করেছেন। ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘এমসিসি নতুন আইন করেছে, যেখানে সীমানার বাইরে “বানি হপড” পুরোপুরি নির্মূল করা হয়েছে। তবে এসব ক্যাচে ফিল্ডার সীমানার ভেতরে থেকে বল শূন্যে ছুড়ে দিয়ে বাইরে পা রাখার পর ক্যাচটি ধরতে ডাইভ দিয়ে ফিরতে পারবেন। আমাদের সমাধান হলো, সীমানার বাইরে চলে যাওয়া ফিল্ডারকে শূন্যে থাকতে একবারই বল স্পর্শ করতে দেওয়ার সীমারেখা বেঁধে দেওয়া এবং তারপর ডেলিভারিটির বাকি সময় সম্পন্ন করতে সীমানার ভেতরে থাকতে হবে।’
রিলে অর্থাৎ একাধিক ফিল্ডার মিলে ক্যাচের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। বাউন্ডারি সীমানার বাইরে বল স্পর্শ করা ফিল্ডারকে সীমানার ভেতরে ফিরতে হবে তাঁর সতীর্থ ক্যাচ নিলেও।
১৭ জুন শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মধ্যকার গল টেস্ট দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র। এই ম্যাচের সঙ্গে আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনও হালনাগাদ করা হবে। নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে আগামী বছরের অক্টোবর থেকে।