‘১৫ দিন আগে গ্রামে দুই পক্ষ মারামারি করিছে। এতে আমাদের প্রতিপক্ষের একজন মারা যায়। সেদিন রাতেই এক দফা আমাদের বাড়িতে হামলা করে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে প্রতিপক্ষ। এরপর গত শুক্রবার রাতে আবার হামলা চালিয়ে আমাদের দুটি পাকা ঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। আমাগে বাড়ি উঠতে দেচ্ছে না, জমির ধান কাইটে নিয়ে গেছে। সন্তানদের নিয়ে সারা বছর খাব কী?’

গতকাল শনিবার দুপুরে কথাগুলো বলছিলেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা–হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের কামরুল কাজীর স্ত্রী জোসনা বেগম।

১১ এপ্রিল কাঞ্চনপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মিলন মোল্যা পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান পিকুল শেখ ও আফতাব মোল্যা পক্ষের লোকজন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে পিকুল পক্ষের ফরিদ মোল্যা (৫০) নিহত হন। এরপর ওই দিন রাতেই প্রতিপক্ষ মিলন মোল্যা পক্ষের বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি বাড়ি জোসনা বেগমের।

জোসনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী একসময় গ্রামের দলাদলি করতেন। কিন্তু দুর্ঘটনায় পঙ্গু হওয়ার পর লাঠি ভর দেওয়া ছাড়া চলাচল করতে পারেন না; উনি কী করে মারামারি করবেন। অথচ আমাদের ওপরই বেশি অত্যাচার করা হচ্ছে।’

জোসনা বেগমের অভিযোগ, ‘পিকুল পক্ষের একজন নিহতের পর আমাদের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে তারা। আমাদের পক্ষের লোকজনকে আসামি করে মামলা করা হয়। এর পর থেকে গত ১৫ দিন আমরা ঘরবাড়ি ছাড়া। আশপাশের এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি, কেউ বাড়ি উঠতে পারছি না। সেই সুযোগে পিকুলদের লোকজন এখনো আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করছে। মাঠভর্তি আমাদের পাকা ধান কাটতে দেচ্ছে না। তারা মাইকিং করে ঘোষণা দিয়েছে যে ধান কাটতে গেলে আমাদের দেখে নেওয়া হবে।’

বাবরা–হাচলা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হুমায়ুন মোল্যা বলেন, ‘মারামারিতে পিকুলদের একজন মারা গেছে। সে ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত হবে, আইন–আদালতে বিচার হবে। কিন্তু আমাদের ওরা বাড়ি উঠতে দিচ্ছে না। আমাদের ধান আমাদের কাটতে দিচ্ছে না। ইতিমধ্যে রাতের আঁধারে ওরা আমার ৪০ শতাংশ জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে। আমাদের আরও অনেকের ধান কেটে নিয়ে গেছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

রাতের আঁধারে এই জমি থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন ধান কেটে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেন জোসনা বেগম। গতকাল দুপুরে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুরে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার