জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তীব্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে মাটি ও পানিতে লবণাক্ততার বৃদ্ধি পাওয়ায় বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষকদের। এই সংকটে মোকাবিলায় রোববার দুপুরে টেকনাফ সাবরাং খারিয়াখালি উপকূল অঞ্চলে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় ও ইপসা’র আয়োজনে কৃষকদের নিয়ে ‘কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী ও সচেতনতামূলক’ একটি উঠান বৈঠক হয়েছে।

এতে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম এবং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও সাবরাং ইউপির প্রশাসক মো.

দেলোয়ার হোসেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহসিন খান, ইপসার প্রকল্প সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাশেদুল করিম, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল টিও সেলিম উল্লাহ, লাইলিহুড স্পেশিয়ালিস্ট এবং বদরুজ্জামানসহ অনেকে। এসময় উপস্থিত ৫০ জন কৃষক-কৃষাণীকে এক সেট সেক্স ফেরোমন ট্র্যাপ এবং ইয়েলো কার্ড বিতরণ করা হয়।

ইপসার প্রকল্প সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাশেদুল করিম বলেন, মালচিং হলো কৃষি বা বাগানের একটি পদ্ধতি। যেখানে গাছের গোড়ার মাটির ওপর শুকনো পাতা, খড়, মালচিং পেপার, কাঠের গুঁড়া ইত্যাদি ঢেকে রাখা হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু প্রভাবে উপকূলী এই অঞ্চলের কৃষকদের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। তাই কীভাবে প্রযুক্তিসহ মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে চাষাবাদ বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে কৃষকদের সঙ্গে উঠান বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওসমান গণি নামে একজন কৃষক লবণাক্ততা এলাকায় একটি জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে ঝিংগা চাষের বাগান করেছে। এতে সেই লাভবানও হয়েছে। ফলে অনেক কৃষক এ মালচিং পদ্ধতি চাষ করতে আগ্রহ হয়েছে।

তিনি বলেন, মালচিং ব্যবহারে মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখা সহজ হয়। এ পদ্ধতির ফলে জনবল-খরচ অনেকটা কমানো যায়। যা কৃষকরাও লাভবান হয়। পাশাপাশি এই প্রযুক্তি প্রয়োগ ও ব্যবহার করে অল্প পরিশ্রমে, কম খরচে ও বিষমুক্ত দ্বিগুণ পরিমাণ ফসল উৎপাদন করেত পারবেন। এতে করে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন তেমনিভাবে দেশের কৃষি খাত আরও শক্তিশালী হবে।  

চাষি ওসমান গনি বলেন, মালচিং দেওয়া ১৪টি বেডে ৩০ বার সেচ দেওয়া হয়েছে। মালচিং ছাড়া ৬টি বেডে ৮০ বার সেচ দেওয়া হয়েছে। এ মালচিং পদ্ধতিতে ঝিংগা চাষ করেছি। এতে আমার জনবল-ব্যয় কম হয়েছে। যার ফলে লাভবানও হয়েছি। আমার ঝিংগা চাষ করতে ৮-১০ হাজার খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৫ হাজার টাকা ঝিংগা বিক্রি করেছি। জমিতে আরও অনেক ঝিংগা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও সাবরাং ইউপির প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই উপকূল এলাকায় ৬৩ হাজার বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে ৫০জন কৃষককে নিয়ে মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার জন্য ওই এনজিওদের আমি ধন্যবাদ জানাই। আগামীতে কৃষকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানান তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট কন ফ কর মকর ত ক ষকদ র উপক ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি নেতাকে মারধর: খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি কারাগারে

খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল আলমের করা মামলায় সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন হাসান আল মামুন। খুলনা মহানগর দায়রা জজ মো. শরীফ হোসেন হায়দার তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে আদালত চত্বরে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা মামুনকে লক্ষ্য করে ডিম ও পচা আম নিক্ষেপ করেন। তার শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। পরে নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন সেনা সদস্যরা। 

মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ কে এম শহিদুল আলম বলেন, মামলাটিতে উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন হাসান আল মামুন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে রোববার খুলনা মহানগর দায়রা জজ  আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। আমরা জামিনের বিরোধিতা করি। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় তৎকালীন ওসি মামুন নিজেই
ফখরুল আলমকে বেদম মারধর করেন। লাঠির আঘাতে ফখরুল আলমের একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট মামুনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা করেন ফখরুল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ