জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তীব্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে মাটি ও পানিতে লবণাক্ততার বৃদ্ধি পাওয়ায় বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষকদের। এই সংকটে মোকাবিলায় রোববার দুপুরে টেকনাফ সাবরাং খারিয়াখালি উপকূল অঞ্চলে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় ও ইপসা’র আয়োজনে কৃষকদের নিয়ে ‘কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী ও সচেতনতামূলক’ একটি উঠান বৈঠক হয়েছে।
এতে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম এবং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও সাবরাং ইউপির প্রশাসক মো.
ইপসার প্রকল্প সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাশেদুল করিম বলেন, মালচিং হলো কৃষি বা বাগানের একটি পদ্ধতি। যেখানে গাছের গোড়ার মাটির ওপর শুকনো পাতা, খড়, মালচিং পেপার, কাঠের গুঁড়া ইত্যাদি ঢেকে রাখা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু প্রভাবে উপকূলী এই অঞ্চলের কৃষকদের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। তাই কীভাবে প্রযুক্তিসহ মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে চাষাবাদ বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে কৃষকদের সঙ্গে উঠান বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওসমান গণি নামে একজন কৃষক লবণাক্ততা এলাকায় একটি জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে ঝিংগা চাষের বাগান করেছে। এতে সেই লাভবানও হয়েছে। ফলে অনেক কৃষক এ মালচিং পদ্ধতি চাষ করতে আগ্রহ হয়েছে।
তিনি বলেন, মালচিং ব্যবহারে মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখা সহজ হয়। এ পদ্ধতির ফলে জনবল-খরচ অনেকটা কমানো যায়। যা কৃষকরাও লাভবান হয়। পাশাপাশি এই প্রযুক্তি প্রয়োগ ও ব্যবহার করে অল্প পরিশ্রমে, কম খরচে ও বিষমুক্ত দ্বিগুণ পরিমাণ ফসল উৎপাদন করেত পারবেন। এতে করে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন তেমনিভাবে দেশের কৃষি খাত আরও শক্তিশালী হবে।
চাষি ওসমান গনি বলেন, মালচিং দেওয়া ১৪টি বেডে ৩০ বার সেচ দেওয়া হয়েছে। মালচিং ছাড়া ৬টি বেডে ৮০ বার সেচ দেওয়া হয়েছে। এ মালচিং পদ্ধতিতে ঝিংগা চাষ করেছি। এতে আমার জনবল-ব্যয় কম হয়েছে। যার ফলে লাভবানও হয়েছি। আমার ঝিংগা চাষ করতে ৮-১০ হাজার খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৫ হাজার টাকা ঝিংগা বিক্রি করেছি। জমিতে আরও অনেক ঝিংগা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও সাবরাং ইউপির প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই উপকূল এলাকায় ৬৩ হাজার বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে ৫০জন কৃষককে নিয়ে মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার জন্য ওই এনজিওদের আমি ধন্যবাদ জানাই। আগামীতে কৃষকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানান তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ট কন ফ কর মকর ত ক ষকদ র উপক ল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫