চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠনের সদস্য ফরম পূরণ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম মো. সোলাইমান ওরফে বাঁশি (৫৫)। তিনি সাতকানিয়ার বাজালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। তাঁর বিরুদ্ধে বিএনপি, জামায়াত ও এলডিপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ভোটকেন্দ্র দখল, এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধীদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার উত্তর সাতকানিয়া সাঙ্গু সাংগঠনিক থানা জামায়াতের আওতাধীন বাজালিয়া ইউনিয়নে গণসংযোগ চলাকালে জামায়াতের এক দায়িত্বশীল নেতা মো.

সোলাইমানকে জামায়াতের সহযোগী সংগঠনের সদস্য ফরম পূরণ করান। গত রোববার রাত ও গতকাল সোমবার ফেসবুকে ওই ছবি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে নানা মন্তব্য দেখা যায়।

ফেসবুকে মোহাম্মদ আরিফ নামের একজন লিখেছেন, ‘খুনি হাসিনার দোসরদের পুনর্বাসন করা মানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা।’ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধোপাছড়ি নামের একটি পেজে লেখা হয়, ‘কোনো ডেভিল যেন আমাদের দলে ঢুকে দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে।’ অন্যদিকে মোরশেদ আলম নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া যায় না? কেউ ভুল বুঝে সঠিক পথে আসতে চাইলে ক্ষতি কী?’

বিষয়টি নিয়ে বাজালিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাসুকুর রহমান ও সেক্রেটারি ইসমাইল মো. রাশেদ নিজ ফেসবুক আইডিতে দুঃখ প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে মো. সোলাইমানের সঙ্গে গতকাল রাতে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরলেও সাংবাদিক পরিচয় জানার পর মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বাজালিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি ইসমাইল মো. রাশেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভুলক্রমে অন্য এলাকার এক নেতা তাঁকে চিনতে না পেরে ফরম পূরণ করান। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, তাঁদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ সব ক আওয় ম ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ