রাষ্ট্র ও পুলিশ নয়, আমাকে হয়রানি করিয়েছে কাছের বন্ধুরা: জয়
Published: 29th, April 2025 GMT
অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়ের বিরুদ্ধে জুলাই আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মামলা হয়েছিল। সেসময়ের অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন অভিনেতা যখন ইরেশ জাকেরের বিরুদ্ধে মামলা হলো। জয় বলেন, অভিনেতা ইরেশ যাকের এর নামে মামলা দেওয়ায় সমস্ত শিল্পী সমাজের সাথে আমিও তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
আজ থেকে আট মাস আগে আমার বিরুদ্ধেও এরকম একটি হয়রানি মূলক মামলা হয়েছিল। একমাত্র আশফাক নিপুন ছাড়া আর কাউকে পাশে পাইনি। বরং বাদ পড়েছি বিভিন্ন কাজ থেকে। আমেরিকায় শো করতে গিয়েও দুই একজন অতি উৎসাহী কলিগের কারণে মঞ্চে উঠাতো দূরের কথা আমাকে হোটেল থেকেও বের হতে দেয়নি।
সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরলেন কিভাবে তিনি সামাজিক মাধ্যমে হেনস্থা হয়েছেন। অভিনেতা বলেন, মামলার কারণে সামাজিকভাবে হেনস্থা হয়েছি। অনেক অতি উৎসাহী আত্মীয় আত্মীয়তা ভঙ্গ করেছে। অনেক কলিগ ফোনও ধরেনি।
যোগাযোগ করেনি। শুনেছি আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিল সেই বাদী এখন থানায় আটক আছে। বিভিন্ন জনের নামে মামলা দিয়ে টাকা খাওয়ার অপরাধে। আমার বিরুদ্ধে পুলিশ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে আমার কোন সম্পৃক্ততা পায়নি এবং আমাকে পুলিশ এবং রাষ্ট্র কোনও হয়রানি করে নি। বরং হয়রানি করিয়েছে আমার পরিচিত কাছের স্বজনেরা। এবং চিরকালের বন্ধুরা।
তিনি বলেন, যাক আমি কারো প্রতি দোষারোপ করছি না। সকলকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমার নিজের ছোটখাটো ভুলের জন্য বারবার ক্ষমা চেয়েছি। বড় অপরাধী এবং অপরাধকে ছোট করে ফেলে এই ধরনের মামলা । যেখানে এমন একজন সেলিব্রেটির নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয় যে মামলার চেয়ে সেলিব্রেটিকে নিয়ে চর্চা হয় বেশি। তখন আসল অপরাধীরা মুচকি হাসে। মামলাটাকে হাস্যকর মনে করে। এতে বিচার প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়।
এই অভিনেতা বলেন, আমরা চাই অপরাধীর বিচার হোক।যে যার জায়গা থেকে নতুন বাংলাদেশে ভুল সংশোধন করে নতুন করে বাচুক। সকলে সকলের প্রতি সহানুভূতিশীল হোক। ছবিটিতে আমার অটিস্টিক বেবি আযানের সাথে আমি। অনেকের চোখে আমি খারাপ মানুষ হলেও আমার সন্তানের কাছে আমি সেরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।