অভিযোগের বিষয়ে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি’র বক্তব্য
Published: 29th, April 2025 GMT
সম্প্রতি এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি এবং এর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানসমূহ ও পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির গ্রুপ চেয়ারপারসন সারা যাকের সই করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়, অভিযোগগুলোর একটিও এশিয়াটিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, সততা, স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি। সম্প্রতি, একটি স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি এবং এর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানসমূহ ও পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের সম্পৃক্ত করে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল ও বানোয়াট তথ্যের ভিত্তিতে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে: সোনার পদকে ভেজাল, সিআরআই কানেকশন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিব বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজনে দুর্নীতি, জয় বাংলা কনসার্টের আয়োজন ও বিজ্ঞাপনের বাজার দখল। উল্লেখ্য, এর একটি অভিযোগও এশিয়াটিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
এশিয়াটিক জানায়, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, শিল্প-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক ও সংগঠনকে সম্মাননা দিতে যে সোনার ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছিল, তা সরবরাহ করেছিল অন্য একটি প্রতিষ্ঠান—অথচ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এশিয়াটিকের নামে। এ আয়োজনে এশিয়াটিক শুধুমাত্র ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সিআরআই -এর সঙ্গে ইরেশ যাকের কিংবা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি’র কোনো অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পর্ক কোনদিনই ছিল না, বর্তমানেও নেই।
বিবৃতিতে মুজিব বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের বিষয়ে বলা হয়, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিব বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান সরকারি ক্রয় দরপত্র আহ্বানের আওতায় অনুষ্ঠিত হয়। এক্ষেত্রে, যথাযথ দরপত্র পদ্ধতির অধীনে প্রাক-যোগ্যতা প্রক্রিয়া ও সর্বনিম্ন মূল্যায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে অনুষ্ঠান আয়োজনে দায়িত্ব দেয়া হয়। এশিয়াটিক শুধুমাত্র ইভেন্ট আয়োজন, সরঞ্জাম ও সংশ্লিষ্ট সেবা সরবরাহ করে। এক্ষেত্রেও, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।
বিজ্ঞাপন খাতে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির একচেটিয়া বাজার আধিপত্য নেই এমন দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, এশিয়াটিকের সকল বেসরকারি ও করপোরেট ক্লায়েন্টের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র পদ্ধতি রয়েছে; যেখানে বিভিন্ন মানদণ্ড পূরণের সাপেক্ষে নির্ধারিত হয় দরপত্র জমা দেয়া কোন প্রতিষ্ঠান কাজের জন্য উপযুক্ত। এশিয়াটিক সবসময় দরপত্র জমা দিয়ে এবং পিচে অংশগ্রহণ করে প্রয়োজনীয় সকল চুক্তি সম্পাদন করার মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে ক্লায়েন্টদের সেবা প্রদান করে আসছে। গ্লোবাল কমপ্লায়েন্স ও বায়িং এর বৈশ্বিকভাবে সেরা অনুশীলনী অনুসরণ করে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে এশিয়াটিক। এক্ষেত্রে, সর্বোচ্চ সততা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। বিজ্ঞাপন ও কমিউনিকেশনস খাতে সেবা প্রদানে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির একচেটিয়া বাজার আধিপত্য নেই। এ শিল্পখাতের বিভিন্ন সেবাখাতে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি অন্যান্য এজেন্সির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে যতগুলো জয় বাংলা কনসার্ট আয়োজিত হয়েছে, তা আয়োজন করেছে শীর্ষস্থানীয় অন্য দুটি প্রতিষ্ঠান (এজেন্সি)। এ কনসার্ট আয়োজনের সঙ্গে এশিয়াটিক ইভেন্টস বা এশিয়াটিকের কোনো অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এছাড়াও, উল্লেখ্য, এশিয়াটিক বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কিছু সংখ্যক অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব পেলেও, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রচারণা বা অনুষ্ঠান আয়োজনের সঙ্গে কখনওই সম্পৃক্ত ছিল না।
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দকরণ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) নির্দেশ সাপেক্ষে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির অধীনস্থ ১৭টি প্রতিষ্ঠান এবং এর পরিচালনা পর্ষদের ৬ জন পরিচালক ও ২ জন কর্মকর্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে কোনো প্রকার পূর্ব নোটিশ অথবা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি এশিয়াটিককে প্রদান করা হয়নি। যেহেতু, এক্ষেত্রে, অভিযোগের ব্যাপারে সংবাদে অথবা ব্যাংক হতে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগের উল্লেখ ছিল না, তাই এশিয়াটিকের ট্যাক্স ও লিগ্যাল টিম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সবিস্তারে জানার চেষ্টা করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমানে, এশিয়াটিকে ৭শ’র বেশি স্থায়ী কর্মী এবং দেশজুড়ে প্রায় চার হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মী রয়েছে। বিজ্ঞাপন নিয়ে এশিয়াটিকের কার্যক্রমের সাথে দেশের টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র, অনলাইন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম সম্পৃক্ত। এশিয়াটিকের কার্যক্রমে সাথে আরও সম্পৃক্ত রয়েছেন শিল্পী, সংগীতজ্ঞ ও কলা-কুশলীগণসহ বিভিন্ন পেশাখাতের মানুষ। এছাড়াও, সাউন্ড, লাইট, সেট নির্মাণ, প্রিন্ট মিডিয়া, ফটোগ্রাফিসহ অন্যান্য সেবাখাতের ও প্রযুক্তিগত পরিষেবা প্রদানকারী ৫শ’র অধিক সরবরাহকারী ও ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান এ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত। আকস্মিকভাবে এশিয়াটিকের প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাব জব্দ করার ফলে এ বিশাল কর্মযজ্ঞের সাথে জড়িত এশিয়াটিকের কর্মীগণ ও তাদের পরিবার এবং ৫শ’র অধিক সরবরাহকারী ও ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য অংশীজনদের চরম ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের সকল আইন ও বিধির প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল থেকে প্রায় ছয় দশক ধরে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি সুনামের সঙ্গে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশীয় বিজ্ঞাপন শিল্পের পুরোধা ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকেরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বহুমুখী এ প্রতিষ্ঠানটি ১৯৬৬ সালে বিজ্ঞাপন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে পরবর্তীতে এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউনিকেশনস লিমিটেডে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশে এশিয়াটিকই একমাত্র এজেন্সি গ্রুপ, যারা শুধুমাত্র মার্কেটিং কমিউনিকেশনস এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবাখাত নিয়েই কাজ করে এবং অন্য কোনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। এবং গত পাঁচ বছরে এশিয়াটিক ভ্যাট, কর ও অন্যান্য ফি হিসেবে জাতীয় কোষাগারে ৭৫০ কোটি টাকারও বেশি জমা দিয়েছে।
এশিয়াটিকের প্রতিষ্ঠাতা আলী যাকের চেয়েছিলেন নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সর্বোচ্চ মান ও সেবার উৎকর্ষ নিশ্চিত করে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে। সততা, স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠা এশিয়াটিকের সেবা প্রদানের মূলনীতি এবং ভবিষ্যতেও এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি সততা, স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ য গ এক ষ ত র অন য ন য দরপত র সরবর হ উল ল খ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’
ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।