‘কলিজা টানি ছিড়ি ফেলবো-একবারে টানি ছিড়ি ফেলবো তোমার, চেনো আমাকে, তুমি-এ চেনো! খুব পাওয়ার দেখাও, একবারে নিশ্চিহ্ন করে দেবা তোমাক, চেনো বিএনপিকে। এ তোমার নামে আমি মামলা দেবো। আমি থানা যায়া ওখানে লিখবো, উয়াক এ্যারেস্ট করি দিয়ো তারপরে আমি আসবো।’

কুড়িগ্রামের রাজারহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের আইসিটি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক রুবেল মিয়াকে এভাবেই শাসাচ্ছিলেন রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমান। এ সংক্রান্ত ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই রুবেল মিয়া বলেন, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চান্দামারী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে কমিটি নিয়ে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিদ্যালয়ের কমিটির সভাপতি পদের জন্য রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমান তিন জনের নাম প্রস্তাব করেন। তারা হলেন, রাজারহাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রুশো চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক বাদশা মিয়ার ছোটভাই শাহ আলম মাস্টার এবং উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াজেদ আলীর সহধর্মিনী রহিমা বেগম। এই তালিকা নিয়ে আমি প্রতিবাদ জানিয়ে রাজারহাট উপজেলা জামায়েতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আহমদ আলীর নাম প্রস্তাব করি। সেখানে বাকবিতণ্ডা হয়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজারহাট বাজারে থানা মোড়ে আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন পথরোধ করে আমাকে পাশের একটি ফার্মেসিতে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে চড়-থাপ্পড় মেরে লাঞ্ছিত করে এবং গালিগালাজ করে। বিষয়টি আমার দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। নিরাপত্তাজনিত কারণে মামলা করেননি বলেও জানান তিনি।

এই বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমান বলেন, রুবেল মিয়া শিবির করে। সে বিএনপিকে নিয়ে মিথ্যা কথা ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছিল। এই বিষয়ে তাকে বলা হলে সে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চায়। পরে তাকে নিয়ে ছাত্রদল ও যুবদলের ছেলেরা চা-নাস্তা করে। সুন্দরভাবে তারা সেখান থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়। কিন্তু সে ওই ঘটনার পুরো ভিডিও না দিয়ে শুধুমাত্র আমার কথার অংশটুকু অন্য একজনের ফেসবুক থেকে ছড়িয়ে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ভুক্তভোগী রুবেল মিয়া শিক্ষকতার পাশাপাশি বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রাজারহাট শাখার বায়তুলমাল সম্পাদক বলে জানা গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ জ ম য় ত ইসল ম র জ রহ ট ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ