ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের ৫৮ শতক জায়গা উদ্ধার
Published: 3rd, May 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মেড্ডায় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের ৫৮ শতক জায়গা উদ্ধার হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার আবদুল খালেক পাটোয়ারী দখল উচ্ছেদে এ অভিযান পরিচালনা করেন।
শুক্রবার (২ মে) মেড্ডায় এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখানে থাকা বিভিন্ন বাড়ি ও দোকান গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজনদের থেকে জানা যায়- মেড্ডার সরকারি এই ক্লিনিকের পাশেই মেড্ডা বাজার ও পূর্বদিকে তিতাস নদী। দীর্ঘদিন ধরে কিছু নিম্ন আয়ের পেশাজীবিসহ স্থানীয় লোকজন ক্লিনিকের ৫৮ শতক জায়গা দখল করে রেখেছিল। তারা থাকার জন্য পাকা স্থাপনার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে এ জায়গাটিতে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলো।
চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন অবৈধ দখলদার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট আদালতে একটি মামলা করেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তার গত ২৮ এপ্রিল অবৈধ দখলদার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য আদেশ দেন। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইনগত দিক-নির্দেশনা প্রদানের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার আবদুল খালেক পাটোয়ারীকে নির্দেশ দেন। শুক্রবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার আবদুল খালেক পাটোয়ারীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর সদস্যরা মেড্ডা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
সিভিল সার্জন নোমান মিয়া বলেন, “দীর্ঘ প্রায় ৬০-৭০বছর ধরে বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের ৫৮ শতক জায়গা স্থানীয়রা অবৈধভাবে দখলে রেখেছিল। এ বিষয়ে মামলা করা হলে জায়গাটি উদ্ধারে প্রশাসন উদ্যোগ নেয়।”
ঢাকা/রুবেল/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে দখলদারি ও নির্বাচন ঘিরে বিএনপির সংঘাত থামছে না
দখলদারি ও নির্বাচনী মনোনয়ন ঘিরে চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি, পাল্টাপাল্টি খুন থামছেই না। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিকেলে রাউজানের সত্তারহাট এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপির শক্ত দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে আছে। কমিটি ও পদ স্থগিত করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
বর্তমানে রাউজান বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুই নেতার অনুসারী। এই দুই নেতার একজন হলেন দলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী; অন্যজন উত্তর জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার। সংঘর্ষের সর্বশেষ ঘটনাটিও ঘটেছে এই দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গোলাম আকবর খন্দকার নিজেও ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করেছে। গোলাম আকবর খন্দকারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন বিরোধীপক্ষের নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার এ নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। আবার একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার জন্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দায়ী করা হয়েছে।
সংঘর্ষের পর রাউজানের পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা, স্কুল ও কলেজশিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁরা হেনস্তা হওয়ার ভয়ে কেউ নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে এই প্রতিবেদককে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেকোনো সময় আবার সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ায় দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরাই ‘শক্তি’ প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। পাশাপাশি রাউজানের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতেই একের পর এক সংঘর্ষ ও খুনোখুনির ঘটনা ঘটছে। যাঁর হাতে ক্ষমতা, তাঁরাই নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য, বালুমহাল ও ইটভাটা, ইট-বালু সরবরাহের ব্যবসা, বিল ভরাটের কাজে মাটি-বালু সরবরাহের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করেন। পাহাড়ি সীমান্ত এলাকা হওয়ায় রাউজানের ওপর দিয়ে কাঠ ও মদ চোরাচালান হয়। অনেক সময় অস্ত্র পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয় রাউজান। এসবের নিয়ন্ত্রণ নিতেই স্থানীয় পর্যায়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। এখন নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় উভয় পক্ষের দখলদারি রয়েছে।
দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করেছে। গোলাম আকবর খন্দকারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন বিরোধীপক্ষের নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার এ নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। আবার একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার জন্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দায়ী করা হয়েছে।গত মঙ্গলবার বিকেলে দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর সেদিন রাতেই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া স্থগিত করা হয় কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদও। রাউজানের ঘটনা তদন্ত করতে গত বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর। কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালকে। সাত দিনের মধ্যে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান আজীজুল বারী হেলাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাউজানে দুই প্রার্থী আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। সেখানে ইতিমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আগামী রোববার সরেজমিনে গিয়ে নেতা-কর্মী, ভুক্তভোগীসহ সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’
আরও পড়ুনরাউজানে খুন, পাল্টা খুন চার দশক ধরে ০৪ মে ২০২৫গত মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় পুড়িয়ে দেওয়া মোটরসাইকেল