নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবি মামুনুল হকের
Published: 3rd, May 2025 GMT
নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক। এছাড়া, যারা কমিশনে আছেন তাদের বিচারের আওতায় আনারও দাবি করেন তিনি।
শনিবার (৩ মে) ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবিতে এ মহাসমাবেশ আয়োজন করে।
মামুনুল হক বলেন, “রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি, প্রয়োজনে আরো রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করবো। সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগকে দেশের রাজনৈতিক কার্যকলাপ থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে। শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডসহ সব গণহত্যার বিচার নিশ্চিত কররে হবে।”
মহাসমাবেশে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, “১৬ বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনা যে পরিমাণ গুম, খুন ও হত্যা চালিয়েছে বিশ্বে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই আওয়ামী লীগকে অনতিবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। নতুন বাংলাদেশে ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ মেনে নেওয়া যাবে না। শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিমের দেশে কুরআন, সুন্নাহ বিরোধী কার্যক্রম মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। তাই এই ইসলাম বিরোধী কমিশন বাতিল করতে হবে। যদি কমিশন বাতিল না করেন তাহলে আপনার বিরুদ্ধে কাফনের কাপড় পরে মাঠে নামতে বাধ্য হবো।”
মহাসমাবেশের সভাপতির বক্তব্যে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ'র আমির আল্লামা শাহ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, “আমাদের দেশ এখন বহুমুখী সংকটে রয়েছে। আমাদের ইস্পাত কঠিন ঐক্য সুদৃঢ় করে গড়ে তুলতে হবে। নারী কমিশন এখন অন্যতম বিষ ফোঁড়া। অবিলম্বে এই বির্তকিত কমিশন বাতিল করতে হবে। আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে আর কোনো ফ্যাসিস্ট মাথাছাড়া দিয়ে না ওঠে।”
নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাসহ কমিশন বাতিলের দাবিতে আগামী ২৩ মে দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামী ৩ মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন করার ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
ঢাকা/রায়হান/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মাওলানা রইসের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করলে হরতালের হুশিয়ারি
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার সাবেক ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিন কাদেরীকে মব সৃষ্টি করে যারা হত্যা করেছে তদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করলে হরতালে পালনের হুশিয়ারি দিয়েছেন সুন্নিরা। একই সঙ্গে রোববার ‘মার্চ টু গাজীপুর’ সফল করার আহ্বান জানানো হয়।
শনিবার চট্টগ্রামের লালদীঘি চত্বরে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআতের উদ্যোগে সমাবেশে অধ্যক্ষ মুফতি অছিয়র রহমান আলকাদেরী সভাপতিত্ব করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- শায়খুল হাদিস আল্লামা কাজী মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন আশরাফী, পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ মছিহুদ্দৌলা, অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর, পীর অধ্যক্ষ আবুল ফরাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, মুফতি আবুল কাশেম ফজলুল হক, মুহাদ্দিস আল্লামা আশরাফুজ্জামান আলকাদেরী, অ্যাডভোকেট আবু নাছের তালুকদার, পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আমিরী, আল্লামা শাহ নূর মোহাম্মদ আলকাদেরী, আল্লামা আনিসুজ্জামান আলকাদেরী, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, এইচ এম মুজিবুল হক শাক্কুর, অধ্যাপক জালাল উদ্দীন আজহারী, ফজলুল করিম তালুকদার, মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন তৈয়্যবী, অধ্যাপক সৈয়দ হাফেজ আহমদ, অধ্যক্ষ হেলাল উদ্দীন, অধ্যক্ষ ইব্রাহিম আখতারী প্রমুখ।
সভায় আল্লামা কাজী মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন আশরাফী বলেন, ‘বৈষম্য ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশে ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্তরায়। এত বছরেও শহীদ আল্লামা নুরুল ফারুকী হত্যার বিচারের কোনো অগ্রগতি হয়নি। এবার গাজীপুরে মসজিদের ইমাম মাওলানা রইস উদ্দিনকে মিথ্যা অপবাদে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধ ও মব সৃষ্টিকারীদের শাস্তির বিকল্প নেই। অথচ, পুলিশ-প্রশাসন মামলা পর্যন্ত নেয়নি। পুলিশ কার ইন্ধনে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করছে আমরা জানি না। খুনিদের গ্রেপ্তারে গড়িমসি করলে পরবর্তীতে যেকোনো পরিস্থিতিতে পুলিশ-প্রশাসন দায়ী থাকবে। খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে আমরা হরতালের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
সভায় বক্তারা বলেন, ‘আমরা রইস হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলন করছি। অন্যদিকে সরকার রাখাইনে মানবিক করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ মানবিক করিডোরের মাধ্যমে দেশ সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে। অবিলম্বে করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। একইভাবে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের ইসলাম বিরোধী সুপারিশ আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।’