মাদারীপুরে শতবর্ষী বটগাছ কেটে ফেলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি
Published: 7th, May 2025 GMT
ছবি: প্রথম আলো
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কেটে ফেলা হলো শতবর্ষী বটগাছটি
গোড়ায় মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত, লাল কাপড় বাধাকে ‘শিরক ও গুনাহর কাজ’ আখ্যা দিয়ে মাদারীপুরে শতবর্ষী একটি বটগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা আলম মীরার কান্দি এলাকায় শতবর্ষী বটগাছটি কেটে ফেলেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান প্রতিক্রিয়াও দেখা যাচ্ছে।
এ দিকে বটগাছটি কেটে ফেলার বিষয়ে তদন্ত শুরু কাজ করেছে বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন।
জানা যায়, শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা আলম মীরার কান্দি এলাকায় শতবর্ষী একটি বটগাছ কেটে ফেলেন স্থানীয়রা। মূলত শতবর্ষী বটগাছটির গোঁড়ায় স্থানীয় ও দূর-দূরান্তের মানুষ মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত করতো, মনোবাসনা পূরণে লাল কাপড় বেঁধে রাখত। যা ইসলামের দৃষ্টিতে শিরক আখ্যা দিয়ে তা কেটে ফেলা হয়েছে।
গাছটি কাটার সমালোচনা করে মাইনুল ফয়সাল নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘শিরক করল কারা আর ক্ষতিগ্রস্ত হলো কে? গোটা জাতি এতটা অশিক্ষিত কি করে হয় আমার মাথায় ঢোকে না। বটগাছের অপরাধ কি?’
সোহেল সিকদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদে অনেকে এই গাছের ছায়ায় বসে থাকত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি শত শত পাখির অভয়ারণ্য এ গাছ। এভাবে গাছটি কেটে ফেলা ঠিক না।’
তবে গাছ কাটার পক্ষ নিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘এই বটগাছের গোঁড়ায় মিষ্টি দেয়, সিন্নি দেয়, লাল কাপড় বাধা হয়। এই গাছকে কে মনে করে সৃষ্টিকর্তা, দেবতা, যা শিরক ও গুনাহর কাজ। এই গুনাহর কাজ যাতে না হয় সেজন্য স্থানীয়রা গাছটি কেটেছেন। এত বড় গাছ যে পরিমাণে অক্সিজেন দেয় তা আমাদের ও পরিবেশের জন্য বড্ড উপকারী তা আমরা জানি। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করেছি, এখানে তিনটি গাছ রোপণ করব। আমরা জমির মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি গাছটি কাটার বিষয়ে। তিনি আমাদের বলেছেন, যেহেতু গাছটির জন্য গুনাহ হচ্ছে, তাই কেটে ফেলেন ও আমাদের মসজিদে ১৫০০ টাকা দিয়েন।’
মাদারীপুর বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আলম খান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং আশপাশের অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে আগে যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাছটি কাটার পরিকল্পনা হয়েছিল, তা অস্বীকার করছেন গাছমালিক। জমির মালিক সত্তর হাওলাদার বলেছেন, গাছ তিনি ১৫০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। আমার ধারণা, ঘটনা আগেরটা ঠিক, তবে জমির মালিককে ম্যানেজ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি এবং তদন্ত করা হচ্ছে।’
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোসা. ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি জেনে সেখানে লোক পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’