ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজনকে ছয় দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ শনিবার এ আদেশ দেন।

রিমান্ডে নেওয়া তিন আসামি হলেন তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও মো.

পলাশ সরদার (৩০)। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তিন আসামিকে ছয় দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। ১৩ মে এই তিন আসামি গ্রেপ্তার হন।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর জানান, ‘গ্রেপ্তার তিনজন পেশায় ভাসমান হকার। তাঁরা রাতে মদ–গাঁজা খান, নেশা করেন। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।’

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে শাহরিয়ার গুরুতর আহত হন। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় আজ সকালে নিহত শাহরিয়ারের ভাই শরীফুল আলম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন শাহরিয়ার আলম সাম্য। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানায়।

শাহরিয়ার হত্যার ‘প্রকৃত’ আসামিদের গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা শাহবাগ থানা ঘেরাওয়ের পর গতকাল শুক্রবার তাঁরা এই আলটিমেটাম দিয়ে সরে যান।

আরও পড়ুনশাহবাগ থানা ঘেরাও, শাহরিয়ার হত্যায় আসামিদের গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম১৬ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হব গ থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুরাদনগরে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠনের উদ্বেগ প্রকাশ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে এক নারী ও তার দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দ্রুত, নিরপেক্ষ ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। 

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে জানানো হয়, একদল লোক রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তার ছেলে রাসেল মিয়া (২৮) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (২২)-কে তাদের নিজ বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে রাস্তায় ফেলে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনায় পরিবারের আরও একজন নারী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রাথমিক অভিযোগ বা সন্দেহের ভিত্তিতে, কোনো ধরনের আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, এইভাবে কাউকে প্রকাশ্যে হত্যা করা শুধুমাত্র আইনের শাসনের পরিপন্থীই নয়, এটি নাগরিক নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

এমএসএফ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, কথিত যে এ পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে তাদের বিরোধ ছিল। অথচ এদেরকে আইনের হাতে সোপর্দ না করে গণপিটুনির মতো বর্বরোচিত সহিংসতা ঘটিয়ে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, যা গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ, এবং মানবিক মর্যাদায় আঘাত ও চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। গণপিটুনি বা মব সহিংসতা বিচারবর্হিভূত কর্মকাণ্ড হিসেবেই গণ্য করা হয়ে থাকে। তাই মব বা গণপিটুনির সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী তথা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

আসক এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত গণপিটুনির ঘটনায় কমপক্ষে ৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সংস্থার সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তিকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং একটি নিরপেক্ষ, প্রমাণনির্ভর ও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মামলা প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি এ ঘটনায় পরিবারটির গুরুতর আহত সদস্যের নিরাপত্তা, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করতে হবে। 

আসক জানায়, চলমান এই সহিংসতা রুখতে রাষ্ট্রকে এখনই কার্যকর, কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীতে ফাঁকা গুলির পর সাংবাদিকসহ ৩ জন গ্রেপ্তার
  • মুরাদনগরে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠনের উদ্বেগ প্রকাশ
  • গাজীপুরে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও দুই নিরাপত্তাকর্মী গ্রেপ্তার