নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের বিপণিবিতান ও আবাসন প্রকল্প ‘সুবর্ণ সিটি’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে একদল যুবক। স্থানীয় ছাত্রদল ও যুবদল নেতাকর্মীরা এই হামলা চালান বলে অভিযোগ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার হারিছ চৌধুরীর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

হামলাকারীরা অনুষ্ঠানস্থলের তোরণ এবং ভেতরের চেয়ার ভাঙচুর করেন। এ সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ক্যামেরাপারসনকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁর ক্যামেরায় আঘাত করার পাশাপাশি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন হামলাকারীরা। অন্যান্য সংবাদকর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করা হয়। অনুষ্ঠানস্থলের পাশে চরজব্বর থানার একদল পুলিশ থাকলেও তারা হামলাকারীদের নিবৃত্ত করতে কোনো পদক্ষেপ নেননি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টায় সুবর্ণচর উপজেলার হারিছ চৌধুরীর বাজারের পূর্ব পাশে সোনাপুর-চেয়ারম্যানঘাট সড়কের পাশে ‘সুবর্ণ সিটি’ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই প্রকল্পের মালিক বিকল্পধারা বাংলাদেশের সাবেক মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান। বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি হেলিকপ্টারে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন এবং কয়েক মিনিট অবস্থান করে গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতি যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠান শুরুর আগমুহূর্তে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুর রহমান ওরফে অশ্রু, শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো.

সোহরাওয়ার্দীসহ ১৫-১৬ নেতাকর্মী লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালান। তারা ভাঙচুর চালিয়ে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন।
হামলার বিষয়ে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুর রহমান অশ্রু বলেন, এখানে ছাত্ররা এবং যারা স্থানীয়ভাবে বিএনপি করে, সবাই ছিল। মেজর মান্নান ও তাঁর লোকজন এই প্রকল্পের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসন করছিল। বিষয়টি স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানতে পেরে বাধা দিয়েছেন। সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। 

চরজব্বার থানার ওসি শাহীন মিয়া বলেন, মেজর মান্নানকে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে অনুষ্ঠান এলাকায় বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা। হামলার বিষয়টি আমার জানা নেই।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প র অন ষ ঠ ন ন ত কর ম কর ম র উপজ ল য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব