জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বাগেরহাট জেলা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সমাবেশ শেষ না করেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোল্লা রহমাতুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেল ৫টার দিকে সদর উপজেলার খান জাহানিয়া গণ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জেলা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় এ ঘটনা ঘটে।
সভায় উপস্থিত স্থানীয় নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, মোল্লা রহমাতুল্লাহ নিজ পছন্দের কয়েকজনকে দিয়ে কমিটি গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থান ও পরবর্তী সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন না, এমন ব্যক্তিদের নিয়ে ‘পকেট কমিটি’ গঠন করতে চেয়েছিলেন।
বাগেরহাট জেলা এনসিপির প্রতিনিধি মুহাম্মদ হামিম হুসাইন বলেন, “জেলা সার্চ কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্র থেকে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল আসার কথা ছিল। কিন্তু, মোল্লা রহমাতুল্লাহ একাই এসে নিজের পছন্দের লোকদের দিয়ে কমিটি করার চেষ্টা করেন। এতে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হন এবং প্রতিবাদ জানান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তিনি কাউকে কিছু না বলেই সভাস্থল ত্যাগ করেন।”
তিনি আরো বলেন, “যাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে, তাদের অনেকে দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় এবং বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত। বিষয়টি দ্রুত কেন্দ্রে জানানো হবে।”
এনসিপির আরেক স্থানীয় প্রতিনিধি জাহিদুর রহমান পলাশ বলেন, “বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠনের ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা এ নিয়ে সভায় কথা বলতে চাইলেও মোল্লা রহমাতুল্লাহ আলোচনায় রাজি হননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানান। একপর্যায়ে তিনি কাউকে কিছু না বলে সমাবেশ ছেড়ে চলে যান।’’
ঢাকা/শহিদুল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রহম ত ল ল হ গঠন র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
মরিশাসের কাছে চাগোস হস্তান্তর প্রক্রিয়া স্থগিত
মরিশাসের কাছে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত চাগোস দ্বীপপুঞ্জ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে তা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্য ও মরিশাস সরকারের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি শেষ মুহূর্তে সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে গেল।
বিবিসি জানিয়েছে, দুই চাগোসীয় নারীর করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে বিচারপতি গুজ এই আদেশ দেন। ফলে চুক্তিটি স্বাক্ষরের আগেই স্থগিত করা হয়েছে। কথা ছিল, চুক্তিটির আওতায় যুক্তরাজ্য চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসের হাতে তুলে দেবে। আর এই দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়ায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যৌথ সামরিক ঘাঁটি আরও ৯৯ বছরের জন্য ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারবে। বৃহস্পতিবার এই চুক্তি স্বাক্ষরের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি।
এর আগে এই চুক্তিটি নিয়ে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের একটি অংশ থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছিল। বার্নাডেট ডুগাস ও বার্ট্রিস পম্প নামে চাগোসের দু’জন নারী তাদের জন্মভূমি দিয়েগো গার্সিয়ায় গিয়ে বসবাস করতে চেয়ে সম্ভাব্য চুক্তিটির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। তবে প্রস্তাবিত চুক্তি তো বটেই, বর্তমান ব্যবস্থায়ও গার্সিয়া দ্বীপে চাগোসবাসীর ফেরার অনুমতি নেই।
মামলা করা দুই নারীর আইনজীবী মাইকেল পোলাক বলেন, চাগোসবাসীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে পরামর্শ না করেই সরকার তাদের জন্মভূমি দিয়ে দেওয়ার যে উদ্যোগ নিচ্ছে, তা চাগোসবাসীর প্রতি অতীতের নিষ্ঠুর আচরণেরই ধারাবাহিকতা।
চুক্তি নিয়ে চাগোসবাসীর হতাশা ও ক্ষোভ বৃহস্পতিবার আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি ও মন্ত্রী স্টিফেন ডোটি চাগোসীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর ‘চাগোসিয়ান ভয়েস’ সংগঠনের সদস্য জেমি সাইমন বলেন, এই চুক্তিতে আমাদের জন্য ভালো কিছু নেই। আমি আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ।
চাগোস দ্বীপপুঞ্জ ১৯৬৫ সালে মরিশাস থেকে আলাদা করা হয়েছিল। সেই সময় ব্রিটিশ উপনিবেশের অধীনে ছিল মরিশাস। সেই সময় মাত্র ৩০ লাখ পাউন্ডে দ্বীপগুলো কিনে নিয়েছিল ব্রিটেন। তবে মরিশাসের দাবি, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য চাপে পড়ে তারা এসব দ্বীপকে আইনবিরোধীভাবে হারাতে হয়েছিল। এর পর ১৯৭১ সালে একটি অভিবাসন আদেশের মাধ্যমে চাগোসবাসী নিজেদের জন্মভূমিতে ফেরত আসা নিষিদ্ধ করা হয়।
এদিকে জাতিসংঘের আদালত ও সাধারণ পরিষদ সম্প্রতি চাগোস দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে মরিশাসের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন কনজারভেটিভ সরকার চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করলেও তা চূড়ান্ত করতে পারেনি। লেবার সরকার ক্ষমতায় আসার পর আলোচনা আবারও এগোতে শুরু করে।