সুইস ডিজাইনার কেভিন জার্মানিয়ে ফেলে দেওয়া উপাদান দিয়ে পোশাক তৈরি করেন৷ তারপরও এগুলো অনেক দামে বিক্রি হয়। টেলর সুইফটের মতো সুপারস্টাররা তাঁর নকশা করা পোশাক পরেন।

জার্মানিয়ে বলেন, ‘এটা আমার মূল্যবোধ প্রকাশ করে। আমি আর অন্য কোনোভাবে এগুলো তৈরি করতে পারতাম না।’

কীভাবে এ ধরনের পোশাক তৈরি করেন। জানতে চাইলে এই ডিজাইনার বলেন, ‘এই কালেকশনের সব উপকরণ পুনরায় ব্যহারযোগ্য। এবার আমি রাফিয়া পামগাছ নিয়ে কাজ করেছি। পোশাক তৈরির আগে আমি উপকরণ সংগ্রহ করি। অর্থাৎ স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার বিপরীতে কাজ করি আমি। নকশা তৈরির পর উপকরণ কিনি না। আমি এমন উপকরণ খুঁজি, যা পুনর্ব্যবহার করতে পারব, যা পাই, তাই দিয়েই পোশাক ডিজাইন করি।’

১৯৯২ সালে হংকংয়ে যাওয়ার পর জার্মানিয়ের মাথায় প্রথম বর্জ্য পদার্থ দিয়ে ফ্যাশন তৈরির ধারণা জন্ম নেয়। তিনি বলেন, ‘ডিওর এর জন গালিয়ানু আর জিভোনচির রিকার্ডো টিশির কাজ দেখে আমি বড় হয়েছি। মুক্তা দিয়ে তৈরি তাদের সৃষ্টিগুলো দারুণ ছিল। এরপর যখন আমি হংকং যাই, তখন এমন সব পুঁতি দেখেছি যেগুলোকে বর্জ্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। তখন মনে মনে ভাবলাম, লিনেন আর পুরোনো চাদরের মতো কাপড় ছাড়াও অন্য কিছুও পুনর্ব্যবহার করা যায়—আসলে সবকিছুই পুনর্ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে আমরা এমন এক সমাজে বাস করছি, যেখানে সবকিছুই ফেলে দেওয়া হয়।’

কিন্তু ক্রেতারা উপকরণ দিয়ে তৈরি এসব পোশাকের জন্য অনেক অর্থ খরচ করতে কতটুকু আগ্রহী? এ বিষয়ে ফ্যাশন সাংবাদিক গডফ্রে ডিনি বলেন, ‘আজকাল সবাই পলিটিক্যালি কারেক্ট হতে চায়। হয়তো সব কোটিপতির ক্ষেত্রে এই কথাটা সত্য নয়। তবে আমি রিসাইক্লিং, আপসাইক্লিং আর সাসটেইনেবিলিটির সঙ্গে আছি। আমার এমন পোশাক আছে—এই কথা বলতে পারাটা এখন ফ্যাশন জগতে অনন্য বিবৃতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

জার্মানিয়ের ক্রেতাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সুপারস্টারের নাম আছে। যেমন মার্কিন গায়িকা টেলর সুইফট, জার্মান মডেল হাইডি ক্লুম আর ব্রাজিলিয়ান অভিনেত্রী জেসিকা কায়ান।

জেসিকা কায়ান বলেন, ‘এটা প্রমাণ করে যে ‘‘ওট কুটুয়র’’ টেকসই হতে পারে এবং এতে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা বিশ্ব ও আমাদের গ্রহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জার্মানিয়ে এই পোশাকগুলো নিখুঁতভাবে তৈরি করেন।’

প্যারিসের ফ্যাশন জগতে হালের প্রিয় ব্যক্তিত্ব হলেন কেভিন জার্মানিয়ে। গত বছর প্যারিস অলিম্পিকের সমাপনী অনুষ্ঠানের জন্য ১২০টি পোশাক তৈরির দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঠিক কোন বিষয়টি তাঁকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে।

গডফ্রে ডিনি বলেন, ‘আপসাইক্লিং, রিসাইক্লিং এবং পুরো কাপড় নতুন করে তৈরি—ডিজাইনাররা এখন পর্যন্ত সস্তা আর তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে বর্জ্য উপকরণ ব্যবহার করেছেন। কুটুয়রের ক্ষেত্রে কেউ এমনটা করেননি। সে কারণে জার্মানিয়ে অনন্য। দ্বিতীয়ত, অনেক দিন ধরে কোনো সুইস কুটুয়র ডিজাইনার দেখা যায়নি। জার্মানিয়ে অনেকটা নিজস্ব অর্থায়নে কাজ করে গেছেন। কোনো বড় বিনিয়োগকারী কিংবা সম্পদশালী পিতা তার পেছনে নেই।’

জার্মানিয়ের অনেক আত্মীয় তাঁকে কাজে সাহায্য করেন। এমনকি তাঁর দাদিও পোশাক বোনেন। কেভিন জার্মানিয়ের দাদি তার প্রথম ‘ওট কুটুয়’র শো–তে বুননের কাজ করেছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ড জ ইন র ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ

আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে, নইলে হোয়াইট হাউসের প্রেস অফিসের মূল অংশে সাংবাদিকেরা প্রবেশ করতে পারবেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গতকাল শুক্রবার এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলেছে, ‘সংবেদনশীল উপকরণ’ সুরক্ষিত রাখতে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

এ নিষেধাজ্ঞার অর্থ, এখন থেকে যেসব সাংবাদিকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকবে না, তাঁরা হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইংয়ের ‘আপার প্রেস’ নামে পরিচিত এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এ অংশে প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিটের কার্যালয় অবস্থিত।

নতুন এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের ‘লোয়ার প্রেস’ নামে পরিচিত এলাকায় প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। এটি হোয়াইট হাউসের ব্রিফিং কক্ষের পাশে অবস্থিত। এখানে জুনিয়র প্রেস কর্মকর্তারা কাজ করেন।

এ সিদ্ধান্তের পক্ষে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হোয়াইট হাউসের যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক স্টিভেন চুয়াং বলেন, সাংবাদিকেরা ওই এলাকায় মন্ত্রিসভার সদস্যদের হঠাৎ ঘিরে ধরেন এবং গোপনে ভিডিও-অডিও ধারণ করেন। যদিও তিনি তাঁর এ অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্দেশ জারি করা হচ্ছে যে প্রেস পাসধারীরা আগাম অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া ওভাল অফিসের পাশে অবস্থিত আপার প্রেসে প্রবেশ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনহোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি পদে ২৭ বছরের ক্যারোলিনকে বেছে নিলেন ট্রাম্প১৬ নভেম্বর ২০২৪

চিঠিটি লেভিট ও চুয়াংকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, এ পদক্ষেপের লক্ষ্য আপার প্রেসের সংবেদনশীল উপকরণ অননুমোদিত প্রকাশ থেকে রক্ষা করা।

তবে সাংবাদিকদের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের নানা বিধিনিষেধ আরোপের ধারাবাহিকতায় এ সিদ্ধান্ত এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইং। এখানেই ‘আপার প্রেস’ অবস্থিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ