যে বিজ্ঞানীকে বহিষ্কার করে কপাল চাপড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, উচ্ছ্বসিত হয়েছে চীন
Published: 3rd, June 2025 GMT
১৯৫০ সাল। তখনো কেউ জানত না, যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই ছিল স্নায়ুযুদ্ধ জয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। সেই চাবিকাঠির নাম শিয়ান শ্যুসেন। তিনি ছিলেন প্রতিভাবান একজন চীনা রকেটবিজ্ঞানী, যিনি এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ ও অস্ত্রপ্রযুক্তিতে আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক) ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) কর্মরত অবস্থায় শিয়ান জেটচালনার (জেট প্রপালশন) জটিল ধাঁধার সমাধান করেন। তাঁর গবেষণার ভিত্তিতেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম গাইডেড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি হয়। তাঁকে কর্নেল পদে উন্নীত করে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীতে যুক্ত করা হয়।
এখানেই শিয়ান থেমে থাকেননি। তিনি গোপন ‘ম্যানহাটান প্রকল্পে’ কাজ করেছিলেন। সেখান থেকেই জন্ম নেয় বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাঁকে জার্মানিতে পাঠানো হয়েছিল নাৎসি বিজ্ঞানীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে। শিয়ানের স্বপ্ন ছিল, মহাকাশে প্রথম পা রাখবেন একজন আমেরিকান। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে তিনি তখন একটি রকেট তৈরির কাজ করছিলেন।
ড.শিয়ান আর কোনো দিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাননি। জীবনের বাকি সময় তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একজন খ্যাতিমান নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চীনে তাঁকে জাতীয় বীর হিসেবে দেখা হয়, এমনকি তাঁর নামে একটি জাদুঘরও নির্মিত হয়েছে।
ঠিক তখনই থেমে গেল শিয়ানের উত্থানের পথ। ক্যারিয়ারের চূড়ায় পৌঁছানোর মুহূর্তে একদিন তাঁর দরজায় কড়া নাড়ে এফবিআই। স্ত্রী ও শিশুসন্তানের চোখের সামনে তাঁকে হাতকড়া পরানো হয়। শেষ পর্যন্ত আদালত রাষ্ট্রদ্রোহ ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ থেকে তাঁকে মুক্তি দিলেও যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে আর ফিরিয়ে নেয়নি। ১৯৫৫ সালে এক ডজন মার্কিন যুদ্ধবন্দীর বিনিময়ে ড. শিয়ান শ্যুসেনকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কমিউনিস্ট–শাসিত বেইজিংয়ে।
এই একজন মাত্র ব্যক্তির নির্বাসনের পরিণতি ছিল বিপর্যয়কর। চীনে ফিরে শিয়ান শ্যুসেন সরাসরি মাও সে–তুংকে রাজি করান, তাঁকে কাজে লাগিয়ে যেন আধুনিক অস্ত্রপ্রযুক্তি কর্মসূচি গড়ে তোলা হয়। তার ঠিক এক দশক পর চীন তাদের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়।
আর ১৯৮০ সাল নাগাদ দেশটি এমন শক্তি অর্জন করে, যা দিয়ে চাইলেই ক্যালিফোর্নিয়া কিংবা মস্কোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো যায়। ড. শিয়ান শুধু চীনের ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশ কর্মসূচির জনকই নন, চীনে প্রযুক্তিগত বিপ্লবও তাঁর হাত ধরে শুরু হয়। একসময় যা চীনকে পরাশক্তিতে পরিণত করে।
শিয়ান শ্যুসেনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
কাক খেলছে ফুটবল
উয়েফা নেশনস লিগ টুর্নামেন্টের উত্তেজনায় কাঁপছে ইউরোপ। ফুটবলের এই মহাদেশীয় আয়োজন ঘিরে ক্রিকেটের দেশ ভারতেও উত্তেজনা একেবারে কম নয়। তবে বর্তমানে ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কাঁপাচ্ছে অন্য এক ফুটবল খেলোয়াড়।
এ ফুটবলার কোনো মানুষ নয়; বরং একটি কাক। কী, শুনে অবাক হচ্ছেন? অবাক করা ঘটনাই বটে। সম্প্রতি ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে এক বালকের সঙ্গে একটি কাককে ফুটবল খেলতে দেখা যাচ্ছে—ভিডিওটি দক্ষিণ গোয়ার।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কাক তার ঠোঁট দিয়ে বল ছেলেটির দিকে ঠেলে দিচ্ছে আর ছেলেটি বল ধরে আলতোভাবে সেটি আবার কাকের দিকে ফেরত পাঠাচ্ছে। দুজনই এভাবে একে অপরের দিকে বল ঠেলে দিয়ে খেলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার পর সেটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ সেটি দেখেন এবং মন্তব্য করেন।
কাকটি বল ঠেলে দেওয়ার সময় যেভাবে নিখুঁত গতি ও ভারসাম্য বজায় রাখছে, তা দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিস্মিত ও আনন্দিত।
মন্তব্যের ঘরে একজন লিখেছেন, ‘ভাই, তুমি যেভাবে বল পাস করছ, তা ভারতের জাতীয় দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের চেয়ে ভালো।’
আরেকজন মজা করে লিখেছেন, ‘রোববার কি তোমাকে পাওয়া যাবে? সেদিন আমাদের একটি ম্যাচ আছে, একজন ভালো স্ট্রাইকার দরকার, যিনি মাথা দিয়ে ভালো খেলতে পারেন।’
তৃতীয় আরেকজন লিখেছেন, ‘ক্রোনালদিনহো, ক্রোনেস্তা, ক্রোদিনি, ক্রোদোস্কি, ক্রোমুলার’।
ফুটবল আর পাখির যোগাযোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০১০ সালের ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় নকআউট পর্বের ম্যাচগুলোর বিজয়ী সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করে আন্তর্জাতিক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল সিঙ্গাপুরের টিয়া পাখি, যার নাম ‘মানি’।
একজন প্রবীণ ভাগ্যবক্তার পোষা টিয়া ‘মানি’ সম্ভাব্য বিজয়ী দলের জাতীয় পতাকা লাগানো দুটি কার্ডের মধ্যে একটি তুলে নিয়ে ম্যাচের ফলাফল ভবিষ্যদ্বাণী করত।