নির্ধারিত স্থান রেখে মহাসড়ক ঘেঁষে পশুর হাট, ভোগান্তি
Published: 5th, June 2025 GMT
নির্ধারিত স্থান রেখে ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়ক ঘেঁষে বসেছে কোরবানির পশুর হাট। এতে করে সড়কে যানজট তৈরি হয়েছে। ঈদযাত্রায় বাড়তি ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। স্থানীয়রা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে নানা সমালোচনা চলছে। পশুর হাটটি নির্ধারিত স্থানে পাঠানোর জন্য আবেদন করলেও ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে উত্তরা রানাভোলা সুইচগেট সংলগ্ন স্থানে হাটের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। হাটটি ইজারা নিয়েছেন আতিকুর রহমান নামে তুরাগ থানা এলাকার এক ব্যবসায়ী।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাটের জন্য প্রশাসন যে স্থান বরাদ্দ দিয়েছে, সেখানে কোনো উন্মুক্ত স্থান নেই। তবে সেখানে কামারপাড়া পুলিশ বক্স মোড়ে একটি হাট রয়েছে। রানাভোলা মৌজা হলেও এই জায়গাটি উল্লেখিত হাটের স্থান নয়। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়ক ঘেঁষে বসানো হয়েছে হাটটি। সেখানে হাটের তোরণে ইজারাদার হিসেবে আতিকুর রহমানের নাম রয়েছে। তবে হাটের কারণে সড়কে বাড়তি মানুষের চাপ তৈরি হয়েছে। যে কারণে সড়কে যানজট তৈরি হয়েছে। ফলে বাড়তি ভোগান্তিতে পড়ছেন বাড়িফেরা মানুষেরা।
এ বিষয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, নির্ধারিত স্থানে হাট না বসিয়ে মহাসড়কে হাট বসানোর কোনো এখতিয়ার নেই। কামারপাড়া হাট নামে কোনো হাটের ইজারা দেয়নি ডিএনসিসি। বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার কোনো অভিযান চলেনি সড়কের পাশের হাটে।
পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ইজারা সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্র দেখেই আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছি। মহাসড়কের পাশে হাটের বৈধতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ইজারা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের বিষয়। আমরা শুধুই দায়িত্ব পালন করছি।
এদিকে হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমানের মোবাইল ফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে হাটের তত্ত্বাবধানে থাকা তুরাগের স্থানীয় বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম জানান, হাট বৈধ। কাগজপত্র আছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক রব ন র হ ট ড এনস স র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
জমিজমার বিরোধে থানায় সালিসে গিয়ে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার যুবক
জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় সালিসে আসা এক যুবককে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই যুবকের মা আনারা বেগম এ কথা জানান।
গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম আল-আমিন (৩২)। তাঁর বাড়ি নগরের বলাশপুর এলাকায়। মায়ের দাবি, আল-আমিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। সালিসে জমিজমার কাগজ ঠিক থাকায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে রাজি না হলে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ওই যুবক যুবলীগের সমর্থক। তাঁকে গ্রেপ্তারে কয়েকবার বাড়িতে অভিযানও চালিয়েছে পুলিশ। থানায় তাঁকে পেয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে তাঁকে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আল-আমিনের মা আনারা বেগম বলেন, ২০২১ সালে বলাশপুর এলাকায় স্বামীর পেনশনের ১৭ লাখ টাকায় ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ জমি কেনেন তাঁরা। এর আগে ২০০৮ সালে একই দাগে ৪ শতাংশ জমি কেনার দাবি করে ২০২২ সালে জোরপূর্বক সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন এক ব্যক্তি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। ৫ আগস্টের পর সরকার পরিবর্তন হলে নিজের কেনা জমিতে বাড়ি করার উদ্যোগ নিলে বাধা হয়ে দাঁড়ান ওই ব্যক্তি ও তাঁর পক্ষের লোকজন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় উভয় পক্ষকে ডাকা হয়। গত শনিবার রাত আটটায় থানায় সালিস শুরু হয়। চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। সালিসে শেষ পর্যায়ে যখন জমির কাগজপত্র তাঁদের ঠিক পান সালিসকারীরা, তখন ওসি আল-আমিনকে তাঁর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হাড়গোড় ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। পেছনে পেছনে তিনি গিয়ে প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়। এরপর আল-আমিনকে গারদে ঢুকিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় সাজানো রাজনৈতিক মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আনারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। আমার ছেলে ব্যবসা করে। তাকে রাজনৈতিক মামলায় পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছে।’
২৭ জুলাই আল-আমিনকে আদালতে পাঠানোর প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১টা ৩৫ মিনিটে পুলিশের টহল দল নগরের আকুয়া ভাঙ্গাপুল এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে সদরের উত্তর দাপুনিয়ার সরকারি পুকুরপাড় সেলফি নামের স্থানে পাকা রাস্তার ওপর একদল সন্ত্রাসী জনতাবদ্ধ হয়ে রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি ভাঙচুর ও দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৫টি মশাল, ২০টি লাঠি, ৩০টি ইটের টুকরা, ২৫টি কাচের টুকরা জব্দ করা হয়। এ ঘটনার পরদিন পুলিশ কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আল-আমিনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ২৬ জুলাই রাত ১১টা ৪০ মিনিটে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রতিবেদনে পুলিশ আল-আমিনকে যুবলীগের সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করে।
থানার ওই সালিসে থাকা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মো. বাবু বলেন, থানা চত্বরের একটি ঘরে এসআই সজীব কোচের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের কাগজপত্র বোঝেন, এমন লোকজন নিয়ে সালিস শুরু হয়। একপর্যায়ে আল-আমিনকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যায়িত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তাঁকে থানা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়।
জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘১০ দিন আগে থেকে দারোগারা তাঁকে (আল-আমিন) ধরার জন্য খুঁজতেছে। ডেভিল হান্টের আসামি সে। আমাদের দুই দারোগা ছয় থেকে সাতবার তাঁর বাড়িতে রেড দিছে। সে যুবলীগের ফ্যাসিস্ট। মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি।’ ওসি বলেন, কোনো কাগজপত্র দিয়ে নোটিশ করে তাঁকে থানায় ডাকা হয়নি। বিচারক যদি মনে করে আমরা তাঁকে ইলিগ্যাল অ্যারেস্ট করেছি, তাহলে আদালত ফাইন্ডিংস দেবেন। আসামিকে থানা থেকে গ্রেপ্তার করা কী নিষেধ আছে?’ আদালতের প্রতিবেদনে ভিন্ন স্থান দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জজ এটার বিচার করবে। যদি এমন কইরা থাকে, সমস্যা কী?’