বাবা ছিলেন বলিউডের আলোচিত কৌতুক অভিনেতা জনি লিভার। তাতে কী? বলিউডে কাজ পাওয়া মোটেও সহজ হয়নি কন্যা জেমি লিভারের। বরং লজ্জার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন তিনি।

জেমি লিভাবের গায়ের রং কালো। তার শরীরের গঠনও নিখুঁত নয়। তিনি ছোট থেকেই বুলিংয়ের শিকার। 

ভারতীয় গণমাধ্যমকে জেমি লিভার বলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই কখনও শরীরের গঠন নিয়ে আবার কখনও গায়ের রঙের জন্য কু-মন্তব্য শুনতে হয়েছে। একটা সময় নিজের শরীর নিজের লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল!”

আরো পড়ুন:

শাকিবের ‘তাণ্ডব’-এ বাজিমাৎ করলেন নিশো-সিয়াম!

শাহরুখের ঘড়ির মূল্য কারো এক জীবনের স্বপ্ন

জেমি লিভারকে দেখলেই নাকি মানুষ বলতো ‘‘কৌতুক অভিনেতার মেয়েতো!’’

গায়ের রং কালো হওয়ার কারণে ছোট থেকেই তাই তাকে নিয়মিত রূপচর্চার পরামর্শ দিতো প্রায় সবাই। যেমন, ‘‘উপটান ব্যবহার করতে পার তো!’’ কিংবা ‘‘রোজ হলুদ মাখলে গায়ের রং ফর্সা হবে’’।

গায়ের রং কালো হওয়াই অনেক সময় ডাইনি, প্রেতনিও শুনতে হয়েছে। বলিউডে প্রবেশ করেও একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে তার।

জেমি লিভার বলেন, ‘‘লোকে আমাকে বলতো- এত কুৎসিত মেয়েকে কে কাজ দেবে! অনেকে আমার মৃত্যুও কামনা করতো। এখনও ইন্ডাস্ট্রিতে গায়ের রং একটা বড় বিষয়।’’

জেমি আরও বলেন, ‘‘শুধুই কি গায়ের রং, শরীরের গঠন নিয়েও কথা শুনতে হয়েছে।’’

জেমি জানিয়েছেন, ভারী নিতম্ব ঢাকার জন্য অনেক বড় বয়স পর্যন্ত তিনি লম্বা কুর্তি বা পা ঢাকা পোশাক পরতেন। শরীরের খুঁত ঢেকে সুন্দর করে নিজেকে মেলে ধরতে শিখেছেন অনেক পরে। তবে তিনি নাকি কোনো বুলিংয়ের পরোয়া করেন না। 

এরই মধ্যে স্ট্যান্ড-আপ কমেডির দুনিয়ায় নিজের জাত চিনিয়েছেন। পাশাপাশি অভিনয় করেছেন ‘কিস কিসকো পেয়ার করুঁ’, ‘হাউসফুল ৪’, ‘ভূত পুলিশ’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমাতেও। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া

বাংলাদেশ এমনই এক ভূখণ্ড, যেখানে প্রকৃতি আর রাজনীতি একসঙ্গে হেঁটে চলে। রাজনীতি আমাদের নিত্যজীবনের অজানা এক সুর, যার বাঁশি বাজে কখনও মধুর, কখনও বিষণ্ন। এই দেশের গণতন্ত্রও যেন সেই সুরেরই অন্তর্গত এক সংগীত। ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে। প্রথম দশকে গণতন্ত্রের কাঠামো হোঁচট খেতে শুরু করে সামরিক শাসন ও একদলীয় নীতির ভারে। কিন্তু এই দেশের মানুষ বারবার প্রমাণ করেছে, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। 

১৯৯০ সালে স্বৈরশাসনের পতন, সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুথান ও গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আবারও সেই আশা পুনরুজ্জীবিত হয়। তবে এই যাত্রাপথ মসৃণ নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অসহিষ্ণুতা, অবরোধ, হরতাল, সহিংসতা, এসব যেন গণতন্ত্রের মঞ্চে অনাহূত দর্শক। তবুও নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার গঠনের ধারা অব্যাহত আছে, যা গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কেবল নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় নয়, বরং কার্যকর গণতান্ত্রিক চর্চায় নিহিত। সংসদে বিরোধী দলের কার্যকর ভূমিকা, আইনের শাসন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সুশাসন– এসব উপাদান মিলেই একটি সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলে। কিন্তু এই ক্ষেত্রগুলোতে আজও অনেক প্রশ্ন, অনেক সংশয়। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের মাধ্যমে মতপ্রকাশে প্রতিবন্ধকতা কিংবা প্রশাসনের রাজনৈতিক ব্যবহারের অভিযোগ– এসবই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষীণ করে। আবার বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সহিংসতা, ধ্বংসাত্মক আচরণও গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নষ্ট করে। বড় আশার কথা, দেশের তরুণ প্রজন্ম রাজনৈতিক সচেতন হয়ে উঠছে। সামাজিক মাধ্যমে তাদের অংশগ্রহণ, নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কিংবা দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব, সবই রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে নতুন রূপ দিতে পারে। এই তরুণ শক্তিই হতে পারে ভবিষ্যতের পরিবর্তনের বাহক। 

বাংলাদেশের অর্থনীতি যেমন কৃষকের মাঠ থেকে শিল্পাঞ্চলে গড়ে উঠেছে, ঠিক তেমনি রাজনীতির ক্ষেত্রেও দরকার মাটির ঘ্রাণ, জনগণের সত্যিকারের অংশগ্রহণ। দলীয় আদর্শ ও নীতির ভিত্তিতে রাজনীতি গড়ে উঠলে ব্যক্তি বা পরিবারকেন্দ্রিক নেতৃত্ব নয়, গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বিকশিত হলে, স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে। বিশ্ব রাজনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে প্রয়োজন স্বচ্ছ নির্বাচন, কার্যকর নির্বাচন কমিশন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিরপেক্ষতা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও আজ রাজনীতির গুণগত মানের দিকে তাকিয়ে আছে, শুধু ভোটের সংখ্যার দিকে নয়।

গণতন্ত্র শুধু নির্বাচন নয়, এটি একটি সংস্কৃতি, যেখানে ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতা, সংলাপের প্রতি বিশ্বাস এবং জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা থাকা চাই। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ যেন এক স্নিগ্ধ প্রভাতের দিকে এগিয়ে যায়, যেখানে নদীর মতোই প্রবহমান গণতন্ত্র, মাঠের ফুলের মতোই সহিষ্ণু রাজনীতি, আর আকাশের পাখির মতোই মুক্ত মতপ্রকাশ। 

জুয়েল হাসান: প্রকৌশলী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া
  • শৈশবের ঈদ ছিল সরল আনন্দময়