মাইনাসের কাছাকাছি তাপমাত্রা, হিমশীতল দমকা বাতাস যেন শরীরে কামড় বসাচ্ছে। পুরো প্রান্তর তুষারের মোটা আস্তরে ঢাকা পড়ে আছে। সুইজারল্যান্ডের এক হিমশীতল প্রান্তরে ঝরে পড়া তুষারের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে আছেন ইলিয়াস মায়ার। বেলচা দিয়ে তাঁর পিঠের ওপর ঝরে পড়া বরফ স্তূপ করা হচ্ছে—পরনে কেবল সাঁতারের একটি হাফপ্যান্ট, বাকি শরীর নগ্ন।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শরীর কতটা ঠান্ডা সহ্য করতে পারে—এই পরীক্ষার পাশাপাশি বিশ্ব রেকর্ড গড়তে বরফের স্তূপের ভেতর নিজের শরীর পুরোটা ঢুকিয়ে কেবল মাথাটা বের করে শুয়ে ছিলেন ইলিয়াস মায়ার। এভাবে টানা ২ ঘণ্টা ৭ সেকেন্ড ধরে বরফের ভেতর ঢুকে থেকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়েছেন পেশাদার ভারোত্তোলক ইলিয়াস। তিনিই এখন সবচেয়ে বেশি সময় ধরে সরাসরি বরফের সংস্পর্শে থাকার রেকর্ডের মালিক।

ইলিয়াস বরাবরই তীব্র ঠান্ডা সহ্য করতে পারেন। তবে এ রেকর্ড গড়ার পেছনে তাঁর একটি

বড় বার্তা ছিল—মানবদেহ অসাধারণ সবকিছু করতে সক্ষম।

এর আগের এ রেকর্ডের মালিক ছিলেন পোল্যান্ডের ভালেরিয়ান রোমানোভস্কি। ২০২২ সালে তিনি ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ২ সেকেন্ড বরফের ভেতর ছিলেন।

ইলিয়াস বলেন, কেউ দুই ঘণ্টার সীমা অতিক্রম করেননি, এটা জেনে তিনি চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন।

২০২৪ সালের ২ এপ্রিল, বন্ধু ও পরিবারের কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সুইজারল্যান্ডের এক রাস্তার পাশে ইলিয়াস শুরু করেন তাঁর রেকর্ড গড়ার যাত্রা। আশপাশে ছিল জরুরি চিকিৎসক দল ও তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণকারী বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এমন তীব্র ঠান্ডায় হাইপোথারমিয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

সেদিন ইলিয়াস প্রথমে তুষারের ওপর শুয়ে পড়েন—একটু একটু করে বরফের স্তূপে ঢেকে দেওয়া হয় তাঁর পুরো শরীর। এক মিটার উঁচু বরফের নিচে শুধু দেখা যাচ্ছিল তাঁর মুখ আর গোঁফের এক চিলতে ঝিলিক।

রেকর্ড গড়ার পর ইলিয়াস ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘ভারী বরফে কাঁধ আর কনুই ব্যথা করছিল। কখনো মনে হচ্ছিল, পিঠে একটা ধারালো বরফের টুকরা বিঁধে আছে। তখন শুধু কৃতজ্ঞ থাকা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না।’

তবে এখানেই নিজের রেকর্ড গড়ার যাত্রা থামাতে চান না ইলিয়াস, নিজের রেকর্ডকে নিয়ে যেতে চান অন্য উচ্চতায়। তিনি বলেন, এটা কেবল শুরু, আরও অনেক কিছু আসছে। তাঁর এ ‘তুষারযাত্রা’ নিঃসন্দেহে বরফজমা বিশ্বের জন্য এক উষ্ণ অনুপ্রেরণা!

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র কর ড বরফ র স র ভ তর

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলি হামলায় ইরানের আইআরজিসির বিমানবাহিনীর প্রধান নিহত

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ইরানে আগের রাতে চালানো বিমান হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের বিমানবাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ নিহত হয়েছেন।

আইডিএফ দাবি করেছে, ইসরায়েলে হামলার প্রস্তুতি নিতে হাজিজাদেহ ও তাঁর শীর্ষ সহকর্মীরা একটি ভূগর্ভস্থ কমান্ড সেন্টারে বৈঠক করছিলেন। ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে চালানো হামলায় পুরো সেন্টারটি ধ্বংস হয়ে যায়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের ড্রোন ইউনিট ও আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটের শীর্ষ কমান্ডাররা রয়েছেন।

আইডিএফের দাবি, ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মূল নেতৃত্বে ছিল আইআরজিসির বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী। তারা গত বছরের এপ্রিল ও অক্টোবরে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়েছিল।

আরও পড়ুনকয়েক দশকের ছায়া যুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইসরায়েল ও ইরান৩ ঘণ্টা আগে

ইসরায়েলের দাবি, ২০১৯ সালে সৌদি আরবে জ্বালানি স্থাপনায় আলোচিত ড্রোন হামলার নেতৃত্ব দেন আইআরজিসির এই কর্মকর্তারা।

তেহরান টাইমসের এক প্রতিবেদনে আমির আলী নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, এই হামলাকে ‘নৃশংস ও সন্ত্রাসী তৎপরতা’ বলে আখ্যায়িত করেছে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড। ১৬ বছর ধরে আইআরজিসির বিমানবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন হাজিজাদেহ। ইরানের সামরিক কৌশলের অন্যতম প্রধান পরিকল্পকারী ছিলেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সক্ষমতা অভূতপূর্ব মাত্রায় পৌঁছায়।

আইআরজিসির বিবৃতিতে এ হামলাকে ‘ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রতিশোধের অঙ্গীকার করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই অপরাধ আমাদের জাতিকে দুর্বল করবে না, বরং প্রতিশোধের সংকল্প আরও দৃঢ় করে তুলবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ