লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় মাদকাসক্ত ছেলের হাতে খুন হয়েছেন বাবা। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরের উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রশীদ সর্দার ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম হজরত আলী দেওয়ান (৭৫)।

রায়পুর থানা–পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে হজরত আলীকে তাঁর ছেলে মো.

মামুন (৩৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

জানা যায়, মাদকাসক্তির কারণে মামুনের সঙ্গে তাঁর বাবা হযরত আলীর প্রায়ই বাগ্‌বিতণ্ডা হতো। বুধবার রাতেও দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। এর জের ধরেই এমন ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় হজরত আলী দেওয়ানের দেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকেই মো. মামুন পলাতক।

হজরত আলীর প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় বাবা-ছেলের সম্পর্ক বেশ মধুর ছিল। হজরত আলী একজন পরিশ্রমী দিনমজুর ছিলেন। অভাব-অনটনের মধ্যেও ছেলেকে মানুষ করার চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু মামুন ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন মাদকের সঙ্গে। বাবার নিষেধ আর শাসনের কারণে মামুন একসময় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠেন।

প্রতিবেশী আবুল হোসেন বলেন, ‘নিজে না খেয়ে ছেলেকে মানুষ করেছেন হজরত আলী। বিশ্বাস করতে পারছি না, সেই ছেলের হাতেই আজ খুন হতে হলো তাঁকে। সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু যখন সেই সন্তানই হয়ে উঠল তাঁর মৃত্যুর কারণ।’

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত মামুন পালিয়ে গেছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও জানান, মামুনকে মাদকের মামলায় গত ৫ মে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। ওই মামলায় ৪ জুন জামিনে বের হন তিনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।

আরো পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।

যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।

লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।

বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ