নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় বালিয়াপাড়া বাজার সেতুর কিছু অংশ ও প্রবেশপথ দখল করে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়েছে একটি চক্র। এতে এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীসহ পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব দোকান বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সেতুর ওপর অস্থায়ী দোকানে অন্তত সাতজন তালের শাঁস বিক্রি করেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা নাজিমউদ্দিন। তাঁর ভাষ্য, চটপটি ও ফুচকার দোকান রয়েছে দুটি। এগুলোর কারণে সেতুর ওপর ভিড় লেগে থাকে। প্রবেশ পথে বিস্কুট, নিমকিসহ শুকনা খাবারের দোকান রয়েছে। এতে যানজটে পথচারীদের ভোগান্তি ও দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ২০১৪ সালে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪২ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হয়। এতে ইদবারদী-ভূলতা-বালিয়াপাড়া সড়কে  যান চলাচল সহজ হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ  বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারী যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হয়।
সেতুর পাশেই বালিয়াপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, বাজারসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করেন। কিন্তু সেতুর ওপর ও প্রবেশপথে দোকান থাকায় শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারেন না। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
বালিয়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ মিয়া বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় সেতুর ওপর অবৈধভাবে দোকান-পাট গড়ে 
তোলা হয়েছে। এ কারণে সারাদিনই এলাকায় যানজট লেগে থাকে। আটকে থাকা গাড়ির হর্নে প্রচুর শব্দ হয়। কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে মানুষের কষ্ট বেড়েছে।
সেতুতে বসানো দোকানে বেচাকেনা ভালো হয় বলে জানান চটপটি ও ফুচকা বিক্রেতা জাকির হোসেন। তাঁর ভাষ্য, ‘এখানে সকালে চলে আসি, মধ্যরাতের দিকে চলে যাই। গাড়ি চলাচলে যাতে বিঘ্ন না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখি।’
স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান, আগে সেতু দখল করে অবৈধভাবে অটোস্ট্যান্ড গড়ে তুলেছিল। এক বছর আগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দখলকারীদের সরিয়ে দিয়েছে। এখন ১০ থেকে ১২টি ভ্রাম্যমাণ দোকান বসানো হয়েছে। এগুলো স্বাভাবিক যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাত হোসেন বলেন, সেতুর ওপর কোনো ধরনের দোকানপাট থাকা সমীচীন নয়। বালিয়াপাড়া সেতুর বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দখল করে দোকানপাট বসিয়ে চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ত র ওপর য নজট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ