সিরাজগঞ্জের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে প্রায় ১৭ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আজ শনিবার ভোর পৌনে ৬টা থেকে বাড়তে থাকে যানবাহনের চাপ। মূলদ সেতুর ওপর ও পশ্চিম দিকে ঝাউল ওভারব্রিজের অদূরে এনডিপি অফিসের সামনে আমবোঝাই ট্রাকসহ কয়েকটি যানবাহন বিকল হলে এ যানজট তৈরি হয়।

ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সেতুর পশ্চিম দিকের মহাসড়কের সয়দাবাদ গোলচত্বর থেকে সীমান্ত বাজার পর্যন্ত ঢাকা-উত্তরাঞ্চলগামী উভয় লেনে বিপুল পরিমাণ যানবাহন আটকা পড়ে। যানজট নিরসনে সেতু পশ্চিম থানা ও কড্ডা ট্রাফিক ফাঁড়ির পুলিশ ভোর ৬টা থেকে চেষ্টা চালায়। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো অপসারণে গিয়ে যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের দুটি ও জেলা পুলিশের একটি রেকার বিকল হলে যানজট ও দুর্ভাগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। যদিও সকাল সাড়ে ৯টার পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে থাকে। ঢাকা-উত্তরগামী যানবাহন চলাচল শুরু হলেও ঢাকার অভিমুখে দূরপাল্লার বাস ও ট্রাক থেমে থেমে চলতে থাকে।

এদিকে ঈদের ছুটি শেষে উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী পোশাক কারখানার কর্মীদের যাত্রা শুরু হয় শুক্রবার। ওই দিন দুপুর থেকেই যমুনা সেতুর পশ্চিমপাড়ের গোল চত্বর থেকে পূর্বদিকে টোল প্লাজা এবং পশ্চিম দিকের মুলিবাড়ী-কড্ডা পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার যানজট ও ধীরগতি দেখা যায়। শুক্রবার দিনভর যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খায় ট্রাফিক, জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ। 

গতদিনের যানজট শনিবার ভোর থেকে আছড়ে পড়ে। ভোর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে ভিড় জমায়। কিন্তু রেকার তিনটি বিকল হয়ে পড়ায় তারাও বিপদে পড়েন।

সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের প্রশাসনিক শাখার ইন্সপেক্টর মো.

মোফাখ্খারুল ইসলাম শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সমকালকে বলেন, সেতুর ওপর ও ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ইন্ডিপেন্ডের সামনে একটি আমের ট্রাকসহ কয়েকটি যানবাহন গত রাত থেকে বিকল হয়ে পড়ে। সেগুলো সরিয়ে যানবাহন সচল করতে গিয়ে ও সেতু বিভাগের তিনটি রেকার বিকল হয়ে যায়। রেখারগুলো ঠিকঠাক করে যানবহন আবার সচল করতে কিছুটা অতিরিক্ত সময় লেগে যায়। সাড়ে ৯টার পর উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন সচল হলেও ঢাকাগামী যানবাহন থেমে থেমে যাচ্ছে। সেতু, ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ মাঠে থাকলেও অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করা নিয়ন্ত্রণ করাটা দূর হয়ে পড়েছে। প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি আব্দুর রউফ বলেন, সেতুর পশ্চিম পাড়ে প্রায় ১৭ কিলোমিটার অংশে থেমে থেমে যানজট রয়েছে। সেতুর ওপরে এবং পশ্চিম দিকে কয়েকটি যানবাহন বিকল হওয়ায় ওই অবস্থার সৃষ্টি হয়। হাটিকুমরুল মোড়ে যান চলাচল সচল রয়েছে।

যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, শুক্রবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সেতুর ওপরে চারটি এবং পশ্চিম দিকে একটিসহ পাঁচটি গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। লোড গাড়ি সরাতে গিয়ে সেতু ও জেলা পুলিশের তিনটি রেকার বিকল হয়ে যায়। ভোর পাঁচটা থেকে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত গরমেও যানজটে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য নজট স র জগঞ জ স ত র ওপর র য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ