গ্রীষ্মকালীন টমেটোর বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক
Published: 14th, June 2025 GMT
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চলতি বছর ৩০০ একর জমিতে গ্রীষ্মকালীন উচ্চ ফলনশীল টমেটোর চাষ হয়েছে। উপজেলাজুড়ে টমেটোর বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক।
মাধবপুর কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবার উপজেলায় উন্নত জাতের টমেটো চাষ সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন কৃষকরা। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৩০০ একর জমিতে এই টমেটো চাষ করা হয়। অনুকূল আবহাওয়া
ও কৃষি বিভাগের সহায়তায় কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সবজি চাষিরা। কৃষকরা বলছেন, স্থানীয় বাজারে চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ সারাদেশে টমেটো পাইকারিভাবে সরবরাহ হচ্ছে প্রতিদিন।
জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর, চৌমুহনী, বহরা, শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের উঁচু ভুমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হচ্ছে। সাধারণত জানুয়ারি মাসের শেষে ও ফেব্রুয়ারির শুরুতে টমেটো চাষ করা হয়। ৬০-৭০ দিন পর টমেটো পাকতে শুরু করে। এবার সময় উপযোগী হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফসল উৎপাদন হয়েছে।
সরেজমিন উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের নোয়াহাটি বাজারে দেখা গেছে, কৃষকেরা প্রতিদিন সকালে ভ্যানে করে টমেটো নিয়ে বাজারে আসছেন। ভোর থেকেই চলছে বেচাকেনা। মানভেদে প্রতি কেজি টমেটো ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক বধু মিয়া জানান, একটু উঁচু জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো ভালো হয়। পাতলা পলিথিন বিছিয়ে মাটি ঢেকে টমেটোর চারা রোপণ করলে চারা নষ্ট হয় না। প্রথমে স্বল্প পরিসরে কৃষকরা টমেটোর চাষ করেছিল। লাভজনক হওয়ায় এখন অধিকাংশ কৃষক টমেটোর চাষ করছেন। বর্ষাকালে বৃষ্টির জলে সবজির আবাদ কম হয়। টমেটো গাছের তেমন ক্ষতি হয় না। প্রতি বিঘায় টমেটো চাষ করতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। সেখানে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি টমেটো বিক্রি করা যায়। খরচ বাদে প্রতি বিঘায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভ হয়।
নোয়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী শফিক মিয়া বলেন, খুচরা বাজারে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে টমেটো বিক্রি করছেন তারা। টমেটোর স্বাদ ভালো। তাই ভোক্তার কাছে চাহিদা বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব সরকার জানান, আগে কখনও গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষ হতো না। কৃষি প্রযুক্তির কারণে এখন দেখা মেলে টমেটোর।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: টম ট টম ট র চ উপজ ল র চ ষ কর ক ষকর
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যানবাহনের চাপ
ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতি পথে যমুনা সেতু-সংলগ্ন মহাসড়কে তীব্র যানজট। তাই অনেকে পাবনার কাজীরহাট ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন। কাজীরহাট-আরিচা ফেরিঘাটে ভোগান্তি ছাড়াই যানবাহন পারাপার হচ্ছে। আগের ৪টি ফেরির সঙ্গে আরও ২টি যুক্ত হওয়ায় এই নৌপথে মোট ৬টি ফেরি চলাচল করছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ও বাস কাউন্টারগুলোর সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে যানজট শুরু হয়। শুক্র ও গতকাল শনিবার যানজট তীব্রতর হয়। এর মধ্যে শনিবারের যানজটে পাবনা-ঢাকা পথে যাতায়াতকারী অনেক বাস আটকে পড়ে। এতে পাবনা, বেড়াসহ বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ঢাকাগামী বাসের সংকট দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকাগামী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়িগুলো যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথের ফেরি পারাপার বেছে নেয়। এতে আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কাজীরহাট ফেরিঘাটে ঢাকাগামী বিভিন্ন যানবাহনের চাপ আছে।
বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘আগে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে ৪টি ফেরি চলাচল করত। ঈদ উপলক্ষে এখন আরও ২টি ফেরি বাড়িয়ে মোট ৬টি ফেরি করা হয়েছে। এগুলো হলো ২টি রো রো ফেরি শাহ আলী ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এবং ৪টি সেমি রো রো ফেরি বাইগার, গৌরী, চিত্রা ও ধানসিঁড়ি। এই ৬টি ফেরি দিয়ে নির্বিঘ্নে যানবাহনের চাপ সামলানো যাচ্ছে। বাসসহ যানবাহনগুলোকে ফেরিঘাটে বেশি দেরি করতে হচ্ছে না।’
কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকামুখী আলহামরা পরিবহনের যাত্রী আবু হানিফ বলেন, ফেরিতে ওঠানামা মিলিয়ে আড়াই ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। আর আরিচা থেকে ঢাকা পর্যন্ত তেমন যানজট ছিল না। খুব ভালোভাবে ঢাকা পৌঁছাতে পেরেছেন। অথচ আরও দুই ঘণ্টা আগে রওনা দিয়েও তাঁর পরিচিত একটি পরিবারকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে ৫-৬ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়।
বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি চাপ ছিল শনিবার। আমাদের বেশ বেগ পোহাতে হলেও যানবাহনগুলো ভালোভাবে পার করে দিয়েছি। শনিবার আমাদের এই ঘাট হয়ে ফেরিতে ১০১টি বাস, ৪০১টি ছোট গাড়ি ও ৮০টি ট্রাক পার হয়েছে। আর আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৫টি বাস, ১৬টি ট্রাক, ৪২টি ছোট গাড়ি ও ২০০টি মোটরসাইকেল পার হয়েছে।’
বেড়া ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী আলহামরা পরিবহনের বেড়া শাখার ব্যবস্থাপক বরকত আলী বলেন, ‘যমুনা সেতুর যানজটে আমাদের কয়েকটি বাস এখনো আটকে আছে। এতে নির্ধারিত সময়ে শুধু আমাদের বাসই নয়, অন্য কোম্পানির বাসগুলোও ঢাকার উদ্দেশে ছাড়তে পারছে না। আর কোনো বাস ঢাকা থেকে বেড়া এসে পৌঁছানোর পর সেই বাস এখন থেকে আমরা কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। বতর্মান অবস্থায় এই পথে যাতায়াতে যাত্রীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।’