ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা মোটেও আশ্চর্যজনক ছিল না। রোববার ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটন এবং তেহরানের পুনরায় আলোচনা শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু এখন এই আলোচনা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী ওমান। খবর বিবিসির
বছরের পর বছর ধরে এই দুই আঞ্চলিক শক্তি ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। দায়িত্ব স্বীকার না করেই তারা একে অপরের সম্পদের ওপর হামলা করছে। তবে গত শুক্রবারের ইসরায়ের হামলায় এই সম্পর্ক এখন তলানিতে।
তবে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এই হামলাগুলো আরও তীব্র হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে এবং অক্টোবরে হামাস নেতা ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। ৭ অক্টোবরের হামলার মূল কারিগর বলা হয় তাদের।
এই দুটি গোষ্ঠী এই অঞ্চলে ইরানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তেহরান গত অক্টোবরে ইসরায়েলে ১৮০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার বেশিরভাগই প্রতিহত করা হয়েছে।
ইসরায়েল তাদের নিজস্ব বিমান হামলার মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সামরিক অভিযানগুলো কমে এসেছে।
ইসরায়েল বারবারই বলেছে ইরান তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি। অন্যদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইসরায়েলকে ‘ক্যান্সারযুক্ত টিউমার’ এর সাথে তুলনা করেছেন।
ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টায় চিন্তিত ইসরায়েল। তারা বলছে, বর্তমান অভিযানের লক্ষ্য তাদের সামরিক অবকাঠামো। যার মধ্যে পারমাণবিক অবকাঠামো সাইটগুলোও রয়েছে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করলেও অনেক পশ্চিমা দেশ বিশ্বাস করেনি। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইরানকে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া