ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিতে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বিধিবহির্ভূতভাবে ভবন নির্মাণের অভিযোগে সেতু কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদক। আজ রোববার বনানীর সেতু ভবনে এ অভিযান চালানো হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক এ তথ্য জানিয়েছে।

দুদক বলছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট অভিযানটি চালায়। এ সময় সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পের আওতায় পুনর্বাসন ভিলেজ নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করা ৪০ একর জমির মধ্যে ১ দশমিক ১৫ একর জায়গায় পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও কর্ণফুলী নামের চারটি ভবনে ২৮০টি ফ্ল্যাট সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে—এমন তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই জমি প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত ছিল। তাঁদের জন্য ইতিমধ্যে ১২টি ভবনে ১ হাজার ৩৪৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও কীভাবে সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য এই জমিতে সরকারি অর্থে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, অভিযানে দুদকের পক্ষ থেকে এই প্রশ্ন তোলা হয়।

দুদক জানায়, অভিযানের সময় সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সেতু ভবন থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আলোচনার ভিত্তিতে দুদক টিমের কাছে এটি অনৈতিক ও বিধিবহির্ভূত উদ্যোগ হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে। অভিযানে সংগৃহীত নথিপত্র পর্যালোচনা করে কমিশনের কাছে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

আরও পড়ুনসরকারি জমিতে সস্তায় ফ্ল্যাট নিয়েছেন সচিবেরা, তালিকায় কারা রয়েছেন১৪ জুন ২০২৫

এদিকে সরকারি জমিতে সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এহসানুল হককে। অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব।

তদন্ত কমিটি গঠনসংক্রান্ত আদেশ আজ রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। ১৪ জুন প্রথম আলোয় ‘সরকারি জমিতে সস্তায় ফ্ল্যাট নেন সচিবেরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনসরকারি জমিতে সস্তায় সচিবদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ তদন্তে কমিটি, কার্যক্রম স্থগিত৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিটের ভূমি অধিগ্রহণে জালিয়াতি, মামলার অনুমোদন

প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণের ৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৪১৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মো. রিয়াজ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুদকের ডেপুটি ডিরেক্টর আকতারুল ইসলাম (জনসংযোগ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-১) অধীন রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ মৌজায় ডিপো এক্সেস করিডোর নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। জালিয়াতির মাধ্যমে মো. রিয়াজ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তার ভূমি অধিগ্রহণের নামে সরকারি কোষাগার থেকে ৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৪১৮ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ফেনীতে ছাত্র হত্যা: শেখ হাসিনাসহ ২২১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

নূরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, ১২ বছর পর তোলা হলো আবু বকরের দেহাবশেষ

দুদক জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি রিয়াজ সংশ্লিষ্ট জমির মূল দলিল হারিয়ে গেছে মর্মে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানায় পাঁচটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে তিনি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ওই দলিলগুলোর সার্টিফায়েড কপি উত্তোলন করে ভূমি অধিগ্রহণ অফিসে জমা দেন এবং ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলন করেন।

শুধু তাই নয়, ওই রিয়াজের বিরুদ্ধে বড় ধরনের প্রতারণার প্রমাণও পেয়েছে দুদক। সে তার জমি ইতোপূর্বে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (সোনালী ব্যাংক) কাছে বন্ধক রাখে এবং বন্ধকী দলিল এখনো কার্যকর রয়েছে।

প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করায় মো. রিয়াজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় মামলার অনুমোদন করা হয় বলে দুদক জানায়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ