সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ট্রাকচালকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার টুকেরবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর প্রায় দুই ঘণ্টা সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়কে ট্রাক রেখে অবরোধ করেন ট্রাকচালকেরা। এতে দুর্ভোগে পড়েন সড়কে চলাচলকারী পর্যটক ও সাধারণ যাত্রীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধ তুলে নিতে ট্রাকচালক ও শ্রমিকদের থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর অবরোধ প্রত্যাহার করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জের টুকেরবাজার হয়ে সিলেটের দিকে যাচ্ছিল একটি ট্রাক। তখন একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা টুকেরাবাজার এলাকার সড়কের ওপর রাখা ছিল। ট্রাকচালক অটোরিকশাটি সড়কে রাখতে নিষেধ করলে চালকদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হাতাহাতি থেকে দুই পক্ষের চালকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে এক ট্রাকচালক ও এক অটোরিকশাচালক আহত হন।

এ ঘটনায় ট্রাকচালকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়কের টুকেরবাজার এলাকায় ট্রাক রেখে সড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ভোলাগঞ্জগামী যাত্রীবাহী বাস, পর্যটকবাহী মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং ভোলাগঞ্জের দিক থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার টুকেরবাজার এলাকায় আটকে যায়। ট্রাকচালক ও শ্রমিকেরা এ ঘটনায় মামলা না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, যানজটে আটকে পড়া লোকজনের বেশির ভাগই কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর ঘুরতে গিয়েছিলেন। পথে যানজটে আটকে পড়ে তাঁরা ভোগান্তির শিকার হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। অবরোধ তুলে নিতে পুলিশ ট্রাকচালক ও শ্রমিকদের থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বলেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নিয়াজ মোহাম্মদ শরিফ প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাকচালককে মারধরের অভিযোগে থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগটি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, অভিযোগ দেওয়ার পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ট্রাকচালক ও শ্রমিকেরা। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ট ক রব জ র ব জ র এল ক অবর ধ সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’

পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।

এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ