র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট সংকটের কারণে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা ভাইরাস পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে কিট শেষ হয়ে গেলে পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে সকালে পরীক্ষায় মো. হারুন নামের একজনের করোনা শনাক্ত হয়। এ নিয়ে গত ৪ দিনে খুলনায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪ জনে। এর মধ্যে ৩ জনের বাড়ি খুলনা নগরীর বয়রা এলাকায়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকালপারসন ডা.

খান আহমেদ ইশতিয়াক জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে মো. হারুন নামের এক রোগীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে। তিনি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিবেন। হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সুমাইয়া আক্তার সুস্থ হওয়ায় তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে করুনা বেগম নামের একজন ভর্তি আছেন।

তিনি আরও জানান, করোনা পরীক্ষার কিট শেষ হয়ে যাওয়ায় দুপুর ১টার পর থেকে করোনা পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব বিকল থাকায় সেখানে পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। জরুরিভাবে কিট চেয়ে কয়েক দফা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিট পাওয়া মাত্র পুনরায় পরীক্ষা শুরু হবে। আপাতত উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ন র প র দ র ভ ব ম ড ক ল কল জ পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ঘাড়ে, বুকে, হাতে গরম কিছু এসে লাগল, লুটিয়ে পড়েছিলাম মাটিতে’

চারদিকে গুলির শব্দ। শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ছত্রভঙ্গ হয়ে দিগ্‌বিদিক ছুটছিলেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আচমকাই শরীরে তীব্র একটা ঝাঁকুনি অনুভব করেন খালেদ মাহমুদ। বুঝে ওঠার আগেই লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। জামাও ভিজে যায় রক্তে। সেই চিত্র আজও চোখে ভাসে তাঁর।

গত বছরের ৪ আগস্টের ঘটনা এটি। সেদিনের ঘটনার পর এক বছর কেটে গেছে। তবে সেদিনের যন্ত্রণা শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন খালেদ। এখনো তাঁর শরীরে রয়েছে সাতটি গুলি। বাঁ হাত ও ডান পা অচল। হুইলচেয়ারে বসেই করেন চলাফেরা।

সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচিতে লক্ষ্মীপুর শহরে অবস্থান নিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা–কর্মীরা বাড়ির ছাদ থেকে গুলি ছুড়তে শুরু করেন। টানা ছয় ঘণ্টা ধরে চলা এ হামলায় নিহত হন চার শিক্ষার্থী। গুলিবদ্ধ হন শতাধিক। ২০ বছর বয়সী খালেদ তাঁদের একজন।

খালেদ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রুহিতা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। সেদিনের ঘটনার কথা মনে করলে কেঁপে ওঠেন তিনি। প্রথম আলোকে খালেদ বলেন,‘সাড়ে চারটার দিকে হঠাৎ আমার বুক, ঘাড়, হাত—সব জায়গায় একসঙ্গে গরম কিছু এসে লাগল। তীব্র ব্যথায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। হাত-পা বাঁকা হয়ে যাচ্ছিল। পাশে অনেকে চিৎকার করছিল। কেউ চ্যাংদোলা করে, কেউ রিকশায় তুলে নিয়ে যাচ্ছিল আহতদের।’

খালেদ জানান, তাঁর শরীরে ১০টি গুলি লাগে। এর মধ্যে একটি গুলি শরীর ভেদ হয়ে বের হয়ে যায়। পরে অস্ত্রোপচার করে একটি গুলি লিভার থেকে বের করা হয়। আরেকটি বের করা হয় পেট থেকে। বাকি সাতটি শরীরে রয়ে গেছে।

সেদিনের ঘটনার পর দীর্ঘ দেড় মাস তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তবে স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারেননি। বাড়িতেই এখন তাঁর চিকিৎসার কার্যক্রম চলছে। প্রতিদিন তাঁর চলাফেরার জন্য পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা লাগে। নিজের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে খালেদ বলেন, ‘সেদিন শুধু আমার শরীরে নয়, আমাদের ভবিষ্যতেও গুলি লেগেছিল। আমি দেশের তরুণদের জন্য আওয়াজ তুলেছিলাম, কোনো অপরাধ করিনি। এখন সাতটা গুলি শরীরে নিয়ে বেঁচে আছি, কিন্তু জীবন আর আগের মতো নেই।’

খালেদের চিকিৎসার ব্যয় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে তাঁর পরিবার। জানতে চাইলে বাবা শাহীন কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল। পড়াশোনায় ভালো ছিল। গুলি খেয়ে এখন পঙ্গু হয়ে গেছে। চিকিৎসা চালাতে ধারদেনায় ডুবে গেছি। সরকার যদি না দেখে ছেলেোকে কীভাবে বাঁচাব? সে তো কোনো সন্ত্রাসী নয়। দেশকে ভালোবাসত।’

লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, খালেদের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। একজন তরুণ ছাত্রকে এভাবে কষ্ট করতে দেখা মর্মান্তিক। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে সহায়তা দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আবুল হাসানকে নিয়ে নতুন গল্পগাছা ও পূর্বাপর
  • সরকারের কাছ থেকে ভোট আদায় করেই ছাড়ব: মির্জা আব্বাস
  • অচলায়তন ভেঙে সক্রিয় হওয়ার অপেক্ষায় কোয়াব
  • রক্তাক্ত ৪ আগস্ট: ফেনীতে গুলিতে ঝরে যায় ৭ তরুণের প্রাণ
  • হাতকড়াসহ নৌকা থে‌কে হাওরে ঝাঁপ দি‌য়ে আওয়ামী লীগ নেতার পলায়ন
  • ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা: সাদিক কায়েম
  • সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে হেড-নেক ক্যানসার নিরাময় সম্ভব
  • কন্যা ফাতিমাকে নবীজির ৫ উপদেশ
  • ‘ঘাড়ে, বুকে, হাতে গরম কিছু এসে লাগল, লুটিয়ে পড়েছিলাম মাটিতে’
  • চিকুনগুনিয়ার ছোবল: সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে