যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইউসুফ হোসেন (৪২) নামের আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় নতুন করে দুজনের মৃত্যু হলো।

ইউসুফ হোসেন মনিরামপুর উপজেলার মাহমুদকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। অন্যদিকে এর আগে গতকাল সকালে করোনায় বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ আমির হোসেনের (৬৮) মৃত্যু হয়। তিনিও যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ছাড়া করোনা সন্দেহে তিন রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুনযশোরে তিন বছর পর করোনায় একজনের মৃত্যু২১ ঘণ্টা আগে

এসব তথ্য নিশ্চিত করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হুসাইন শাফায়েত জানান, মৃত্যুর মাত্র দুই ঘণ্টা আগে পরীক্ষায় ইউসুফের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। গতকাল মারা যাওয়া ওই দুজনই হাসপাতালে সাধারণ রোগী হিসেবে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। উপসর্গ দেখে সন্দেহ হলে শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে তাঁদের পরীক্ষা করানো হয়।

জেলায় করোনা পরীক্ষার কিটের ঘাটতি থাকায় বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালের র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এ বিষয়ে হোসাইন সাফায়েত বলেন, করোনা পরীক্ষার কিছু কিট আছে, কিন্তু সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। কিটের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে দুই হাজার কিট হাতে পাওয়া যেতে পারে।

এদিকে করোনা পরীক্ষার জন্য যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) আরটিপিসিআর ল্যাব নতুনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে উপাচার্য আবদুল মজিদ জানান, স্বাস্থ্য বিভাগকে কিট সরবরাহের জন্য বলা হয়েছে। সেগুলো পাওয়া গেলে ল্যাবে কোভিড পরীক্ষা শুরু করতে পারবেন তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোবাসের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার মিরপুরে গুলি ছুড়ে টাকা ছিনতাইয়ে জড়িতরা

রাজধানীর মিরপুরে প্রকাশ্যে গুলি ছুড়ে ও ছুরিকাঘাত করে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীর ২১ লাখ টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা লুটে জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সূত্র ধরে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জাফর (৩৩), মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), সৈকত হোসেন ওরফে দিপু মৃধা (৫২), সোহাগ হাসান (৩৪), জলিল মোল্লা (৫২) ও পলাশ আহমেদ (২৬)। মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা গত ২৪ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকায় গুলি করে ৫০ ভরি স্বর্ণ লুট এবং গত ২০ অক্টোবর সাত মসজিদ রোড ধানমন্ডি থানা এলাকায় গুলি করে ৫২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, গত ২৭ মে সকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক রাসেল ও তার ভগ্নিপতি জাহিদুল হক চৌধুরী তাদের মিরপুর-১১ নম্বরের সি-ব্লকের বাসা থেকে একটি কালো ব্যাগে ব্যবসার ২১ লাখ টাকা ও বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের (মিরপুর ১০ নম্বর) উদ্দেশে হেঁটে রওনা হন। তারা সকাল আনুমানিক ৯টা ৪০ মিনিটে শেরেবাংলা ন্যাশনাল স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝের গলির মাথায় পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে চারটি মোটরসাইকেলে ওত পেতে থাকা অজ্ঞাতপরিচয় ৭-৮ জন মাস্ক পরা দুর্বৃত্ত তাদের পথরোধ করে। তাদের একজন জাহিদুল হক চৌধুরীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তার হাতে থাকা টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। জাহিদুল হক এবং তার শ্যালক রাসেল ডাকাত দলকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে মুখোশধারী একজন ফাঁকা গুলি করে ভীতির সৃষ্টি করে এবং অপর একজন ধারালো চাপাতি দিয়ে জাহিদুলের কোমরের বাম পাশে আঘাত করে। চাপাতির আঘাতে জাহিদুল গুরুতর জখম হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা টাকার ব্যাগটি নিয়ে মোটরসাইকেলে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে মিরপুর-১ নম্বরের দিকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনাটি একজন পথচারী তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করলে তা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় জাহিদুল হক চৌধুরীর অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা হয়। 

ডিবি সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ডিবির একাধিক টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন, জড়িতদের গ্রেপ্তার, ব্যবহৃত অস্ত্র ও গাড়ি উদ্ধারের লক্ষ্যে মাঠে নামে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির টিম ঘটনায় ব্যবহৃত একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস শনাক্ত করে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে মাইক্রোবাসটির চালক জাফরকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাফর মাইক্রোবাসটি ডাকাতির কাজে ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন। ডিবি টিম তার দেওয়া তথ্য মতে গাজীপুর টঙ্গী এলাকা থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করে।

ডিবি সূত্র আরও জানায়, তথ্যপ্রযুক্তির চূড়ান্ত বিশ্লেষণে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির একাধিক টিম একইসঙ্গে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও যশোর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ডাকাতদলের মূল পরিকল্পনাকারী জলিল মোল্লাসহ অপরাপর সদস্য মোস্তাফিজ, পলাশ, দিপু ও সোহাগকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত পাঁচ লাখ তিন হাজার টাকা ও ১০৬ টি বিভিন্ন মানের বৈদেশিক মুদ্রা, দুই লাখ ১২ হাজার টাকা মানের জাল নোট এবং ঘটনায় ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি চাপাতি এবং তিনটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা পেশাদার ডাকাত এবং তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, খুন, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারসহ অবশিষ্ট মালামাল উদ্ধারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম কারাগারে 
  • নগদের কোটি টাকা লুটের ঘটনায় সাবেক সেনা ও পুলিশ সদস্য জড়িত
  • চাকরিচ্যুত পুলিশ ও সেনা সদস্যের নেতৃত্বে উত্তরায় লুট হয় কোটি টাকা
  • হলুদের সাপ্লিমেন্ট খেলে কি লিভারের ক্ষতি হয়
  • বিদেশ থেকে ফেরার সময় বিনা শুল্কে মোবাইল, ল্যাপটপ, ফ্রিজ-টিভিসহ ১৯টি পণ্য আনতে পারবেন
  • ইরানিরা নিজের বাড়ির ছবি শেয়ার করছেন
  • ডি ব্রুইনা চলে যাওয়ায় ম্যানচেস্টার সিটির নতুন অধিনায়ক কে হলেন
  • অস্কার পাচ্ছেন টম ক্রুজ
  • মাইক্রোবাসের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার মিরপুরে গুলি ছুড়ে টাকা ছিনতাইয়ে জড়িতরা