Samakal:
2025-06-20@00:21:37 GMT

কালাপাহাড় পালিয়েছে

Published: 19th, June 2025 GMT

কালাপাহাড় পালিয়েছে

কালাপাহাড় রুদ্ধশ্বাসে দৌড়াচ্ছে। সামনে যাকে পাচ্ছে তাকেই আক্রমণ করছে। তার শিংয়ের গুঁতোয় ঈদের জামাত ফেরত দুজন মানুষ ইতোমধ্যে আহত। একজনের মাথা ফেটে গেছে। অন্যজন কোমরে ব্যথা পেয়েছে। কালাপাহাড়ের শিংয়ের গুঁতোয় রাস্তার পাশে আক্কাস মিয়ার দোকান ক্ষতিগ্রস্ত। দোকানদার আক্কাস মিয়া এলাকার মসজিদে ঈদের নামাজ পড়ে এসে সবেমাত্র খুলেছে দোকানের ঝাঁপ। তখনই দেখতে পায় কালো রঙের একটি গরু তার দোকানের দিকেই রুদ্ধশ্বাসে দৌড়ে আসছে। পেছনে চার-পাঁচজন মানুষ গরুটি ধরার চেষ্টা করছে। আক্কাস মিয়ার বুঝতে অসুবিধা হলো না এটি তারই কোরবানির গরু। সাত ভাগের এক ভাগ কিনেছে আক্কাস মিয়া। ঢেলাপীরের হাট থেকে গরু কেনার সময় কোরবানির ভাগের অন্য শরিকদের সঙ্গে সেও ছিল। গেরস্থের পালা গরু। নাম কালাপাহাড়। গেরস্থ রহিমুদ্দি গরু বিক্রির টাকা বুঝে পেয়ে হঠাৎ আবেগাপ্লুত হয়ে বলে– গরুটা বাহে আদর সোহাগ সউগ বুঝে। গরুটার যত্ন নিবেন বাহে। 
আক্কাস মিয়া, মফিজুর, হান্নান শেখ, মফিজুরের বড় ছেলে জুলহাস, মফিজুরের কাজের ছেলে রুস্তম কালাপাহাড়কে হাঁটিয়ে নিয়ে সৈয়দপুর শহরে এলো। বাঁশবাড়ি এলাকায় মফিজুরের বাড়িতেই কালাপাহাড়কে রাখা হলো। গরু যা খায় যেমন ঘাস, খইল, ভুসির ব্যবস্থা আগে থেকেই করা ছিল। গ্রামের মানুষ রুস্তম গরুর খাওয়াদাওয়া, যত্ন-আত্তির ব্যাপারটা বেশ ভালো করেই জানে। কাজেই সবাই নিশ্চিন্ত হলো কালাপাহাড়ের যত্ন-আত্তির ব্যাপারে কোনো সমস্যা হবে না। রাতে সাত ভাগের পাঁচ শরিকের মধ্যে একটি বৈঠকও হলো। স্থানীয় মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের প্রথম জামাত। এর পরই সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে কোরবানির ব্যবস্থা করা হবে। গরু জবাই করার জন্য ‘হুজুরকে’ও বলা হলো। হুজুর কথা দিলেন মসজিদে ঈদের নামাজ পড়েই কালাপাহাড়কে জবাই করতে আসবেন। সবই তো বৈঠকের কথামতোই চলছে। কিন্তু কালাপাহাড় এভাবে খেপল কেন?
কালাপাহাড় বিপুল শক্তি নিয়ে সামনের দিকে দৌড়ে আসছে। কসাই রমজান, তার দুজন সহযোগীর সঙ্গে জুলহাস, রুস্তম কালাপাহাড়ের পেছনে দৌড়াচ্ছে। কালাপাহাড়কে থামানোর জন্য আক্কাস মিয়া সাহস  নিয়ে সামনে দাঁড়াল। তার সঙ্গী হলো এলাকার আরও কয়েকজন। পরিস্থিতি দেখে মনে হলো কালাপাহাড়ের আর রেহাই নাই। ধরা তাকে পড়তেই হবে। কালাপাহাড় যাতে ভয় পায় সেজন্য সামনে-পেছনে সবাই ধর ধর বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দিল। 
কিন্তু এতে কাজ হলো না। সবার চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে কালাপাহাড় আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠল। আগের চেয়ে আরও বেশি শক্তি দেখিয়ে দৌড়াতে শুরু করল। আক্কাস মিয়াসহ অন্যরা বাধা দিতে গিয়ে পারল না। দোকানের সামনের অংশে গুঁতা দিয়ে দোকান বন্ধ করার ঝাঁপ মাথায় নিয়ে সাইক্লোনের গতিতে দৌড়াতে থাকল কালাপাহাড়। আক্কাস মিয়া আহত হয়েছে। তার কপাল ফেটে গেছে। কসাই রমজানের দুই সহযোগীর একজনের সামনের সারির একটা দাঁত ভেঙে গেছে। মুখ থেকে গলগল করে রক্ত পড়ছে। অন্য সহযোগী তাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। জুলহাস, রুস্তমসহ আরও কয়েকজন কালাপাহাড়কে ধরার জন্য সামনের দিকে দৌড়াতে থাকল। ডান হাত দিয়ে ফাটা কপাল চেপে ধরে কসাই রমজানও তাদের পিছু নিল। 
কিন্তু কালাপাহাড়কে পাওয়া গেল না। মূল সড়কে উঠে গিয়েছিল কালাপাহাড়। তার দৌড় যেন থামেই না। রাস্তায় অনেকেই কালাপাহাড়কে ধরার চেষ্টা করেছে। ধরতে পারেনি। কালাপাহাড়ের শিংয়ের গুঁতোয় বড় রাস্তায়ও কয়েকজন আহত হয়েছে। মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত একজনকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুজনের দাঁত ভেঙে গেছে। তবুও কালাপাহাড়কে কেউ ধরতে পারল না। জুলহাস, কসাই রমজান, রুস্তমসহ অন্যরা বিধ্বস্ত চেহারা নিয়ে ফিরে এলো বাঁশবাড়ি এলাকায়। মফিজুরের বাড়িতে বৈঠক বসল। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে এতক্ষণে কালাপাহাড়ের গোশত দিয়ে ভাত অথবা পোলাও খেতো সবাই। অথচ বিরস বদনে সবাই বসে, দাঁড়িয়ে আছে। মফিজুরের নাতি অর্থাৎ জুলহাসের শিশুপুত্র অনিক বারবার মফিজুরকে প্রশ্ন করছে, দাদু আমাদের কোরবানি হবে না? ও দাদু বলো না। আমাদের কোরবানি হবে না? চুপ করে আছো কেন? বলো না। মফিজুর কোনো জবাব দিচ্ছেন না। জুলহাস ছেলেকে মৃদু ধমক দিল, অনিক একই প্রশ্ন বারবার করছো কেন? সিচুয়েশন বুঝো না? দেখতেছো না আমাদের কোরবানির গরু হারিয়ে গেছে। 
বাবার বকা খেয়ে অনিক কাঁদতে কাঁদতে বলল– অন্যদের কোরবানির গরু তো হারায় না। আমাদেরটা হারাল কেন? তোমরা পচা, আমি তোমাদের সঙ্গে কথা বলব না। 
কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির ভেতরে চলে গেল অনিক। মফিজুর সবার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়লেন– এখন কোরবানির কী হবে? ঈদের দিন কোথাও কি গরুর হাট বসে?
কসাই রমজান বলল– ঈদের দিন গরুর হাট কীভাবে সম্ভব? 
মফিজুর প্রশ্ন করল– তাহলে আমাদের করণীয় কী? কোরবানির গরু তো হারিয়ে গেল। আমাদের কোরবানি কি জায়েজ হবে?
কেউ কোনো উত্তর দিল না। কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক ভেঙে গেল। 
শেষ রাতের দিকে একটা স্বপ্ন দেখলেন মফিজুর। অদ্ভুত স্বপ্ন। কালাপাহাড় ফিরে এসেছে। মানুষের মতো কথা বলছে। 
কালাপাহাড় হারিয়ে যাবার পর সংক্ষিপ্ত বৈঠক শেষে সবাই যে যার মতো চলে যাবার পর পরিবারের সদস্যদের মারমুখি প্রশ্নের মুখোমুখি হয় মফিজুর। প্রথমে স্ত্রী সালেহার প্রশ্ন– কোরবানির গরু হারায় কীভাবে? নিশ্চয়ই কসাইরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেনি। অন্যের কোরবানির গরু তো পালায়নি? আমাদেরটা পালাল কেন?
জুলহাসের বউ হাসনাহেনা বলল– আব্বা কোরবানির গরু হারিয়ে যাওয়া ভালো লক্ষণ নয়। আপনি এক কাজ করেন একটা ছাগল হলেও কোরবানি দেন। 
হাসনাহেনার কথাটা মনে ধরে মফিজুরের। গ্রামের বাড়িতে কেয়ারটেকার গোলজারকে ফোন করেন। সব শুনে গোলজার এক ঘণ্টার ব্যবধানে একটা ছাগল নিয়ে হাজির হয়। হুজুরকে বলা ছিল। তাই খবর পেয়ে রক্তাক্ত ছুরি নিয়ে হাজির হন হুজুর। ছাগল কোরবানি দেন মফিজুর। পরিবারের সবাই মোটামুটি শান্ত। কিন্তু কালাপাহাড়কে নিয়ে কথা যেন থামে না। এত মানুষ থাকতে একটা গরু কীভাবে হারায়? কসাই নিশ্চয়ই সঠিক দায়িত্ব পালন করেনি। শহরের এত মানুষের চোখ ফাঁকি দিয়ে একটা গরু হারিয়ে গেল? কেউ কেউ মন্তব্য করল– গরু হারায়নি। দুষ্ট প্রকৃতির কোনো মানুষ নিশ্চয়ই গরুটাকে ধরেছে। তারপর কৌশলে গরুটাকে হাওয়া করে দিয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত দুষ্ট প্রকৃতির মানুষের ব্যাপারেই ব্যাপক আলোচনা হলো। 
রাত একটা কি দেড়টার দিকে ঘুমাতে যান মফিজুর। ভোরের আজানের কিছু আগে স্বপ্নটা দেখেন। কালাপাহাড় ফিরে এসেছে। বাড়ির সামনে একা দাঁড়িয়ে আছে। মফিজুর দৌড়ে তার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। কালাপাহাড় বলল– আপনাদের একটা বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়েছি। আমাকে মাফ করবেন। মফিজুর যারপরনাই অবাক হয়ে বললেন– তুমি মানুষের মতো কথা বলছো কীভাবে? 
কালাপাহাড় বলল– আপনি ভুল করছেন। আমি মানুষের ভাষায় কথা বলছি না। আমি গরুদের ভাষায় কথা বলছি। আপনি ভালো মানুষ তাই আমার কথা বুঝতে পারতেছেন। আমার ব্যাপারে আপনারা একটা ধারণা তৈরি করেছেন। ধারণাটা ঠিক না। ব্যাপারটা ক্লিয়ার করার জন্য আমি আপনার কাছে আসছি। আপনাদের ধারণা, আমি কোরবানির ভয়ে পালাইছি। কথা ঠিক না। আমি পালাই নাই। কোরবানির নামে আপনারা যে ভণ্ডামি শুরু করছেন, তার প্রতিবাদ করার জন্য আমি এসেছি।  
মফিজুর যারপরনাই অবাক হয়ে কালাপাহাড়ের কথা শুনছিলেন। কোরবানির নামে ভণ্ডামি কথাটা শুনেই বললেন, কোরবানির নামে ভণ্ডামি? এসব কী বলতেছ তুমি? 
কালাপাহাড় এবার প্রশ্ন করল– কোরবানির অর্থ কী, আপনি বলেন তো? 
মফিজুর অর্থটা জানেন। অথচ তা প্রকাশ করতে গিয়ে হঠাৎ যেন দ্বিধায় পড়ে গেলেন। কালাপাহাড় বলল, কোরবানি অর্থ হলো ত্যাগ। নিজের লোভ-লালসা বিসর্জন দেওয়া। আপনারা আমাদের পশু বলেন। আপনাদের কাছে আমরা অত্যন্ত নিকৃষ্ট প্রাণী। কাউকে ছোট করতে হলে বলেন, পশুর মতো আচরণ করবি না। তার মানে পশুরা খারাপ। সেই পশুকেই কোরবানি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এজন্য কিছু শর্তও আছে। পশুটি হতে হবে গৃহপালিত। যার প্রতি আপনার মায়া জন্মাবে। যার প্রতি মায়া জন্মায়, সে-ই প্রিয় হয়ে ওঠে। এই যে আপনারা আমাকে ঢেলাপীরের হাট থেকে কিনে আনলেন, কে কতটুকু মায়া দেখাইছেন? বলেন? আমাকে আপনার বাড়িতে আনার পর আমার শরীর নিয়ে শুরু হলো গবেষণা। কয় মণ মাংস হবে, মাংস খেতে কেমন হবে? নানা প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু হলো। পাশের বাড়ির কোরবানির গরুটির সঙ্গেও আমার তুলনা শুরু হয়ে গেল। ঘটনা আরও আছে। সবাই কি পশু কোরবানির যোগ্যতা রাখে? আপনারা পাঁচজন মানুষ সাত ভাগের জন্য আমাকে কোরবানি দেবেন? এদের মধ্যে ক’জন সততার সঙ্গে জীবন চালায়? আপনাদের মধ্যে একজন চাকরিজীবী আছেন। ঘুষ ছাড়া ফাইলে সই করেন না। একজন ব্যবসায়ী আছেন। প্রকাশ্যে জিনিসপত্রে ভেজাল দেন। একজন উঠতি রাজনীতিবিদ আছেন। যার কাজই হলো রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে অর্থ আদায় করা। এই যে আপনি তাদের সঙ্গে কোরবানি দিচ্ছেন, এই কোরবানি কি জায়েজ হবে? বলেন?
এবার আমার প্রতিবাদের মূল কারণটা বলি। ঢেলাপীরের হাটের কথা মনে আছে? আমার মনিব যখন আপনাদের কাছে আমাকে বিক্রি করে, তখন কী বলেছিলেন? গরুটা বাহে আদর সোহাগ সউগ বুঝে। গরুটার যত্ন নিবেন বাহে। আপনারা কি সেই অর্থে আমার যত্ন নিয়েছেন? মায়া দেখাইছেন? যত্ন তো দূরের কথা, ভালোমতো খেতেও দেননি। কোরবানির আগে আপনাদের বজ্জাত কসাইটা কী করল? আমার পাছায় হঠাৎ একটা লাত্থি দিয়া বলল– চল রে কালাপাহাড় চল। এটা কি সে ঠিক করেছে? হলাম না হয় গরু? একটা প্রাণী তো। একটু পরে আমাকে জবাই করবেন। একটু আদর করলে কী এমন ক্ষতি হতো? আপনিই বলেন? 
কালাপাহাড়ের কথা শুনে শুধু অবাক নয়, বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মফিজুর। মসজিদে ফজরের নামাজের আজান হচ্ছে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। মফিজুর বুঝতে পারলেন এতক্ষণ যা ঘটেছে তা ছিল স্বপ্ন। এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? বিছানা থেকে নেমে বাথরুমে গিয়ে অজু করলেন। তারপর জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ শুরু করলেন। ততক্ষণে আকাশ ফর্সা হয়ে গেছে। নামাজ শেষে মোনাজাত ধরলেন মফিজুর। ইয়া মাবুদ, ইয়া পরওয়ার্দেগার, তোমার মহিমা বুঝা দায়। আমি গুনাহগার বান্দা তোমার দরবারে দুই হাত তুলেছি। আমার সকল অপরাধ ক্ষমা করে দিও। আমাদের কোরবানির গরুকে স্বপ্নে দেখলাম। এই স্বপ্নের আসল অর্থ কী, আমার জানা নেই। কোরবানিতে কোনো ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমা করে দিও মাবুদ .

.. 
বাইরে শোরগোল শোনা যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে কোনো একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে অনেক মানুষ একত্রিত হয়েছে। এত সকালে কী এমন ঘটল যে এত মানুষের ভিড় শুরু হয়েছে। মোনাজাত শেষ করে বাড়ির বাইরে এসে দাঁড়ালেন মফিজুর। চোখের সামনে যা দেখছেন তা যেন অবিশ্বাস্য। এও কি সম্ভব? ডান হাত দিয়ে বাম হাতে চিমটি কাটলেন। হ্যাঁ, ঘটনা সত্য। কালাপাহাড় সত্যি সত্যি ফিরে এসেছে। সঙ্গে তার মনিব রহিমুদ্দি। 
রহিমুদ্দি কালাপাহাড়কে দেখিয়ে কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে বলল, স্যার, অবলা প্রাণী হইলে কী হবে। আদর সোহাগ সউগই বুঝে। ঈদের দিন সন্ধ্যা হয় হয় অবস্থা। হঠাৎ দেখি কালাপাহাড় হামার বাড়িত হাজির। হামরা সগায় তো অবাক। আমার পরিবার (স্ত্রী) কালাপাহাড়কে নিজের সন্তানের মতো আদর করে, ভালোবাসে। সে কালাপাহাড়কে বুকে জড়ায়ে ধরল। তারপর গরুটা বাহে শান্ত হইল। রাইতেই হামরা স্বামী স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলাম কালাপাহাড়কে আপনাদের কাছে ফিরি দেমো। কিন্তু আপনাদের ঠিকানা তো জানি না। অনেক কষ্টে আপনার ঠিকানা পাওয়া গেল। স্যার আপনার আমানত ফেরত নেন। 
মফিজুর কী বলবেন ভেবে পাচ্ছেন না। এও কি সম্ভব? রাতের স্বপ্নদৃশ্য মনে পড়ল। কালাপাহাড় অনেক প্রশ্ন করেছে তাকে। এখন সে শান্ত। যেন কিছুই হয়নি। কিন্তু তার করা প্রশ্নগুলো মফিজুরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাল। পালাবার পথ খুঁজছেন মফিজুর। কিন্তু পালাবার পথ নেই। কালাপাহাড়ের মতো অসংখ্য কোরবানির গরু তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কী ভয়ংকর দৃশ্য। সত্যি ভয়ংকর... v 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গল প আপন দ র র জন য র যত ন স মন র র স মন মসজ দ আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশ থেকে ফেরার সময় বিনা শুল্কে মোবাইল, ল্যাপটপ, ফ্রিজ-টিভিসহ ১৯টি পণ্য আনতে পারবেন

বিদেশ থেকে আসার সময় যাত্রীরা নিজের ছেলেমেয়ে, স্ত্রী, মা-বাবাসহ আত্মীয়স্বজনের জন্য নানা ধরনের উপহারসামগ্রী আনেন। আবার গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও নিয়ে আসেন তাঁরা। এ জন্য সরকার ব্যাগেজ রুল সুবিধা দেয়।

১৯ ধরনের পণ্য বিনা শুল্কে এবং ১১ ধরনের পণ্য শুল্ক–কর পরিশোধ করে আনা যায়। এ জন্য কোনো ঋণপত্র (এলসি) খুলতে হবে না। ব্যাগেজ রুলের আওতায় বিদেশ থেকে ফেরার সময় আনা যাবে ওই সব পণ্য।

সরকার দু-এক বছর পর পর ব্যাগেজ রুলে পরিবর্তন আনে। এবারের বাজেটেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বিনা শুল্কে যা আনা যাবে

১২ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী একজন যাত্রী ৬৫ কেজি ওজনের ব্যাগেজ শুল্ক-কর ছাড়া খালাস করতে পারবেন। তবে ১২ বছরের নিচের বয়সী যাত্রী ৪০ কেজি ব্যাগেজ বিনা শুল্কে খালাস করতে পারবে।

বিনা শুল্কে যে ১৯ ধরনের পণ্য আনা যাবে। এ পণ্যের তালিকায় আছে দুটি ব্যবহৃত মুঠোফোন; একটি নতুন মোবাইল ফোন; ১৫ বর্গমিটার আয়তনবিশিষ্ট কার্পেট; ২৯ ইঞ্চি পর্যন্ত টেলিভিশন; ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ; কম্পিউটার স্ক্যানার; প্রিন্টার; ভিডিও ক্যামেরা; স্টিল বা ডিজিটাল ক্যামেরা; ওভেন ও মাইক্রোওয়েভ ওভেন; রাইস কুকার, প্রেসার কুকার, গ্যাস ওভেন; টোস্টার, স্যান্ডউইচ মেকার, ব্লেন্ডার, ফুড প্রসেসর, জুসার, কফি মেকার; সেলাই মেশিন; টেবিল ফ্যান; ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য খেলার সামগ্রী; ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না; এক কার্টন সিগারেট; সিডি ও স্পিকারসহ মিউজিক সিস্টেম।

শুল্ক-কর পরিশোধ করে যে ১১ ধরনের পণ্য আনা যাবে। এগুলো হলো ১১৭ গ্রাম ওজনের স্বর্ণবার। এ জন্য ৪০ হাজার টাকা শুল্ক-কর দিতে হবে। এ ছাড়া ২৩৪ গ্রাম বা ২০ তোলা রৌপ্যবার; ৩০ ইঞ্চি ও তদূর্ধ্ব টেলিভিশন; হোম থিয়েটার; রেফ্রিজারেটর ও ডিপ ফ্রিজার; এয়ারকন্ডিশনার; ডিশ অ্যানটেনা; এইচডি ক্যামেরা; ঝাড়বাতি; বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে এয়ারগান; ডিশওয়াশার বা ওয়াশিং মেশিন বা ক্লথ ড্রায়ার আনা যাবে। এসব পণ্যে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হয়।

এবার যত পরিবর্তন

এবারের বাজেটে বিদেশ থেকে ফেরার সময় বছরে একবার সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি করে সোনার বার আনতে পারবেন। সোনার বার আনার ক্ষেত্রে প্রতি ভরিতে (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) শুল্ক ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আগে একজন যাত্রী বিদেশ থেকে দেশে ফেরার সময় যতবার খুশি ততবার ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না বিনা শুল্কে আনতে পারতেন। এখন থেকে একজন যাত্রী বছরে মোট ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না বিনা শুল্কে আনতে পারবেন। বিদেশফেরত একজন যাত্রী দুটি ব্যবহৃত মুঠোফোন ও প্রতিবছর একবারই একটি নতুন মুঠোফোন শুল্ক-কর পরিশোধ ছাড়া আনতে পারবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি সেবায় প্রতি তিনজনের একজন ঘুষ-দুর্নীতির শিকার
  • নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গো সংগ্রামী বীরের মহাপ্রস্থান
  • করোনায় যশোরে আরেকজনের মৃত্যু, সারাদেশে ২৮ জন শনাক্ত
  • সাবেক প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম কারাগারে 
  • নগদের কোটি টাকা লুটের ঘটনায় সাবেক সেনা ও পুলিশ সদস্য জড়িত
  • চাকরিচ্যুত পুলিশ ও সেনা সদস্যের নেতৃত্বে উত্তরায় লুট হয় কোটি টাকা
  • যশোরে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, কিটের ঘাটতিতে পরীক্ষা বন্ধ
  • হলুদের সাপ্লিমেন্ট খেলে কি লিভারের ক্ষতি হয়
  • বিদেশ থেকে ফেরার সময় বিনা শুল্কে মোবাইল, ল্যাপটপ, ফ্রিজ-টিভিসহ ১৯টি পণ্য আনতে পারবেন