মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় জমিজমা ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জেরে দেবরের ছুরিকাঘাতে শোভা আক্তার (৩৮) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার নালী ইউনিয়নের নালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শোভা আক্তার নালী গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আবদুস সালামের স্ত্রী। এ দম্পতির দুই ছেলে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জমিজমা ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে সৌদিপ্রবাসী আবদুস সালাম ও তাঁর ছোট ভাই রাকিব হোসেনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। আজ সকালে বাড়িতে গাছ থেকে কাঁঠাল পাড়েন সালামের স্ত্রী শোভা আক্তার। এ নিয়ে দেবর ও ভাবির মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রাকিব ধারালো ছুরি দিয়ে ভাবির গলায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই শোভা মারা যান। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়।

স্থানীয় নালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও শোভার প্রতিবেশী বিল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সালাম ও রাকিব—দুই ভাইয়ের ভিন্ন সংসার হলেও তাঁরা পাশাপাশি বাড়িতে থাকেন। সৌদি আরবে থাকলেও জমিজমার ভাগ-বাঁটোয়ারা ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে রাকিবের মাঝেমধ্যে ঝগড়া হতো। তিনি লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারেন, আজ সকালে শোভা বাড়িতে গাছ থেকে কাঁঠাল ছিঁড়লে দেবর রাকিবের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রাকিব ছুরিকাঘাত করলে তাঁর ভাবি মারা যান।

ঘিওর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক জমিজমার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দেবরের ছুরিকাঘাতে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ বর র

এছাড়াও পড়ুন:

হাটহাজারীতে সালিসে মারধরে কিশোরীর বাবা নিহতের ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে কিশোরীকে অপহরণের ঘটনার পর বসা সালিস বৈঠকে মারধরে ওই কিশোরীর বাবা নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে চারজনকে আসামি করে এ মামলা হয়। আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে পুলিশ বলছে, জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে একটি এলাকায় এই সালিস বৈঠক হয়। সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকাটির থানা হাটহাজারী।

আজ রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলো প্রতিবেদকের। তাঁরা জানান, গত ২৭ জুলাই ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে হাটহাজারী থানায় জিডি হয়। পরে পরিবারের লোকজন ওই কিশোরীকে নোয়াখালীর সুবর্ণচর এলাকা থেকে নিয়ে আসে। অপহরণের অভিযোগ ওঠা যুবকের বাড়িও সুবর্ণচর। তবে তিনি কিশোরীর বাড়ির পাশে একটি বাসায় থাকতেন। পেশায় নির্মাণশ্রমিকের সহকারী ওই যুবক।

সেদিনের (শুক্রবার) সালিসে থাকা অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, সালিসে যুবকের প্রতিনিধিরা দুজনের বিয়ে হয়েছে দাবি করলেও কিশোরীর বয়স কম থাকায় আইনগতভাবে বিয়ে দেওয়া যায় না বলে উভয় পক্ষ একমত হয়। এর মধ্যে সালিসে বহিরাগত লোকজন এসেছে উল্লেখ করে এক পক্ষ অপর পক্ষের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ায়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। তখন লোকজনের ভিড়ের মধ্যে পড়েন কিশোরীর বাবা। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির ছেলে ও কিশোরীর বড় ভাই আজ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাবাকে সালিসে মারধর করা হয়েছে। সেখানে মারা গেছেন। তাঁরা মামলা করেছেন। এই খুনের ঘটনায় তাঁরা সুষ্ঠু বিচার চান।

তবে ওই যুবকের খালার দাবি, তাঁর ভাগনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে ওই কিশোরীর। স্বেচ্ছায় গিয়ে বিয়ে করেছে। সালিস বৈঠকে কিশোরীর বাবাকে কেউ মারধর করেনি। হার্ট অ্যাটাকে ( হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ) কিশোরীর বাবার মৃত্যু হয়েছে।

জানতে চাইলে অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (হাটহাজারী অঞ্চল) কাজী মো. তারেক আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির সুরতহালে শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনা হাসপাতালে ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দেন, শুনতে পান ইমরান
  • হাটহাজারীতে সালিসে মারধরে কিশোরীর বাবা নিহতের ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি