পোপ চতুর্দশ লিওর শৈশবের সেই বাড়ি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত
Published: 2nd, July 2025 GMT
ছোট্ট একটি দোতলা বাড়ি। মূল ফটকে বাড়ির নম্বর লেখা ২১২। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের অদূরে এই বাড়িতেই শৈশব কেটেছে পোপ চতুর্দশ লিওর। গত ৮ মে তিনি ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধর্মগুরু নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সেই বাড়িকে ঘিরে আগ্রহ বেড়েছে লোকজনের। এমনকি মালিকের সঙ্গে কথা বলে বাড়িটি নিলামে তোলার সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হয়েছিল। কিন্ত বাড়িটি কিনে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বাড়িটি যেখানে, সেই গ্রামের নাম ডোল্টন। পোপ লিওর বাড়িটি নিলামে উঠছে জেনে গত মঙ্গলবার এক জরুরি বৈঠক ডাকে ডোল্টন ভিলেজ বোর্ড। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে বাড়িটি গ্রাম কর্তৃপক্ষ কিনে নেবে। পরে যোগাযোগ করা হয় বাড়ির মালিকের সঙ্গে। তিনি বাড়িটি বিক্রি করতে রাজি হয়েছেন।
ডোল্টন ভিলেজ বোর্ড সেই বৈঠকে গ্রামবাসীদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। বৈঠকে বাড়িটি কেনার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর মেয়র জ্যাসন হাউস সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা চাইলে এমন একটি মুহূর্ত কাজে লাগাতে পারি। না হলে বাড়িটি কোনো বিনিয়োগকারীর কাছে ছেড়ে দিতে হবে।’
বাড়িটি কেনার এ সিদ্ধান্তকে ‘জীবনে একবারই আসে এমন একটি সুযোগ’ হিসেবে বর্ণনা করেন ডোল্টন ভিলেজ বোর্ডের সদস্যরা। তাঁদের মতে, বাড়িটির নিয়ন্ত্রণ পেলে এটির ‘যথোচিত মর্যাদা’ দিতে পারবে বোর্ড।
অকশনিয়ার প্যারামাউন্ট রিয়্যালটি নামের একটি নিলামকারী প্রতিষ্ঠান অবশ্য বাড়িটি নিলামে তোলার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল। সব ঠিকঠাক থাকলে ১৭ জুলাই বাড়িটি নিলামে উঠত। উল্লেখ্য, এই প্রতিষ্ঠানই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শৈশব কাটানো একটি বাড়ি ২০ লাখের বেশি ডলারে বিক্রি করেছিল নিলামে।
পোপ চতুর্দশ লিওর জন্ম শিকাগোয় ১৯৫৫ সালে। তাঁর পরিবার বাড়িটি কেনে এরও ছয় বছর আগে, ১৯৪৯ সালে। মিশিগানে একটি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগপর্যন্ত এই বাড়িতেই ছিলেন পোপ লিও। ১৯৯৬ সালে বাড়িটি বিক্রি করে দেয় তাঁর পরিবার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড ল টন
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের অনলাইনে সার্টিফিকেট সত্যায়িত যেভাবে
বিদেশে উচ্চশিক্ষার আবেদন কিংবা শিক্ষাগ্রহণের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার বিভিন্ন সনদপত্রের সত্যায়নকে সহজ করতে শুরু হয়েছে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি। এখন সনদ বা একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলোর সত্যায়নের জন্য আর যেতে হবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে সরকারের এই অনলাইন পরিষেবা। চলুন, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি দেখে নেওয়া যাক।
বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়িত করার অনলাইন পদ্ধতি—*প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
শিক্ষাসংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রের জন্য শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র (ন্যাশনাল আইডি বা এনআইডি) অথবা অনলাইনে তালিকাভূক্ত জন্মনিবন্ধন সনদ লাগবে। পুরো প্রক্রিয়াটি যেহেতু অনলাইনকেন্দ্রিক, সেহেতু আপলোডের জন্য কাগজগুলোর সফট কপি দরকার হবে। তাই আগে থেকেই নথিগুলো স্ক্যান করে প্রস্তুত করে রাখতে হবে। স্ক্যান করা ফাইলগুলো অবশ্যই জেপিইজি, জেপিজি বা পিএনজি ফরম্যাটে কম্পিউটারে সংরক্ষণ করতে হবে। ফাইলের সাইজ অবশ্যই ১ এমবির (মেগাবাইট) মধ্যে হতে হবে
আরও পড়ুনপাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর-পিএইচডির সুযোগ১৭ মার্চ ২০২৫ধাপে ধাপে অনলাইনে শিক্ষাগত সার্টিফিকেট সত্যায়ন প্রক্রিয়া— *মাইগভ সাইটে নিবন্ধনপ্রথমেই প্রবেশ করতে হবে মাইগভ প্ল্যাটফর্মে। পরে সাইটটিতে একটি অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য নাম ও মোবাইল নম্বর বা ই–মেইল অ্যাড্রেস দিতে হবে। তারপর একটি পাসওয়ার্ড সেট করার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে প্রাথমিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া।
প্রোফাইল যাচাই করণ—অ্যাকাউন্ট খোলার পর সাইটটিতে ব্যবহারকারীর জন্য তৈরি হবে একটি স্বতন্ত্র প্রোফাইল। এটি তাৎক্ষণিকভাবে এনআইডি অথবা জন্ম নিবন্ধন নাম্বার কিংবা জন্ম সাল দিয়ে যাচাই করে নিতে হবে। একটি এনআইডি দিয়ে শুধু একটি মাইগভ অ্যাকাউন্ট যাচাই করা যাবে।
*সুনির্দিষ্ট আবেদন অনুসন্ধান—মাইগভ হোমপেজে প্রদর্শিত সেবাগুলোর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে ‘বিদেশগামী নাগরিকদের সার্টিফিকেট সত্যায়ন’। এখানে ক্লিক করলে নতুন পেজে বিদেশ গমনের জন্য প্রাসঙ্গিক সমস্ত নথিপত্র সত্যায়নের পৃথক পৃথক আবেদন অপশন আসবে। এগুলোর মধ্য থেকে শিক্ষার্থীরা তাঁদের উদ্দিষ্ট বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যে সত্যায়নগুলো চাওয়া হয়েছে, সেগুলো খুঁজে নিতে পারবেন।
এ ছাড়া সুনির্দিষ্ট নথির জন্য হোমপেজের সার্চ বক্সে তা লিখেও সার্চ করা যায়। এতে প্রদর্শিত অপশনগুলোর মধ্যে সবার ওপরে থাকবে কাঙ্ক্ষিত আবেদনটি। এই অনুসন্ধানটি এমনকি ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমেও সম্পন্ন করা যায়।
আরও পড়ুনতুরস্কে বিলকেন্ট ইউনিভার্সিটির বৃত্তি, আইইএলটিএসে ৬.৫ হলে আবেদন ০৮ মার্চ ২০২৫আবেদন পদ্ধতি—প্রতিটি আবেদন অপশনের ভেতরে সংশ্লিষ্ট আবেদনসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য একনজরে লিপিবদ্ধ করা আছে। যেমন কী কী কাগজপত্র লাগবে, আপলোডের নিয়ম, আবেদন ফি কত, অনলাইন আবেদন ফরম কীভাবে পূরণ করতে হবে এবং প্রক্রিয়াকরণে কেমন সময় লাগবে ইত্যাদি।
নথিপত্রের ধরন অনুযায়ী স্বভাবতই এ তথ্যাদি ভিন্ন ভিন্ন হবে। বিশেষ করে প্রক্রিয়াকরণের সময় সব নথির ক্ষেত্রে এক নয়। এ ছাড়া কোনো কোনো সেবা বিনা মূল্যেই পাওয়া যাবে, আবার কোনো কোনোটির ক্ষেত্রে রয়েছে নির্দিষ্ট আবেদন ফি। এই ফি পরিশোধের জন্য রয়েছে অনলাইন ব্যাংকিং, কার্ড এবং মোবাইল পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেম।
আবেদন ফরম পূরণের সময় লাল তারকা চিহ্নিত ঘরগুলো পূরণ করা আবশ্যক। বাকি ঘরগুলো খালি রেখেও ফর্ম পূরণ সম্পন্ন করা যাবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্লাস (+) বাটনে ক্লিক করে একাধিক পৃষ্ঠা বা ফাইল সংযোজনের অপশন পাওয়া যাবে।
পুরো আবেদন একবারে পূরণ করে সাবমিট করতে হবে—এমন কোনো বাধ্য-বাধকতা নেই। আংশিক পূরণ করে তা পরে পূরণ করার জন্য ড্রাফট করে রাখা যেতে পারে। পরে মোবাইল নম্বর বা ই–মেইল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে ‘সেবা ব্যবস্থাপনা’ অপশন থেকে ড্রাফট আবেদন পুনরায় শুরু করা যাবে।
প্রাসঙ্গিক কাগজগুলো আপলোডসেবা গ্রহীতা তার সুনির্দিষ্ট নথির সত্যায়নের জন্য প্রাসঙ্গিক নথিপত্র নিজ অ্যাকাউন্টে আপলোড করে রাখতে পারবেন। সংযুক্তিগুলো সম্পূর্ণরূপে আপলোড না হওয়া পর্যন্ত পরের ধাপে যাওয়া যাবে না।
পৃথক পৃথক আবেদনের সময় নথি আপলোড না করে অ্যাকাউন্ট যাচাইয়ের পরপরই একে একে সমস্ত নথি আপলোড করে রাখা যেতে পারে। পরবর্তীতে আলাদা আবেদন দাখিলের সময় এগুলোর মধ্যে থেকে প্রাসঙ্গিক নথিগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে।
আবেদনের আপডেট ট্র্যাকিং—চূড়ান্তভাবে আবেদন জমা দেওয়ার পর প্রতিটি আবেদনের জন্য একটি স্বতন্ত্র ট্রাকিং নম্বর দেন। এই নাম্বার ব্যবহার করে পরবর্তীতে ‘সেবা ব্যবস্থাপনা’ অপশন থেকে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে জানা যাবে। এই অগ্রগতিটি প্রত্যেক সেবাগ্রহীতা তাঁর ব্যক্তিগত ড্যাশবোর্ড থেকে দেখতে পারবেন।
আরও পড়ুনইউনেসকোতে ১৪ ক্যাটাগরিতে ইন্টার্নশিপ, বয়স ২০ হলেই আবেদন ১৮ মার্চ ২০২৫সত্যায়িত নথি প্রাপ্তি—নির্দিষ্ট কার্যদিবস শেষে সফলভাবে সত্যায়িত নথিটি ড্যাশবোর্ডে প্রদর্শিত হবে। আর এর সঙ্গে সঙ্গেই সেবাগ্রহীতা তা ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়িত করার এই অনলাইন পরিষেবা নথি সত্যায়নব্যবস্থাকে করেছে হয়রানিমুক্ত এবং দ্রুততর। মাইগভ সাইটে প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য স্বতন্ত্র প্রোফাইলের কারণে আবেদনপত্রসহ যাবতীয় কাগপত্র সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট কার্যদিবসের মধ্যে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য রয়েছে ট্র্যাকিংয়ের সুবিধা। যাবতীয় প্রক্রিয়া নিরবচ্ছিন্নভাবে সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্যে প্রথমেই প্রোফাইল যাচাই করে নেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে একটি এনআইডি দিয়ে কেবল একটি অ্যাকাউন্ট যাচাই করা সম্ভব। তথ্যসূত্র: ইউএনবি