যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানির তীব্র সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নিউইয়র্ক ঘিরে মামদানির আনা প্রস্তাবগুলোকে ‘বোকামি’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেছেন, আগামী নভেম্বরে মেয়র নির্বাচিত হলে এক মেয়াদের বেশি টিকবেন না মামদানি।

গতকাল সোমবার ‘দ্য ফুল সেন্ড পডকাস্টে’ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। আলাপচারিতায় উঠে আসে গাজায় চলমান সংঘাত, ইরান এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফাস্ট ফুড, চকলেটপ্রীতিসহ নানা বিষয়।

আলোচনার এক পর্যায়ে উঠে আসে ইহুদিবিদ্বেষের বিষয়টি। এ সময় মামদানিকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ আখ্যা নিয়ে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়। ‘ইন্তিফাদার বিশ্বায়ন’ শব্দ দুটির প্রতি প্রকাশ্যে নিন্দা জানানো থেকে বিরত থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন মামদানি। ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের আন্দোলন ‘ইন্তিফাদা’ নামে পরিচিত।

নেতানিয়াহু ইসরায়েলবিদ্বেষ নিয়ে কথা বলছিলেন। মামদানি প্রসঙ্গ উঠলে তিনি নিউইয়র্ক নিয়ে এই মেয়র প্রার্থীর প্রস্তাবগুলোর সমালোচনা শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষ এই বাজে কথায় বিভ্রান্ত হয়েছেন। আপনি পুলিশের অর্থায়ন বন্ধ করতে চান? আপনি চান মানুষ দোকানে গিয়ে ডাকাতি করুক এবং মুক্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়াক। আপনি কি মনে করেন এতে সমাজের ভালো হবে?’

আরও পড়ুনজোহরান মামদানি যেভাবে ইতিহাস বদলে দেওয়ার পথে২৬ জুন ২০২৫

তবে মামদানি কিন্তু পুলিশের অর্থায়ন বন্ধের কথা বলেননি। তিনি বরং পুলিশ বিভাগের ভেতরে সম্পদ পুনর্বিন্যাস করতে চান, যাতে পুলিশের কর্মকর্তারা সবচেয়ে গুরুতর অপরাধগুলোর ওপর বেশি মনোযোগ দিতে পারেন। এ ছাড়া পুলিশে বর্তমানে যত কর্মকর্তা আছেন, তাঁদের বহাল রাখার পরিকল্পনার কথাও বলেছেন মামদানি।

নিউইয়র্কের সবচেয়ে ধনীদের ওপর মামদানি যে কর আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন, সাক্ষাৎকারে তার সমালোচনা করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘আপনি কি সব উদ্যোগ ধ্বংস করে দিতে চান? আপনি কি কর আরোপ করে মানুষকে মেরে ফেলতে চান? আমি বলতে চাচ্ছি, এটি হবে এক মেয়াদের প্রচেষ্টা।’ এর মধ্য দিয়ে মামদানি মেয়র হিসেবে এক মেয়াদের বেশি টিকবেন না বলে ইঙ্গিত করেছেন নেতানিয়াহু।

আরও পড়ুনট্রাম্পের ‘সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন’ জোহরান মামদানি২৫ জুন ২০২৫

ইসরায়েলের বাইরে নিউইয়র্ক শহরে সবচেয়ে বেশি ইহুদি বসবাস করেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ১২ লাখ। ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে শহরের মেয়র প্রার্থী মামদানি বরাবরই ইসরায়েল এবং দেশটির সামরিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে এসেছেন। তিনি এ–ও বলেছেন, মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নেতানিয়াহু যদি কখনো নিউইয়র্কে আসেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে ইতিহাস গড়া জোহরান কেন ‘বাংলাদেশি আন্টিদের’ ধন্যবাদ দিলেন২৬ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ম য় দ র ন উইয়র ক ন ম মদ ন ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফরে সঙ্গী হচ্ছেন ফখরুল, তাহেরসহ চার রাজনীতিবিদ

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে যাবেন চারজন রাজনীতিবিদ। তাঁরা হলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মহাসচিব আখতার হোসাইন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফরের বিস্তারিত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

দেশের বিশেষ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে চারজন রাজনীতিবিদ প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ২১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে দেশ ছাড়বেন প্রধান উপদেষ্টা। ২২ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন। তিনি দেশে ফিরবেন ২ অক্টোবর।

২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা ভাষণ দেবেন জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে বিগত এক বছরে দেশে ঘটে যাওয়া সংস্কার ও আগামী দিনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ বছরের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে ‘হাই লেভেল কনফারেন্স অন দ্য সিচুয়েশন অব রোহিঙ্গা মুসলিমস অ্যান্ড আদার মাইনোরিটিস ইন মিয়ানমার’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা হবে। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এমন একটি উচ্চ পর্যায়ের সভার আয়োজন এবারই প্রথম। এই উচ্চ পর্যায়ের সভা থেকে যেন রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের একটি কার্যকর পরিকল্পনা উঠে আসে, সেজন্য আন্তর্জাতিক অংশীদার ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে গত মাসে কক্সবাজারে একটি অংশীদার সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ সফর ২২ সেপ্টেম্বর, সঙ্গী মির্জা ফখরুলসহ চার রাজনীতিক
  • প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফরে সঙ্গী হচ্ছেন ফখরুল, তাহেরসহ চার রাজনীতিবিদ
  • নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে ১৫ বিলিয়ন ডলারের মামলা করবেন ট্রাম্প
  • ইসরায়েলি বন্ডে আর বিনিয়োগ নয়—ঘোষণা দিলেন জোহরান মামদানি