মামদানির সমালোচনা করে নেতানিয়াহু বললেন, মেয়র হলে এক মেয়াদের বেশি টিকবেন না তিনি
Published: 22nd, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানির তীব্র সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নিউইয়র্ক ঘিরে মামদানির আনা প্রস্তাবগুলোকে ‘বোকামি’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেছেন, আগামী নভেম্বরে মেয়র নির্বাচিত হলে এক মেয়াদের বেশি টিকবেন না মামদানি।
গতকাল সোমবার ‘দ্য ফুল সেন্ড পডকাস্টে’ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। আলাপচারিতায় উঠে আসে গাজায় চলমান সংঘাত, ইরান এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফাস্ট ফুড, চকলেটপ্রীতিসহ নানা বিষয়।
আলোচনার এক পর্যায়ে উঠে আসে ইহুদিবিদ্বেষের বিষয়টি। এ সময় মামদানিকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ আখ্যা নিয়ে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়। ‘ইন্তিফাদার বিশ্বায়ন’ শব্দ দুটির প্রতি প্রকাশ্যে নিন্দা জানানো থেকে বিরত থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন মামদানি। ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের আন্দোলন ‘ইন্তিফাদা’ নামে পরিচিত।
নেতানিয়াহু ইসরায়েলবিদ্বেষ নিয়ে কথা বলছিলেন। মামদানি প্রসঙ্গ উঠলে তিনি নিউইয়র্ক নিয়ে এই মেয়র প্রার্থীর প্রস্তাবগুলোর সমালোচনা শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষ এই বাজে কথায় বিভ্রান্ত হয়েছেন। আপনি পুলিশের অর্থায়ন বন্ধ করতে চান? আপনি চান মানুষ দোকানে গিয়ে ডাকাতি করুক এবং মুক্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়াক। আপনি কি মনে করেন এতে সমাজের ভালো হবে?’
আরও পড়ুনজোহরান মামদানি যেভাবে ইতিহাস বদলে দেওয়ার পথে২৬ জুন ২০২৫তবে মামদানি কিন্তু পুলিশের অর্থায়ন বন্ধের কথা বলেননি। তিনি বরং পুলিশ বিভাগের ভেতরে সম্পদ পুনর্বিন্যাস করতে চান, যাতে পুলিশের কর্মকর্তারা সবচেয়ে গুরুতর অপরাধগুলোর ওপর বেশি মনোযোগ দিতে পারেন। এ ছাড়া পুলিশে বর্তমানে যত কর্মকর্তা আছেন, তাঁদের বহাল রাখার পরিকল্পনার কথাও বলেছেন মামদানি।
নিউইয়র্কের সবচেয়ে ধনীদের ওপর মামদানি যে কর আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন, সাক্ষাৎকারে তার সমালোচনা করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘আপনি কি সব উদ্যোগ ধ্বংস করে দিতে চান? আপনি কি কর আরোপ করে মানুষকে মেরে ফেলতে চান? আমি বলতে চাচ্ছি, এটি হবে এক মেয়াদের প্রচেষ্টা।’ এর মধ্য দিয়ে মামদানি মেয়র হিসেবে এক মেয়াদের বেশি টিকবেন না বলে ইঙ্গিত করেছেন নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুনট্রাম্পের ‘সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন’ জোহরান মামদানি২৫ জুন ২০২৫ইসরায়েলের বাইরে নিউইয়র্ক শহরে সবচেয়ে বেশি ইহুদি বসবাস করেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ১২ লাখ। ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে শহরের মেয়র প্রার্থী মামদানি বরাবরই ইসরায়েল এবং দেশটির সামরিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে এসেছেন। তিনি এ–ও বলেছেন, মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নেতানিয়াহু যদি কখনো নিউইয়র্কে আসেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে ইতিহাস গড়া জোহরান কেন ‘বাংলাদেশি আন্টিদের’ ধন্যবাদ দিলেন২৬ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এক ম য় দ র ন উইয়র ক ন ম মদ ন ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে বন্দুকধারীর গুলিতে পুলিশসহ নিহত ৫
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানের মধ্যাঞ্চলে এক বন্দুকধারীর গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও রয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে। আরও বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার পরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়ে নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস জানান, একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘আঘাত’ করা হয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান মেয়র।
যদিও নিউইয়র্ক পুলিশের মুখপাত্র পরবর্তী সময় বলেন, তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত কিংবা অস্বীকার—কোনোটাই করতে পারছেন না।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল ৩৪৫ পার্ক এভিনিউ এবং ইস্ট ফিফটি ওয়ান স্ট্রিটের চারপাশ এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারী নিহত হয়েছেন। যদিও তাঁর নাম-পরিচয় এখনো জানানো হয়নি।
এক্সে পোস্ট দিয়ে পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিসচ লিখেন, এ মুহূর্তে ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে জানান, একটি অফিস ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ‘আমি তখন পাশেই ছিলাম। তিনি (বন্দুকধারী) একের পর এক ফ্লোরে ঘুরছিলেন।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে জানান, ঘটনাটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোন ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির একটি কার্যালয়ে ঘটেছে।
ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স জড়ো করা হয়েছে। আকাশে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিক ও উৎসুক জনতাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।
ম্যানহাটানের ওই এলাকায় বেশকিছু পাঁচ তারকা হোটেল এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর রয়েছে।