তানিম নূর : লগ্নি নিয়ে আমাদেরও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। আমরা নিজেরাই মিলেমিশে প্রযোজনা করেছি। বাজেট কিছুটা কম ছিল। মূল চ্যালেঞ্জ ছিল ২০ দিনে শুটিং করা। এর বাইরে এলে শুটিং করার বাজেট আমাদের অ্যালাউ করছিল না। এ জন্য শিল্পী–কলাকুশলী সবাই আমাদের সহায়তা করেছেন। তবে বাজেটটা ভালো থাকলে, আরও চার–পাঁচ দিন শুটিং করার বাজেট পেলে কাজটা আরও ভালো হতো। তাহলে হয়তো আমি আরেকটু সুযোগ পেতাম।

প্রথম আলো :

বিশেষ কোনো দৃশ্যের শুটিং কি আপনাকে ইমোশনাল করেছিল?

তানিম নূর : জাহিদ ভাই আমাকে বারবার ইমোশনাল করেছেন। জাহিদ ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর মেয়ের চরিত্রে সুনেরাহর সঙ্গে একটি দৃশ্য ছিল, সেটির কথা বলতে চাই। দৃশ্যটি নিয়ে আমাদের সবার আলাদা প্রস্তুতি ছিল। জাহিদ ভাই, সুনেরাহ আলাদা প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন। রিহার্সাল করেছিলাম। এটা ছিল সিনেমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দৃশ্য। সেখানে একটি ডায়ালগ ছিল, ‘মা, আমি যদি জমিদার হতাম, আমার সবকিছু তোমাকে দিয়ে দিতাম।’ শুটিংয়ের বহু আগে থেকে জাহিদ ভাইকে বলেছি, এটা আমাদের সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ একটি সংলাপ ও মুহূর্ত। জাহিদ ভাই বেশ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। পরে শুটিংয়ের সময় আমার এতটা ভালো লেগেছিল যে আমি নিজেই দৃশ্যের সঙ্গে অ্যাটাচড হয়ে গিয়েছিলাম। আমি শতবার চিত্রনাট্য পড়েছি, তারপরও শুটিংয়ের সময় দৃশ্যটি আমাকে ইমোশনাল করে দেয়।

প্রথম আলো:

‘পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ’—এ আইডিয়া কীভাবে এল?

তানিম নূর : নব্বইয়ের দশকে আমরা পরিবারের সবাই একসঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের নাটক দেখতাম, একসঙ্গে ঈদের নাটক দেখতাম। শিশু–কিশোর থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধও একই কনটেন্ট দেখতেন, বিনোদিত হতেন। এটা দারুণ একটা সময় ছিল। এখন আমরা একসঙ্গে কিছু দেখি না। সবাই আলাদা। অনুভূতিগুলোও দিন দিন বদলে যাচ্ছে। তখন ‘পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ’—এই আইডিয়া মাথায় আসে। একসঙ্গে কোনো কিছু দেখার আনন্দ বহুগুণ বেশি। আমরা মজা করেই ট্যাগলাইনটা ব্যবহার করেছিলাম। সত্যিই পরিবার নিয়ে দর্শক হুমড়ি খেয়ে দেখবেন, সেটি ভাবিনি। দর্শকের কাছে কৃতজ্ঞতা।

প্রথম আলো :

আপনার সিনেমায় প্রথম চঞ্চল চৌধুরী, পরে জয়া আহসান ও অপি করিম আসেন—এভাবে গল্প বলতে গিয়ে ঝুঁকি নিচ্ছেন, এমনটা মনে হয়েছিল?

তানিম নূর : একটি দোটানা তৈরি হয়েছিল। দর্শকদের মধ্যে এটা ক্লিক করবে কি করবে না, ভাবছিলাম। তবে আশঙ্কা থাকলেও আস্থার জায়গা ছিল। নানা প্ল্যাটফর্মে বহু রকম কাজ হচ্ছে। দর্শকদের রুচি, ভাবনা ও দেখার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। তাঁরা নতুন ধরনের ন্যারেটিভ গ্রহণ করতে প্রস্তুত আছেন; কিন্তু আমরা দিতে পারছি না। সেই জায়গা থেকেই ঝুঁকি নেওয়া। সিনেমা হলে দর্শকদের কাছে না যাওয়া পর্যন্ত কোনো পরিচালকই বলতে পারবে না সিনেমাটি হিট হবে, নাকি ফ্লপ হবে। সিনেমা হয়ে ওঠাটা জরুরি। যে কারণে দর্শক আমাদের গ্রহণ করেছেন।

প্রথম আলো:

৩৯ দিন আগে সবচেয়ে কম ৫টি শো দিয়ে যাত্রা শুরু, বর্তমানে সিনেমাটির সর্বাধিক শো হচ্ছে। শুরুতে কী মনে হয়েছিল?

তানিম নূর : প্রথম দিকে ভাবিনি দর্শক এতটা পছন্দ করবেন; কিন্তু দিন যতই যেতে থাকে, ততই দেখি, যাঁরাই সিনেমাটি দেখছেন, তাঁরাই সুন্দর সুন্দর লেখা লিখছেন। প্রথম সপ্তাহে বুঝে উঠতে পারিনি। দর্শকদের মুখে মুখে সিনেমার প্রচারণা বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে পুরোপুরি বুঝতে পারি, সিনেমাটি দর্শকের ভালো লেগে গেছে। এটা ছিল অন্য রকম অনুভূতি।

প্রথম আলো:

শুনলাম পরবর্তী সিনেমার কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। সেটিও কি পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ?

আরও পড়ুনপরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ, কী আছে এই সিনেমায়১২ জুন ২০২৫

তানিম নূর : আগামী রোজার ঈদে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে আরেকটি সিনেমার কাজ নিয়ে এগিয়ে চলেছি। প্রাথমিক কার্যকলাপ চলছে। এটাও পরিবার নিয়ে দেখার মতো গল্প। পরিবারকেন্দ্রিক গল্প, ফ্যামিলি ও কমেডি ড্রামা। তবে তার মানে এই নয়, আমি সামাজিক জনরার সিনেমাই বানাব। আমি নিজেও অ্যাকশন, ক্রাইম—নানান জনরার গল্প পছন্দ করি। সামনে তেমন সিনেমাও পাবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র ছ ড় প রথম আল প রস ত ত একসঙ গ আম দ র কর ছ ন ল কর ছ

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা। চলুন, বিশেষ এই দিনে শাহরুখ খানের অজানা সাতটি তথ্য জেনে নিই—

এক. ১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। কিন্তু সিনেমাটিতে শাহরুখ খানের চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল তারকা পুত্র আরমান কোহলির। অভিজ্ঞ পরিচালক রাজ কুমার কোহলির রাগী ছেলে আরমান সিনেমাটির একটি শিডিউল শেষ করে পরিচালক রাজ কানওয়ারের সঙ্গে ঝগড়া করে সেট ছেড়ে চলে যান। প্রযোজকরা তখন তড়িঘড়ি করে একটি নতুন মুখ খুঁজতে থাকেন, যে চরিত্রটির সঙ্গে মানানসই। তারপর আরমানের চরিত্রটি রূপায়নের সুযোগ পান নবাগত শাহরুখ খান।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

নেচে প্রেমের গুঞ্জন উসকে দিলেন শাহরুখকন্যা

দুই. দক্ষিণী সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা কমল হাসানের ‘হে রাম’ সিনেমায় শাহরুখের চরিত্রের নাম ছিল আমজাদ খান। ‘শোলে’ সিনেমায় গব্বর সিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন আমজাদ খান। তার নাম অনুসারে ‘হে রাম’ সিনেমার আমজাদ চরিত্রের নামকরণ করা হয়। কারণ কমল হাসান ও আমজাদ খানের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলেন। এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এক টাকাও পারিশ্রমিক নেননি শাহরুখ। এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ খান বলেছিলেন—“কমল হাসানের মতো অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে কেউ টাকা নেয় না।”

তিন. শাহরুখ ও আমির খান কখনো একসঙ্গে কোনো সিনেমায় কাজ করেননি। তবে আমির খানের কাজিন মনসুর আলীর ‘জোশ’ সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল। মনসুর চেয়েছিলেন, সিনেমার গল্পে আমির খান ঐশ্বরিয়ার প্রেমিক চরিত্রে অভিনয় করুক। কিন্তু আমির চেয়েছিলেন, ঐশ্বরিয়ার জমজ ভাইয়ের চরিত্র। কিন্তু তা হয়নি। ফলে কাজটি ছেড়ে দেন আমির খান। সর্বশেষ পরিচালকের নির্ধারিত চরিত্রে (ম্যাক্স ডিয়াস অর্থাৎ ঐশ্বরিয়ার ভাই) অভিনয় করেন শাহরুখ খান।

চার. শাহরুখ খান প্রয়াত বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীর বিপরীতে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে ছিলেন। সর্বশেষ ‘আর্মি’ সিনেমায় সেই সুযোগ হয়। যদিও সিনেমাটিতে ক্যামিও চরিত্রে (মেজর অর্জুন) অভিনয়ের সুযোগ পান, তারপরও এটি লুফে নেন শাহরুখ খান। 

পাঁচ. ‘কয়লা’ সিনেমায় শঙ্কর চরিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ। চরিত্রটি ছিল বোবার। প্রথমে তার কোনো সংলাপই ছিল না। কিন্তু এ নিয়ে চলচ্চিত্র পরিবেশকরা আপত্তি জানান। তারা প্রশ্ন তুলেন—‘সুপারস্টারের মুখে একটি কথাও থাকবে না?’ তাই পরিচালক-প্রযোজক রাকেশ রোশান বাধ্য হয়ে স্বপ্নদৃশ্যে শাহরুখের কিছু সংলাপ যোগ করে দেন।

ছয়. বলিউড বাদশা শাহরুখ খান তার সব সহ-অভিনয়শিল্পীদেরই ভালোবাসেন। কিন্তু তার প্রিয় হলেন রাখি গুলজার। ‘করন অর্জুন’ সিনেমায় শাহরুখের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। শাহরুখ তাকে নিজের মায়ের মতোই ভালোবাসেন।

সাত. শাহরুখ খান অনেকবার নিজের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ১৯৯৮ সালে ‘আচানাক’ সিনেমায় প্রথমবার শাহরুখ চরিত্রে অভিনয় করেন। যদিও গোবিন্দ অভিনীত সিনেমাটিতে শাহরুখের ক্যামিও চরিত্র ছিল। এর দুই বছর পর এম. এফ. হোসেনের ‘গজ গামিনি’ সিনেমায় নিজের চরিত্রে অভিনয় করেন। এটিও ক্যামিও চরিত্র ছিল। 

১৯৯৫ সালে শাহরুখ খানের সাংবাদিক বন্ধু সমর খান, শাহরুখের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। তাতে শাহরুখ খান নিজের নামে অভিনয় করেন। ২০০৯ সালে জোয়া আখতারের ‘লাক বাই চান্স’, ২০১১ সালে নবাগত পরিচালক সাহিল সাংঘার ‘লাভ ব্রেকআপস জিন্দেগি’, ২০১০ সালে মকরন্দ দেশপান্ডের শাহরুখ বোলা ‘খুবসুরত হ্যায় তু’ সিনেমায় শাহরুখ নিজের নাম নিয়েই পর্দায় হাজির হন।

তথ্যসূত্র: বলিউড হাঙ্গামা

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সব সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অপারেটররা
  • আগামী বছর নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা
  • শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?