ভারতীয় বাংলা সিনেমার দর্শকপ্রিয় প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জি। কিছুদিন আগে তার কন্যা সাইনা চ্যাটার্জি ডল অভিনয়ে পা রেখেছে। স্টার জলসার ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে তার অভিনয়ে অভিষেক ঘটে।
এবার ‘কনে দেখা আলো’ ধারাবাহিকে ‘লাজবন্তী’ চরিত্রে অভিনয় করছেন। শহুরে বনলতা আর গ্রামের ‘লাজবন্তী’ এর জীবন রাতারাতি বদলে যায়। এতে লাল টুকটুকে বেনারসিতে বধূবেশে দেখা গেল সাইনাকে। এ নিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছে এই অভিনেত্রী।
অভিষেক-সংযুক্তা চ্যাটার্জি দম্পতির কন্যা সাইনা চ্যাটার্জি ডল বলেন, “নিজেকে এমন রূপে দেখতে খুব ভালো লাগছে আমারও। লাজবন্তী একদিকে যেমন খুব সরল, সাদাসিধে মেয়ে। তেমনই অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের। সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে পছন্দ করে। ওর মন এতটাই ভালো যে দর্শকও ভালোবাসতে বাধ্য। খুব সাধারণ জীবনযাপন করতে ভালোবাসে।”
আরো পড়ুন:
আমাকে বিব্রত-বিরক্ত করে আপনাদের কী উপকার, প্রশ্ন এডলফের
‘এআই এডিটেড ভিডিও সত্যি ভেবে বিশ্বাস করবেন না, আল্লাহর দোহাই লাগে’
‘লাজবন্তী’ চরিত্রের মাঝে নিজেকে খুঁজে পান সাইনা। তার ভাষায়—“আমি মানুষের সঙ্গে মিশতে ভীষণ ভালোবাসি। কারো সঙ্গে কথা বলতেই আমার দ্বিধাবোধ হয় না। আমরা দু’জনেই যেকোনো বিষয় নিয়ে খুব এক্সাইটেড হয়ে যাই।”
বাবার সঙ্গে তুলনা করতে নারাজ সাইনা। তার মতে, “একদমই বলব না আমি বাবার মতো। কারণ আমি মনে করি আমায় অনেক ইমপ্রুভ করতে হবে। বাবার মতো হতে পারা তো আকাশছোঁয়া। তবে লীনা আন্টির সঙ্গে যেহেতু কাজের সুযোগ পেয়েছি তাই চেষ্টা করব বাবার বলা বিশেষ কথাগুলো ফুটিয়ে তোলার। বাবা যেকোনো কাজে নিজের শতভাগ দিতেন। আমাকেও সেটাই শিখিয়েছিলেন।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে সাইনা বলেন, “বাবা সবসময় বলতেন, একজন অভিনেতার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নিজের কাজের প্রতি সৎ হওয়া। সত্যি বলতে, বাবা পর্যন্ত পৌঁছাতে এখনো অনেকটা সময় লাগবে আমার। আমি যদি কখনো অনেক অ্যাওয়ার্ড পাই বা বলিউড, হলিউডেও চলে যাই, তাও বলব, বাবার মতো হওয়া অত সহজ নয়।”
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইনা বলেন, “আমি মনে করি, আমার এখনো অনেক কিছু শেখার বাকি। তাই ভালো কাজ করাই একমাত্র লক্ষ্য।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র ল জবন ত
এছাড়াও পড়ুন:
জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ
কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।
এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।
তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।
স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।
জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।