নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাথে গিয়াসউদ্দিনের মতবিনিময় সভা
Published: 31st, July 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের নব-নির্বাচিত কার্যকরী পরিষদকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায়, নারায়ণগঞ্জের সুনাম বৃদ্ধিতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার মত প্রকাশ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সমস্যা, জনদুর্ভোগ, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব সভাপতি আবু সাউদ মাসুদের সভাপতিত্বে সভায় সিনিয়র সাংবাদিকরা গিয়াস উদ্দিনকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষানুরাগী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তার সময়েই নারায়ণগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বেশ কয়েকটি প্রতিরোধ স্তম্ভসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মিত হয়েছিল।
আলহাজ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন তার বক্তব্যে সাংবাদিকদের ‘রাজনীতিবিদদের সবচেয়ে বড় বন্ধু’ হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, গঠনমূলক সমালোচনা আত্মশুদ্ধিতে সহায়তা করে। কারো চরিত্র হনন না করে সঠিক লেখনির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের সুনাম বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি মানুষের সম্মান ক্ষুন্ন করে এমন সংবাদের প্রকাশের ক্ষেত্রে স্থানীয় পত্রিকাগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য নতুন কার্যকরী পরিষদের প্রতি অনুরোধ জানান।
রাজনৈতিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি সবসময় নারায়ণগঞ্জবাসীর পাশে থেকে কাজ করে যাবো ইনশা’আল্লাহ। আগামীতে বিএনপি থেকে যাকেই মনোনয়ন দিবে, দলের মনোনীত প্রার্থীকে জয়ী করতে আমি তার পক্ষে কাজ করে যাব।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের কার্যকরী পরিষদের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, যুগ্ম সম্পাদক আহসান সাদিক শাওন, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান জুয়েল, কার্যকরী পরিষদ সদস্য আরিফ আলম দীপু, আব্দুস সালাম, রফিকুল ইসলাম জীবন ও প্রণব কৃষ্ণ রায়।
আরো উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সিনিয়র সদস্য অহিদুল হক খান, হাফিজুর রহমান মিন্টু, নাহিদ আজাদ, মাকসুদুর রহমান কামাল, শফিউদ্দিন বিটু, মনির হোসেন, নাফিজ আশরাফ, আনিসউর রহমান আনিস, সালাম জুবায়ের, রফিকুল ইসলাম রফিক, মজিবুল হক পলাশ, ইউসুফ আলী এটম, হাসান আরিফ, মোঃ শফিকুল ইসলাম, আনোয়ার হাসান, শওকত আলী সৈকত, দিলীপ কুমার মন্ডল, মো: মহিউদ্দিন পলাশ, মোশতাক আহমেদ (শাওন), মো: সামন হোসেন, মো: রাসেল (আদিত্য), হাজী হাবিবুর রহমান শ্যামল, এমরান আলী সজীব, সাবিত আল হাসান ও মো: সাইফুল ইসলাম (সায়েম) এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি গোলাম মুহাম্মদ সাদরিল, দৈনিক অগ্রবানী’র সম্পাদক স্বপন চৌধুরী, সোনারগাঁ থানা যুবদলের আহ্বায়ক শহীদুর রহমান স্বপন, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ প্রধান, বিএনপি নেতা পল্টু কর্মকার। সভা শেষে সবাই মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহন করেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ প র স ক ল ব র র রহম ন ক র যকর ল ইসল ম ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।