এলাকায় আব্দুল মতিন কবিরাজ হিসেবেই পরিচিত। তার আরেক ভাই আজগর আলী। বেশি মুনাফার লোভে বাড়িতেই তারা খুলেছেন ফার্মেসি। সেখানে রয়েছে নামি-বেনামি বিভিন্ন কোম্পানির ‍ওষুধ। রোগীর আর্থিক অবস্থা বুঝে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি দিয়ে যাচ্ছেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাও। এছাড়া কবিরাজি চিকিৎসার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

মতিন ও আজগর পাবনার ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা ইউনিয়নের মাজাট গ্রামের বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের এসব অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

কবিরাজ আব্দুল মতিন ও আজগর আলীর বাড়ির বিভিন্ন রুম ভাড়া দেওয়া হয়। দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগী ও স্বজনরা সেখানে রাতযাপন করেন। কিন্তু কোনো ঘরেরই দরজা নেই। এ কারণে রাত-বিরাতে মাদকসেবী ও উঠতি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ঘোরাঘুরি করে।

অভিযোগ রয়েছে, মতিন কবিরাজ আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকাকালীন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তখন থেকেই তিনি নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন। এ কারণে বিভিন্ন সময় মিডিয়াকর্মীরা গেলে স্থানীয় কেউ তাদের ভয়ে ‍মুখ খোলে না। বিভিন্ন সময় প্রশাসনের অভিযান শুরু করার আগেই তারা সটকে পড়ে। পুনরায় আবারও কবিরাজির আড়ালে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যায়। তাদের ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘‘শুরু থেকে অনেকবার নিষেধ করার পরেও তিনি লোকের সঙ্গে এই কবিরাজির নামে ভাওতাবাজি করে চলেছেন। এসব ঝাড়-ফুঁক আমরা কখনো বিশ্বাস করি না।”

প্রথম প্রথম বাড়ির পাশের ধর্মীয় একটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন মতিন। তার বাবা হাজী আজিজুল হক কবিরাজ ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর বাবার পথেই হাঁটতে শুরু করেন মতিন। তবে মতিনের বাবা কবিরাজি করে পয়সা নিতেন না। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর তিনি রাতারাতি কোটিপতি বনে যান। এলাকায় গড়ে তোলেন লাঠিয়াল বাহিনী। এরপর অসামাজিক এবং লোক ঠকানো তার এই ব্যবসা চলতে থাকে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কবিরাজ আব্দুল মতিন বলেন, ‘‘আমার ওষুধ বিক্রির লাইসেন্স আছে। তবে কবিরাজির কোনো কিছু করা নাই। বাপ দাদারা করে গেছেন, সেটাই আমি ধরে রেখে কাজ করছি। রোগী আসে, ঝাড়-ফুঁক করি আর ফার্মেসি থেকে ওষুধ বিক্রি করি। আল্লাহর ইচ্ছায় কিছু কিছু রোগী ভাল হয়। এখন কেউ যদি অভিযোগ করে সেটা নিয়ে কিছু বলার নাই।’’

ফরিদপুর উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহবুব হাসান বলেন, ‘‘এটা আমাদের জানা নেই। আপনার কাছে প্রথম শুনলাম। আপনি আমাকে ডিটেইলস লিখে দেন হোয়াটসঅ্যাপে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবো।’’

পাবনা জেলার সিভিল সার্জন মো.

আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘‘এটা জানা নাই। আপনার কাছে শুনলাম। খোঁজ খবর নেবো। কবিরাজি করতে দেওয়া যাবে না। দেখি আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

পাবনা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তত্বাবধায়ক মো. রোকনুজ্জামান বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। আপনি তথ্য দিলে আমরা খোঁজ নিয়ে তাদের ফার্মেসির লাইসেন্সের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারব। আর তিনি কবিরাজি করতে পারবেন কি না সেটি দেখবেন সিভিল সার্জন।’’

ঢাকা/শাহীন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপকর্মে জড়িতদের ছাড় নয়: রিজভী 

বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপকর্মে জড়িতদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, “সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। যদি কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে এসব অপকর্মে করে তাদের কোন ছাড় নয়। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। একটি অসত্য সংবাদ রাষ্ট্র ও সমাজের মাঝে অনেক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।”

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রিজভী।

কোনো কিছু ঘটলেই বিএনপির ওপর দায় চাপানো যেন কারো কারো অভ্যাসে পরিনণত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সমাজবিরোধী কাজে যেই জড়িত হবে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সরকার কেনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং সরকারের মাঝে ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “রাউজানে কিছু সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। অথচ, কয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হলো এই অস্ত্রধারীরা বিএনপির লোক! কোনো প্রমাণ ছাড়া এগুলো লেখা দুঃখজনক। এই রাউজানে নানান অভিযোগে অনেক সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” 

বিএনপি ১৫ বছরের অত্যাচার-অবিচার থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে। জুলাই-আগস্টে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। মানুষ হয়ত কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। কিন্তু এখনও আত আতঙ্কমুক্ত নয় বলেও জানান রিজভী।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যাচ্ছে না মন্তব্য করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে কৃত্রিমভাবে সংকট সৃষ্টি করছে যারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববাজারে যখন গমের দাম কমেছে তখন বাংলাদেশে এর দাম বেড়েছে। জনগণকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব সরকারের। রাষ্ট্র এতে ব্যর্থ হলে যেকোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সৃষ্টি হতে পারে সামাজিক অস্থিরতা।” 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপকর্মে জড়িতদের ছাড় নয়: রিজভী