বেহাল সড়ক সংস্কারের দাবিতে খুলনা- সাতক্ষীরা মহাসড়কে মাছ ছেড়ে প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে নিরাপদ সড়ক চাই-এর (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখা। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জিরোপয়েন্ট সংলগ্ন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা আঞ্চলিক কেন্দ্রের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহানগর নিসচার উপদেষ্টা ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ইংরেজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মো.
বক্তারা বলেন, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক এখন দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়েছে। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক থেকেই প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন ও মানুষ ভয়ংকর সড়ক যাত্রা করছেন। মাত্র পাঁচ বছর আগে ১৫০ কোটি টাকায় নির্মিত মহাসড়ক এখন যেন মরণফাঁদ। তৎকালীন প্রভাবশালী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মোজাহার এন্টারপ্রাইজ’ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনে শেষ করে। এ মহাসড়কের জিরো পয়েন্ট থেকে চুকনগর পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটারের কোথাও ভাঙ্গা রাস্তা, কোথাও বড় বড় গর্ত, খানাখন্দ, আবার কোথাও কর্দমাক্ত জলাশয়। প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে, উল্টে যাচ্ছে যানবাহন, ঘটছে প্রাণহানি। অথচ এই ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণের কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) চরম উদাসীনতা ও মোজাহার এন্টারপ্রাইজের নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক নির্মাণ করায় এ সড়কে তৈরি হয়েছে অবর্ণনীয় জনদুর্ভোগ। দায়সারা সড়ক নির্মাণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এখন একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। তা না হলে অচিরেই সড়ক ভবন ঘেরাও কর্মসূচিসহ আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, সাসটিভা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ মোস্তাফিজুর রহমান, পরিচালক প্রশাসন এস, এম সাইদুল ইসলাম, এনসিপি খুলনার প্রধান সংগঠক আহম্মদ হামীম রাহাত, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সরদার আবু তাহের, দৈনিক প্রবাহের স্টাফ রিপোর্টার মোস্তফা কামাল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হরিণটানা থানার সভাপতি মো. মনজুরুল ইসলাম, লবণচরা থানার সভাপতি মাওলানা নাসিম উদ্দিন, হরিণটনা থানার সহ-সভাপতি বিডিআর (অব:) মো. আল আমিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রধান ট্রাফিক কন্ট্রোলিং সমন্বয়ক মো. নাঈম মল্লিক প্রমুখ।
নুরুজ্জামান/শাহেদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া