রাকসু ভবনের বেহাল দশা, নেই নামফলকও
Published: 9th, September 2025 GMT
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন। ইতোমধ্যেই মনোনয়ন বিতরণ ও দাখিলের কাজ শেষ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।
এর মধ্যেই রাকসু ভবন ও আবাসিক হলগুলোর ছাত্র সংসদ কক্ষের বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাকসু ভবনে নেই কোনো নামফলক এবং এর অভ্যন্তরের অবস্থাও জরাজীর্ণ।
আরো পড়ুন:
রাকসুতে ছাত্রশিবিরের প্যানেলে জুলাই বিপ্লবে চোখ হারানো দ্বীপ মাহবুব
ফলাফল না দেওয়া পর্যন্ত রাবির আরবি বিভাগে শাটডাউন ঘোষণা
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের পেছনে অবস্থিত রাকসু ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির বাইরে নেই কোনো নামফলক। ফলে বাইরে থেকে এটি যে রাকসু ভবন, তা বোঝার কোনো উপায় নেই। ভবনটির ভেতরের অবস্থা আরো ভয়াবহ। ময়লা-আবর্জনা ও অব্যবহৃত আসবাবপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। মাঝে মাঝে শুধু বাইরের অংশে রং করা হলেও ভেতরের সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
রাকসু ভবনের দ্বিতল ভবনটির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে কিছু পুরোনো ও অকেজো আসবাবপত্র। তবে এর বেশিরভাগ কক্ষই বর্তমানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন ব্যবহার করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সমকাল নাট্যচক্র, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ড্রামা অ্যাসোসিয়েশন, উদীচী সাংস্কৃতিক সংসদ, অরণি সাংস্কৃতিক সংসদ, অনুশীলন নাট্যদল, তীর্থক নাটক, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি অ্যাডুকেশন ক্লাব, সাংস্কৃতিক জোট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি। এমনকি রাকসুর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি কক্ষও খালি নেই।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, যে নির্বাচনকে ঘিরে এত আমেজ, সেই রাকসু ভবনেরই এমন করুণ অবস্থা হতাশাজনক। ভবনে চেয়ার-টেবিল বা বসার মতো কোনো স্থান নেই। দীর্ঘ সময় পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা প্রশাসনের ভবন সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বসার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হবে।
এ বিষয়ে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেতাউর রহমান জানিয়েছেন, রাকসু ভবন সংস্কারের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে থাকা বিভিন্ন সংগঠনগুলোর পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে এবং খুব শিগগিরই তা বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি জানান, নির্বাচনের প্রস্তুতির কারণে এই উদ্যোগগুলো আগে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুতই নামফলক স্থাপনসহ সংস্কার কাজ শেষ করা হবে।
রাকসু ভবনের পাশাপাশি হল সংসদগুলোর অবস্থা আরো করুণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৭টি (১১টি ছেলেদের ও ছয়টি মেয়েদের) হলে এখন আর কোনো ছাত্র সংসদ কক্ষের অস্তিত্ব নেই। অনেক হলে পুরোনো ছাত্র সংসদ কক্ষগুলো এখন পত্রিকা রুম বা রিডিং রুম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিজয়-২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, “রাকসু ভবনের সংস্কার এবং নামফলক স্থাপনের জন্য কমিটি করা হয়েছে। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে কোথায় পুনর্বাসন করা যায় তা খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন জমা দিলে দ্রুতই কাজ শুরু হবে।”
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন মফলক র জন য অবস থ ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’