রাজশাহীর শিশু হাসপাতালটি কবে চালু হবে
Published: 13th, January 2025 GMT
স্বাস্থ্য খাতে অনেক অবকাঠামো তৈরি করে ফেলে রাখা হয়েছে। কিছুদিন পরপরই এমন অবকাঠামো খবরের শিরোনাম হয়। রাজশাহীতে ২০০ শয্যার একটি শিশু হাসপাতালের কাজ শেষ হয়েছে দেড় বছর আগে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সে হাসপাতাল বুঝে নিচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে বারবার জানানোর পরও তারা কোনো সাড়া দিচ্ছে না। বিষয়টি এমন কেন হবে? মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর কি মনে করছে অবকাঠামো বানিয়েই উন্নয়ন শেষ?
রাজশাহী নগরের টিবিপুকুর এলাকায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। মূল কাজ তিন বছরেই শেষ হয়ে যায়। এরপর আরও কিছু বাড়তি কাজ দেওয়া হয়েছিল। সেগুলোও ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে শেষ করে প্রতিষ্ঠানটি। সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল বুঝে না নেওয়ায় সেবা কার্যক্রমও শুরু করা যাচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতিতে ঠিকাদার নিজেদের লোক দিয়ে প্রায় চার বছর ধরে হাসপাতালটি পাহারা দিচ্ছেন। যদিও সেই পাহারা খুব একটা জোরালো নয়। সম্প্রতি সেই হাসপাতাল ঘুরে আসেন রাজশাহীর প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, হাসপাতালের ভেতরে শুধু ঠিকাদারের একজন কর্মচারী পাহারায় আছেন। ওই কর্মচারী বলেন, ‘বাইরের সব ফিটিংস রাতের বেলা চুরি হয়ে যাচ্ছে। কতক্ষণ এভাবে পাহারা দিয়ে রাখা যায়!’
হাসপাতাল বুঝে না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘সমস্যা আমাদের নয়। সমস্যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের পক্ষে কে বুঝে নেবে, এটা নিয়েই জটিলতা। আমরা তো কাজ শেষ করে দিয়েছি।’ রাজশাহীর সিভিল সার্জন বলছেন, তাঁরা হাসপাতাল বুঝে নেওয়ার জন্য কয়েক দফা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। সেখান থেকে সাড়া না পাওয়ায় হাসপাতাল হস্তান্তরে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ সামলানো কঠিন হয়ে যায়। মানবেতরভাবে চিকিৎসা নিতে হয় শিশুদের। ২০০ শয্যার হাসপাতালটি চালু হলে রাজশাহীর শিশু রোগীদের চিকিৎসাসুবিধা নিঃসন্দেহে আরও বাড়ত। কিন্তু কোটি কোটি টাকা খরচ করে বানানো হাসপাতালটি ফেলে রাখা হয়েছে। এটি কোনোভাবে মানা যায় না। হাসপাতালটির দায়িত্ব বুঝে নিতে মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের সমস্যাটা কোথায়? আমরা আশা করব, এ ব্যাপারে তাঁরা সদুত্তর দেবেন এবং হাসপাতালটি দ্রুত চালুর উদ্যোগ নেবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে
১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।
নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।
এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।