প্রস্টেট ক্যান্সার পুরুষকে ভীষণ সমস্যায় ফেলে দেয়। বয়সকালে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কোন কোন লক্ষণ দেখলে বুঝবেন শরীরে জায়গা করে নিয়েছে এ অসুখ?
বারবার প্রস্রাব, প্রস্রাবে জ্বালা থাকলে সতর্ক হোন। প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্যান্সারকে বলা হয় প্রস্টেট ক্যান্সার। এ অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে এ রোগ থেকে অনায়াসে বাঁচা সম্ভব। প্রস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় বহু ক্ষেত্রেই রোগ রয়ে যাচ্ছে অন্তরালে।
প্রস্টেট থাকে পুরুষের পেনিসের ঠিক গোড়ায়। এ গ্রন্থিটি অনেকটা ওয়ালনাটের আকৃতির হয়। এ গ্রন্থিতে তৈরি হয় সেমিলাল ফ্লুইড, যা স্পার্মকে রক্ষা করে, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। এ গ্রন্থিতে প্রথমে একটি, তারপর দুটি– এভাবে সংখ্যা বাড়াতে থাকে ক্যান্সার কোষ। তৈরি হয় টিউমার। এই টিউমার অবশ্যই ক্যান্সারাস। মনে রাখবেন, যত দ্রুত এ অসুখের চিকিৎসা হয়, মানুষের বাঁচার সম্ভাবনা ততটাই বেশি।
এদিকে এ অসুখের লক্ষণ সম্পর্কে অনেকে সন্দিহান। সেক্ষেত্রে উপসর্গ চিনে রাখলে লাভ আপনারই।
প্রস্টেট ক্যান্সার হলে কী কী উপসর্গ দেখা যায়
প্রস্রাব করতে সমস্যা হয়;
প্রস্রাবের ফ্লো থাকে না;
বারবার প্রস্রাব পায়;
পেট খালি করা যায় না;
জ্বালা করে প্রস্রাবের সময়;
রক্ত থাকতে পারে ইউরিনে;
ব্যথা হতে পারে পিঠে, নিতম্বে, পেলভিসে
বীর্যপাতের সময় ব্যথা হতে পারে ইত্যাদি।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
পরিবারে আগে কারও এ অসুখ হয়ে থাকলে সাবধান। এক্ষেত্রে পরিবারের মধ্যে জিনের মাধ্যমে এ অসুখ ঘোরাফেরা করে। তাই প্রথম থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।
সাধারণত এ অসুখ বেশি বয়সেই হয়। ৫০ বছরের পরই এ রোগ দেখা যায়। অনেক সময় কম বয়সেও এ রোগ হতে পারে। দেখা গেছে, কম বয়সে এ রোগ হলে তা বিপজ্জনক দিকে যায়। এ বিষয়টিও মাথায় রাখা খুব জরুরি।
কীভাবে রোগ নির্ণয়?
প্রস্টেট ক্যান্সার সম্পর্কে জানতে গেলে করতে হবে বায়োপসি টেস্ট। এ পরীক্ষার মাধ্যমে ধরা পড়ে যায় অসুখ। যে জায়গায় ক্যান্সার হয়েছে বলে আশঙ্কা, সেখান থেকে কোষ নিয়ে তার পরীক্ষা করা হয়। তারপরই রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত করে জানা যায়।
তবে রোগের আশঙ্কা রয়েছে কিনা তার একটা ধারণা আগেই করা যায়। এক্ষেত্রে পিএসএ টেস্ট করতে হয়। এ টেস্টের পুরো কথা হলো প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন। এ টেস্ট এখন সব জায়গাতেই হয়। এ টেস্টের ফলাফলেই অনেক কিছুর ইঙ্গিত মেলে।
চিকিৎসা কী?
যত দ্রুত অসুখ ধরা পড়ে ততই মঙ্গল। হাতের কাছে অনেক বিকল্প খুলে যায় চিকিৎসার। এক্ষেত্রে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে করতে পারেন সার্জারি। সার্জারির মাধ্যমে রোগ সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব। পাশাপাশি রেডিয়েশন থেরাপি করা হয় অনেকের। এক্ষেত্রে এক্সটারনাল রেডিয়েশন থেরাপি ও ইন্টারনাল রেডিয়েশন থেরাপি করা হয়। বর্তমানে চলে এসেছে ক্রায়োথেরাপি। এর মাধ্যমেও চিকিৎসা হয়। এছাড়া কেমোথেরাপি, বায়োলজিক্যাল থেরাপি, হাই ইনটেনসিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমেও চিকিৎসা সম্ভব। তবে কোন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হবে, তা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই ঠিক করবেন। v
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হজমের সমস্যা হলে বুঝবেন কীভাবে?
শরীরে কোনো ধরনের সমস্যা হলে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। অনেকেই সেসব লক্ষণকে পাত্তা দেন না। ধীরে ধীরে এসব সমস্যা বড় আকার নেয়। তাই যেকোন রোগের প্রাথমিক লক্ষণ জেনে রাখা জরুরি। শরীরে হজমজনিত সমস্যা হওয়া মানে অন্ত্রের স্বাস্থ্য দুর্বল হয়ে পড়া। তাই জটিল রোগ হওয়ার আগেই কিছু লক্ষণ জেনে রাখা দরকার। যেমন-
বদহজমের সমস্যা থাকলে সারাক্ষণই পেটে একটা চিনচিনে ব্যথা, অস্বস্তি হতে পারে। কিছু খেলেই মনে হবে পেটে ব্যথা হচ্ছে। এক্ষুনি বাথরুমে দৌড়াতে হবে। বদহজমের সমস্যা মানেই হচ্ছে খাবার সঠিক ভাবে হজম না হওয়া। এর ফলে অস্বস্তিকর ঢেকুর উঠতে পারে। তাই সারাক্ষণ ঢেকুর উঠতে থাকলে সাবধান হওয়া জরুরি।
যারা অনেকদিন ধরে বদহজমের সমস্যায় ভুগছেন পানি খেলেও তাদের মনে হয় অ্যাসিডিটি হচ্ছে। এমন হলে সতর্ক হওয়া জরুরি।
সামান্য কিছু খেলেও অনেকেরই ঢেকুর উঠতে থাকে। এর অন্যতম কারণ বদহজমের সমস্যা। এই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
খাবার দেখলে অনীহা, খিদে না থাকা, গা-গোলানো এবং বমিভাবে এগুলি বদহজমের কারণেই দেখা যায়। এইসব উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা করবেন না।
বদহজমের সমস্যা থাকলে গ্যাসেরও সমস্যা হয়। সারাক্ষণ গলায় এক ধরনের চাপ অনুভূত হয়। এমন হলে সতর্ক হোন।
বদহজমের সমস্যা থাকলে সারাক্ষণ মনে হবে পেট যেন ফুলে ফেঁপে রয়েছে। সামান্য কিছু খেলেই অস্বস্তি হবে। এইসব উপসর্গ অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
দীর্ঘক্ষণ ধরে চলতে থাকা বদহজমের সমস্যা অবহেলা করলে পরবর্তীতা পেটের বড় রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ কারণে যাদের প্রচণ্ড অ্যাসিডিটি এবং গ্যাসের সমস্যা আছে তারা ভাজাভুজি, তেলমসলা, ঝাল খাবার এড়িয়ে চলুন। সহজপাচ্য খাবার খান। প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে পানি পান করুন।