Samakal:
2025-08-01@02:08:16 GMT

প্রস্টেট ক্যান্সার

Published: 13th, January 2025 GMT

প্রস্টেট ক্যান্সার

প্রস্টেট ক্যান্সার পুরুষকে ভীষণ সমস্যায় ফেলে দেয়। বয়সকালে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কোন কোন লক্ষণ দেখলে বুঝবেন শরীরে জায়গা করে নিয়েছে এ অসুখ? 
বারবার প্রস্রাব, প্রস্রাবে জ্বালা থাকলে সতর্ক হোন। প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্যান্সারকে বলা হয় প্রস্টেট ক্যান্সার। এ অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে এ রোগ থেকে অনায়াসে বাঁচা সম্ভব। প্রস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় বহু ক্ষেত্রেই রোগ রয়ে যাচ্ছে অন্তরালে।
প্রস্টেট থাকে পুরুষের পেনিসের ঠিক গোড়ায়। এ গ্রন্থিটি অনেকটা ওয়ালনাটের আকৃতির হয়। এ গ্রন্থিতে তৈরি হয় সেমিলাল ফ্লুইড, যা স্পার্মকে রক্ষা করে, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। এ গ্রন্থিতে প্রথমে একটি, তারপর দুটি– এভাবে সংখ্যা বাড়াতে থাকে ক্যান্সার কোষ। তৈরি হয় টিউমার। এই টিউমার অবশ্যই ক্যান্সারাস। মনে রাখবেন, যত দ্রুত এ অসুখের চিকিৎসা হয়, মানুষের বাঁচার সম্ভাবনা ততটাই বেশি।
এদিকে এ অসুখের লক্ষণ সম্পর্কে অনেকে সন্দিহান। সেক্ষেত্রে উপসর্গ চিনে রাখলে লাভ আপনারই। 
প্রস্টেট ক্যান্সার হলে কী কী উপসর্গ দেখা যায়
প্রস্রাব করতে সমস্যা হয়;
প্রস্রাবের ফ্লো থাকে না; 
বারবার প্রস্রাব পায়; 
পেট খালি করা যায় না; 
জ্বালা করে প্রস্রাবের সময়; 
রক্ত থাকতে পারে ইউরিনে; 
ব্যথা হতে পারে পিঠে, নিতম্বে, পেলভিসে
বীর্যপাতের সময় ব্যথা হতে পারে ইত্যাদি।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
পরিবারে আগে কারও এ অসুখ হয়ে থাকলে সাবধান। এক্ষেত্রে পরিবারের মধ্যে জিনের মাধ্যমে এ অসুখ ঘোরাফেরা করে। তাই প্রথম থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।
সাধারণত এ অসুখ বেশি বয়সেই হয়। ৫০ বছরের পরই এ রোগ দেখা যায়। অনেক সময় কম বয়সেও এ রোগ হতে পারে। দেখা গেছে, কম বয়সে এ রোগ হলে তা বিপজ্জনক দিকে যায়। এ বিষয়টিও মাথায় রাখা খুব জরুরি।
কীভাবে রোগ নির্ণয়?
প্রস্টেট ক্যান্সার সম্পর্কে জানতে গেলে করতে হবে বায়োপসি টেস্ট। এ পরীক্ষার মাধ্যমে ধরা পড়ে যায় অসুখ। যে জায়গায় ক্যান্সার হয়েছে বলে আশঙ্কা, সেখান থেকে কোষ নিয়ে তার পরীক্ষা করা হয়। তারপরই রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত করে জানা যায়।
তবে রোগের আশঙ্কা রয়েছে কিনা তার একটা ধারণা আগেই করা যায়। এক্ষেত্রে পিএসএ টেস্ট করতে হয়। এ টেস্টের পুরো কথা হলো প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন। এ টেস্ট এখন সব জায়গাতেই হয়। এ টেস্টের ফলাফলেই অনেক কিছুর ইঙ্গিত মেলে।
চিকিৎসা কী?
যত দ্রুত অসুখ ধরা পড়ে ততই মঙ্গল। হাতের কাছে অনেক বিকল্প খুলে যায় চিকিৎসার। এক্ষেত্রে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে করতে পারেন সার্জারি। সার্জারির মাধ্যমে রোগ সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব। পাশাপাশি রেডিয়েশন থেরাপি করা হয় অনেকের। এক্ষেত্রে এক্সটারনাল রেডিয়েশন থেরাপি ও ইন্টারনাল রেডিয়েশন থেরাপি করা হয়। বর্তমানে চলে এসেছে ক্রায়োথেরাপি। এর মাধ্যমেও চিকিৎসা হয়। এছাড়া কেমোথেরাপি, বায়োলজিক্যাল থেরাপি, হাই ইনটেনসিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমেও চিকিৎসা সম্ভব। তবে কোন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হবে, তা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই ঠিক করবেন। v

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জরায়ুর ফাইব্রয়েড কতটা ভয়ের

প্রতিবছর জুলাই মাস বিশ্বব্যাপী ‘জরায়ুর ফাইব্রয়েড সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালিত হয়। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য নারীদের মধ্যে জরায়ুর ফাইব্রয়েড বা টিউমার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো, এর সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শের সুযোগ নিশ্চিত করা এবং সুস্থ জীবনযাত্রার গুরুত্ব তুলে ধরা।

ফাইব্রয়েড হলো জরায়ুর একধরনের নন ক্যানসারাস টিউমার বা মাংসপিণ্ড, যা প্রজননক্ষম নারীদের হতে পারে। লেইওমায়োমা বা মায়োমা নামেও এটি পরিচিত। জরায়ুতে নানা ধরনের টিউমারের মধ্যে বেশি দেখা যায় ফাইব্রয়েড। সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি নিরীহ হয়। তবে সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা না করলে জীবনমানের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলে।

লক্ষণ বা উপসর্গ

এই টিউমার লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য কোনো সমস্যায় পেটের আলট্রাসাউন্ড করতে গিয়ে ধরা পড়ে। তবে যেসব লক্ষণ দেখা যেতে পারে—

অতিরিক্ত ও দীর্ঘ সময় ধরে ঋতুস্রাব।

তলপেটে চাপ বা ব্যথা। শরীর ফুলে যাওয়া।

ঘন ঘন প্রস্রাব বা মূত্রনালির সমস্যা।

সহবাসের সময় ব্যথা অনুভব করা।

গর্ভধারণে সমস্যা বা বন্ধ্যত্ব।

বয়স ও বংশগতির প্রভাব।

ওজনাধিক্য, হরমোন পরিবর্তন ইত্যাদি।

নির্ণয় ও চিকিৎসা

আলট্রাসাউন্ড, পেলভিক ইমেজিং, এমআরআই বা জরুরি ক্ষেত্রে হাইফু বা হিস্টেরস্কোপি ব্যবহারের মাধ্যমে জরায়ুতে ফাইব্রয়েড শনাক্ত করা যায়।

টিউমার ছোট হলে বা উপসর্গ না থাকলে ওষুধ ও পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। গুরুতর ক্ষেত্রে মায়োমেকটমি, ইউটেরাইন আর্টারি এম্বোলাইজেশন, এমআরআই গাইডেড ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড বা জরায়ু অপসারণ করা হয়। চিকিৎসার ধরন বাছাইয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কেন সচেতনতা জরুরি

ফাইব্রয়েড খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। কিন্তু অনেক নারী উপসর্গ পেয়েও সময়মতো এর চিকিৎসা নেন না। এতে করে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা হতে পারে। মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, ক্ষুধা, ক্লান্তি, বন্ধ্যত্ব নিয়ে উদ্বেগ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা—এসব ঝুঁকি মোকাবিলায় মানসিক সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।

এই টিউমার ডিজেনারেটিভ, ইনফেকশন অথবা সারকোমেটাজে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে সারকোমেটাজ বা জরায়ু ক্যানসারে রূপ নেয় মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ ক্ষেত্রে। তাই ক্যানসার ভেবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

ফাইব্রয়েড নিয়ে গবেষণা এখনো সীমিত। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসা। ফাইব্রয়েড হলে সন্তান হবে না, এমন ধারণাও অমূলক। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগনির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক জটিলতা এড়ানো যায়। এ জন্য স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. শারমিন আব্বাসি, স্ত্রীরোগ ও বন্ধ্যত্ববিশেষজ্ঞ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জরায়ুর ফাইব্রয়েড কতটা ভয়ের