লালমনিরহাট রেলওয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মাঠে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হয় জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারীর তাফসিরুল কুরআন মাহফিল। ইসলামিক সোসাইটি লালমনিরহাটের আয়োজনে এ মাহফিলে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে ধরণা করা হচ্ছে। 

মূল প্যান্ডেল ছাড়াও আশপাশের পাঁচটি মাঠে প্রজেক্টরের মাধ্যমে মাহফিলের বক্তব্যে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

ওয়াজ মাহফিলের বক্তব্যে ড.

মিজানু রহমান আজহারী বলেন, “বাংলাদেশে আবহমানকাল থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান। আমরা মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সবাই মিলে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছি। আমাদের এই সম্পর্ক শক্তিশালী, তবে মাঝে মাঝে কেউ কেউ তাতে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে। আমরা যে সুখে-শান্তিতে আছি, তা অনেকের সহ্য হয় না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ফাটল ধরার অপচেষ্টাকে ঐক্যবদ্ধ থেকে রুখে দিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “তাফসির মাহফিলে হিন্দু ভাইয়েরা কোনো বিরোধ তৈরি করেন না। খুলনায় কয়েকশো হিন্দু ভাই আমাদের আলোচনা শুনতে এসেছিলেন। অনেক বৌদ্ধ ভাইয়েরাও মাহফিলে বসেন। তাদের কাছে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব। ইসলামের সৌন্দর্য এমনভাবে তুলে ধরতে হবে যেন অমুসলিম ভাইয়েরা আমাদের আচরণে মুগ্ধ হয়।”

বয়ানে আজহারী আরও উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার উদাহরণ নেই। আমরা সবাই ভাই ভাই। তবে কিছু দুষ্টু লোক সম্পর্ক নষ্ট করতে চায়। বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এতে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ ধরনের দুর্বৃত্তদের প্রতিরোধ করা সম্ভব।”

ওয়াজ মাহফিলে তিনি আরও জানান, হিন্দুদের পূজা অনুষ্ঠানের সময় মুসলিমরা মাহফিল আয়োজন করেন না, তেমনিভাবে পূজা চলাকালীন মাদরাসার ছাত্ররা মণ্ডপ পাহারা দিয়ে সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, “গোটা বিশ্বে এমন সম্প্রীতির উদাহরণ বিরল।”

মাহফিল উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ, আনসার এবং স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। আয়োজক কমিটির সভাপতি আব্দুল হাকিম জানান, মাহফিলকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত থেকেই মাঠে চাদর ও কম্বল নিয়ে অবস্থান নেন ভক্তরা। শীত উপেক্ষা করে দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিরা সারারাত মাঠে কাটান।

ঐতিহাসিক এই মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।

এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে শেখ শফি উদ্দিন কমার্স কলেজ মাঠে হেলিকপ্টারে অবতরণ করেন ড. মিজানুর রহমান আজহারী। এসময় ভক্তরা ফুল দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান।

মাহফিলে ইসলামের আলোকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. আজহারী। কয়েক লাখ মানুষের অংশগ্রহণে মাহফিল শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়।

ঢাকা/আমিরুল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

মোসাদের চরদের দ্রুত সময়ে বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা ইরানের

ইসরায়েলের সহযোগী হিসেবে যারা কাজ করছে তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। দেশটির প্রধান বিচারপতি গোলামহোসেই মোহসেনি এজেই এ ঘোষণা দেন।

দুই দেশের তীব্র সংঘাতের মধ্যেই ইসরায়েলের হয়ে চরবৃত্তির অভিযোগে আটক ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার কথা জানিয়েছেন তিনি। খবর আল জাজিরার।

এজেই বলেছেন, জায়োনিস্টদের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে কেউ গ্রেপ্তার হলে খুব দ্রুতই তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এক এজেন্টের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান।


মিজান অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের শত্রুদের কাছে গোপন এবং সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহের অপরাধে ইসমাইল ফকির নামের ওই ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে দেশটি। রোববার স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, আলবর্জ প্রদেশ এবং তেহরানের পশ্চিমাঞ্চল থেকে মোসাদের চর সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ইরান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ